চিকিৎসক সংকটে হাইমচরে স্বাস্থ্য সেবা হুমকির মুখে

সাহেদ হোসেন দিপু
জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে সরকার নিরলস পরিশ্রম করলেও চিকিৎসক সংকটে হাইমচরে স্বাস্থ্য সেবা হুমকির মধ্যে রয়েছে। হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৬ জন চিকিৎসকের মধ্যে মাত্র ২ জন চিকিৎসক দিয়ে টেনে-হেঁচড়ে চলছে। চিকিৎসক সংকটের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে হাইমচরের জনগণের স্বাস্থ্য সেবা পড়বে চরম হুমকির মুখে।
সরজমিনে গত সোমবার হাইমচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, ১ জন চিকিৎসক রোগীদের সেবা দিচ্ছেন। তার আশেপাশে শতাধিক রোগী দাঁড়িয়ে এবং বসে আছে। জানতে চাইলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মামুন রায়হান জানান, হাইমচর উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ ৬টি ইউনিয়নের সাব-সেন্টারে মোট ১৬ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে ২ জন চিকিৎসক দিয়েই চলছে হাইমচরের চিকিৎসা সেবা। ইতোপূর্বে বেশ কয়েকজন চিকিৎসক নিয়োগ পেলেও অল্প কয়েকদিন কমপ্লেক্সে থেকে আবার তদবির করে অন্যত্র চলে যান। সর্বশেষ আজ সোমবারও একজন চিকিৎসক ডেপুটেশনে ফরিদগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলে গেছেন। এভাবে চলে যেতে যেতে মাত্র ২ জনে এসে দাঁড়িয়েছে। আমরা ২ জন স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। আমরাও তো মানুষ, আমাদেরও বিশ্রামের প্রয়োজন রয়েছে। আমরা তা পাচ্ছি না।
তিনি বলেন, পার্শ্ববর্তী উপজেলা ফরিদগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনেক চিকিৎসক রয়েছেন। হাইমচরে মাত্র ২ জন। এছাড়া ২ জন চিকিৎসক ডা. প্রনতি দাশ ও ডা. দিপন দে প্রায় ৫ বছর ধরে কর্মস্থলে অননুমোদিতভাবে অনুপস্থিত রয়েছেন।
হাইমচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স উপজেলাবাসীর একমাত্র স্বাস্থ্য সেবার মাধ্যম হলেও চিকিৎসক না থাকায় রোগীদের চরম দুর্দিন যাচ্ছে। গতকাল এ প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় রোগী কমলাপুরের আমেনা, আবুল হোসেন, চরভাঙ্গার আলামিন, রহিমা এবং তাছলিমার সাথে। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা দীর্ঘক্ষণ এসে বসে আছি। একজন ডাক্তার চিকিৎসা দিচ্ছেন, আমরা সিরিয়াল পাচ্ছি না। আরো ডাক্তার থাকলে আমরা তাড়াতাড়ি চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি যেতে পারতাম।
কথা হয় ইউএইচএফপিও ডা. মো. বেলায়েত হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট রয়েছে। আমি চিকিৎসক পাওয়ার ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে বার-বার যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি।
চিকিৎসক সংকটের ব্যাপারে হাইমচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটওয়ারী বলেন, আমি জেনেছি হাইমচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট চলছে। দ্রুত চিকিৎসক পাওয়ার ব্যাপারে আমি আমাদের শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি’র সাথে কথা বলবো।
ডা. দীপু মনির কাছে হাইমচর উপজেলাবাসীর জোরালো দাবি, হাইমচরবাসীর একমাত্র স্বাস্থ্য সেবা নেয়ার জায়গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট নিরসনে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

৩ জুলাই, ২০১৯।