মতলব উত্তরে বিষমুক্ত লাউ চাষে কম খরচে বেশি মুনাফা


মনিরুল ইসলাম মনির
মতলব উত্তর উপজেলার কৃষক লাউ চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। বনে গেছেন লাখপতি। ফলে একের সাফল্যে অন্যরা উৎসাহিত হয়ে লাউ চাষ করছেন। এতে উপজেলায় বাড়ছে লাউয়ের চাষাবাদ। অল্প খরচে বেশি মুনাফা হওয়ায় লাউ চাষ আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদ সংশ্লিষ্ট কৃষি অধিদফতরের।
উপজেলার নেদামদী গ্রামের আবুল কালাম লাউ চাষ করে নিজের অভাব ঘুচিয়েছেন। পাশাপাশি অন্যদের লাউ চাষে উৎসাহ দিয়ে আসছেন। কৃষক আবুল কালাম প্রতি বছরের মতো এবারো কৃষি অধিদফতরের পরামর্শে ১৫ শতক জমিতে লাউয়ের চারা রোপণ করেন। তিনি জমিতে ময়না জাতের লাউয়ের চারা রোপণ করেছেন। তার জমিতে লাউ ধরা পর্যন্ত খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। চলতি মৌসুমে তিনি এখন পর্যন্ত পায় ১০ হাজার টাকার লাউ বিক্রয় করেছেন। তিনি ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা লাউ বিক্রি করতে পারবেন বলে ধারণা করছেন।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, লাউ চাষে গোবর, ছাই, কচুরিপানা আর পানিই প্রধান। এইসবের বাইরে রাসায়নিক সারের খুব একটা ভূমিকা নেই বললেই চলে। তাই ১৫ শতক জমিতে লাউ চাষে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার বেশি খরচ হয় না। অন্যান্য ফসলের তুলনায় লাউ চাষে শ্রমও তুলনামূলক কম দিতে হয়। শীতকালীন সবজি হিসেবে ভোক্তাদের কাছে লাউয়ের প্রচুর চাহিদা এবং বাজার দর ভালো থাকায় প্রতি বিঘা জমির লাউ এক লাখ ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা বিক্রি করা যায়। এ ছাড়া লাউয়ের ডগা বিক্রি করে আসে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। কৃষকরা শীতকালের সবজি লাউ এ সময়ে চাষ করে বেশ লাভবান হচ্ছে বলে জানান।
উপজেলার কৃষক আবুল কালাম জানান, লাউ সাধারণত শীতকালীন সবজি হলেও, বর্তমানে আগাম সবজি হিসেবে লাউ চাষের কদর বেড়েছে। বর্ষার শেষ এবং শীতের শুরুতে কৃষকরা এ লাউ চাষ করে বেশ লাভবান হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অধিদফতরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আলহাজ কামরুজ্জামান সরকার জানান, এলাকার কৃষকরা আগাম লাউ চাষ করে বেশ লাভবান হওয়ার পাশাপাশি সবজির ঘাটতি পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জানান, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চট্টগ্রাম ও চাঁদপুর কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের সহযোগিতায় কৃষক পর্যায়ে উন্নতমানের ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে ময়না জাতের লাউ চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। আমাদের দপ্তর থেকে প্রায় বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে কৃষকদের সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।

১০ আগস্ট, ২০১৯।