মতলব দক্ষিণে শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষক আটক


মাহ্ফুজ মল্লিক
মতলব দক্ষিণ উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে (৮) যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাসুদ মিয়াজীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গত রোববার বিকেলে এলাকাবাসী বিক্ষোভ করেন এবং ওই শিক্ষককে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ সেখান থেকে অভিযুক্ত শিক্ষককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। নারায়ণপুর ইউনিয়নের পদুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে রোবরার রাতে ছাত্রীর নানী বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।
মাসুদ মিয়াজীর বাড়ি উপজেলার নারায়ণ ইউনিয়নের পয়ালী গ্রামে। ছাত্রীটির বাড়ি উপজেলার বাড়ৈগাঁও গ্রামে। পদুয়া গ্রামে নানীর বাড়িতে থেকে সে লেখাপড়া করছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, শিক্ষক মাসুদ মিয়াজী দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে নানাভাবে ওই ছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন করে আসছেন। গত এক-দেড় মাস আগেও এ রকম ঘটনা ঘটান ওই শিক্ষক। ঘটনাটি নানা কারণে চেপে যায় ছাত্রীটি। গত রোববার সকালে ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে সহপাঠী ও এলাকাবাসীর কাছে ঘটনাটি ফাঁস করে দেয় ছাত্রীটি। এতে এলাকার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠিসোটা নিয়ে বিদ্যালয় এলাকায় জড়ো হন এবং বিদ্যালয়টির একটি কক্ষে একঘন্টা ওই শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে রাখেন। খবর পেয়ে মতলব দক্ষিণ থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যায় এবং অবরুদ্ধ ওই শিক্ষককে বিদ্যালয় থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
ছাত্রীর নানী অভিযোগ করেন, তার নাতনী ছোটবেলা থেকেই বাবা-মা থেকে বিচ্ছিন্ন। তার মা ও বাবা দু’জনেই আরেকটি বিয়ে করে তাকে ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। এরপর থেকে নাতনীকে নিজের কাছে রেখে লেখাপড়া করাচ্ছেন। ওই শিক্ষক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে বিভিন্ন সময় একাধিকবার তার নাতনীকে যৌন নিপীড়ন করেন।
মাসুদের ভাই মো. জাকির হোসেন জানান, মাসুদের বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের দু’টি গ্রæপ রয়েছে। বিদ্যালয়টির ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা না করা নিয়েও রয়েছে দু’টি গ্রæপের দ্ব›দ্ব। ওই দ্ব›েদ্ব জড়িয়ে পড়েন এলাকার লোকজন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান বলেন, গত রোববার তিনি ছুটিতে ছিলেন। এজন্য রোববারের ঘটনা সম্পর্কে কিছু বলতে পারবেন না। তবে এক-দেড় মাস আগে এলাকার এক অভিভাবক তার বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাসুদ মিয়াজীর বিরুদ্ধে ছাত্রী নিপীড়নের বিষয়টি জানিয়েছিলেন।
মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) স্বপন কুমার আইচ জানান, এ ঘটনায় ছাত্রীর নানী বাদী হয়ে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে রোববার রাত ১০টায় থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। ছাত্রীটির জবানবন্দি রেকর্ডভুক্ত করার জন্য গতকাল সোমবার তাকে চাঁদপুর বিচারিক হাকিমের আদালতে হাজির করা হয়।

১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯।