মতলব উত্তর উপজেলা খাদ্য গুদাম নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার

কাজ বন্ধের নির্দেশ ইউএনও’র


মতলব উত্তর ব্যুরো
মতলব উত্তর উপজেলার উপজেলা খাদ্য গুদাম (গোডাউন) নির্মাণ কাজে শুভঙ্করের ফাঁকি দেয়া হচ্ছে। উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের পাশে উপজেলা খাদ্য গুদামের পাশে ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান খাদ্য গুদাম নির্মাণে নিন্মমানের ইট, বালি, খোয়া, সিমেন্ট ও রড ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নির্মাণ কাজ নিম্নমানের হওয়ায় এলাকাবাসী অভিযোগ দিলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার পরিদর্শন করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর ওই নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন। নির্মাণ সামগ্রীর স্যাম্পল সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য বুয়েটে প্রেরণ করেন। ইতিমধ্যে মাটি খুঁড়ে নীচ থেকে ভীত ঢালাই, পিলার উত্তোলন করেছেন।
গতকাল সোমবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার, উপজেলা এলজিইডি দপ্তরেরর উপ-সহকারি প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও এলাকার সচেতনমহল সরেজমিন পরিদর্শন করে, খাদ্য গুদামে ব্যবহৃত ইট নিম্বমানের, ঢালাইয়ে সিমেন্ট না দিয়ে শুধু বালু ব্যবহার, জমাটবাঁধা সিমেন্ট ও নিম্নমানের রড দিয়ে কাজ করার প্রমান পান। এরপরও নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী নিশ্চিত হওয়ার জন্য স্যাম্পল বুয়েট এ পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করা হবে বলে ইউএনও শারমিন আক্তার সাংবাদিকদের বলেন।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, উপজেলা খাদ্য গুদামের য়ে ভবনটি রয়েছে, তাতে সংকুলান না হওয়ায় আরেকটি নতুন গুদাম নির্মাণের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয় ২০১৬সালে। এক কোটি ৩৫ লাখ টাকা অর্থায়নে ওই কাজটি পান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মেসার্স গোলাম মোস্তফা নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ওই ঠিকাদারের কাছ থেকে চাঁদপুরের রিপন নামে একজন সাব-কন্ট্রাক্ট এনে কাজ বাস্তবায়ন করছে বলে জানান সাইড ইঞ্জিরিয়ার লিয়াকত আলী সরকার। এ কাজ টি ২০১৮ সালের জানুয়ারী মাসে শেষ করে বুঝিয়ে দেয়ার কথা থাকলেও এখনো এ কাজের তেমন কোন অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।
সম্প্রতি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইস্টিমেটের নিয়ম কানুন না মেনে ইচ্ছামত মাটি মিশ্রিত বালি, নিন্মমানের ইট, খোয়া, জমাট বাঁধা সিমেন্ট ও রড দিয়ে কাজ শুরু করেছে। ইতোমধ্যে মাটি খুঁড়ে নীচ থেকে ভীতের কাজ করেছে। সেখানে নিন্ম মানের ইট খোয়া, মাটি মিশ্রিত বালি, রড ও সিমেন্ট ব্যবহার করে ভীত এর কাজ শুরু করেছে।
নিন্মমানের কাজ দেখে এলাকাবাসী মন্তব্য করেন, আগের গুদামটি এখনও ব্যবহার করা যাচ্ছে, বর্তমানে ঠিকাদার যেভাবে কাজ করছে তাতে ওই গুদাম ৫ বছরের বেশি সময় টিকবে না। তারা এ ঘটনায় অভিযোগ দিলে মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার সেই নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, বীম তৈরিতে মোটা রডের সাথে চিকন রড দিয়ে গাথা হয়েছে। দেওয়া হচ্ছে নিন্ম মানের ইটের খোয়া ও মাটি মিশ্রিত বালি। এলাকাবাসীর অভিযোগ নির্মাণ কাজ শুরু করতে হলে, ইস্টিমেট অনুযায়ি সিটিজেন চার্টার টানাতে হয়। সেখানে মোট নির্মাণ ব্যয়, রডের মিলি গ্রাম, সিমেন্টের নাম, ইট ও খোয়া ও বালির গ্রেড উল্লেখ থাকবে। কিন্তু সেখানে কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সিটিজেন চার্টার দেননি। এমনটি প্রকল্প অফিস নির্মাণ করেননি। এ নিয়ে ক্ষোভ জানান, সাইড ইঞ্জিরিয়ার লিয়াকত আলী সরকার।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার জানান, যে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গোডাউন বা গুদাম নির্মাণ করছেন তারা আমার সাথে যোগাযোগ করেননি। এমনকি খাদ্য গুদামের কর্মকর্তাদের সাথেও যোগাযোগ করেনি। আমি অভিযোগ পেয়ে পরিদর্শন করে অনিয়মের সত্যতা পেয়ে কাজ বন্ধ করে এসেছি।