মাহে রমজানের সওগাত


ইল্শেপাড় ডেস্ক
মাহে রমজানের আজ দ্বিতীয় দিবস। এমাসে আল্লাহতায়ালার রহমত লাভের দ্বিতীয় দিন। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম বলেছেন, মাহে রমজান এমন এক মাস যার প্রথম দশদিন আল্লাহর রহমতে ভরপুর থাকে, মধ্যবর্তী দশ দিন ক্ষমার জন্য নির্ধারিত এবং শেষ দশ দিন জাহান্নাম থেকে মুক্তির আলোক শ্রবনী পয়গামবাহী।
মূলতঃ মাহে রমজান মুসলমানদের জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের পক্ষ থেকে এক অতি বড় নিয়ামত। মানবজাতির কল্যাণের জন্যই সিয়াম সাধনার বিধান চালু করা হয়েছে। সিয়াম বা রোজা হচ্ছে মুসলমানদের পাঁচ স্তর বিশিষ্ট গৃহের তৃতীয় স্তম্ভ। মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ অবশ্য পালনীয় বিধান। এ মাস কল্যাণ ও সৌভাগ্যে পরিপূর্ণ।
এ মাস রহমতের মাস, এ মাস বরকতের মাস, এ মাস মাগফিরাতের মাস। মাহে রমজান হচ্ছে নেক কাজের মওসুম, আমলে সালেহ্র মওসুম। এ মাসেই আল্লাহ দিয়েছেন লাইলাতুল কদর বা কদরের মহিমান্বিত রাত। এই রাত হচ্ছে হাজার মাসের চাইতে উত্তম ফজিলতপূর্ণ। এই রাতেই মহান আল্লাহ নাজিল করেছেন পবিত্র কুরআনুল করীম। এই কুরআন হচ্ছে বিশ্বমানবতার মুক্তিসনদ।
মাহে রমজান হলো ধৈর্য, সহিঞ্চুতা ও সবরের মাস। এই মাস হচ্ছে জিহাদের মাস, এই মাস মুসলমানদের বিজয়ের মাস। মুসলিম মিল্লাতের ঐতিহাসিক বিজয় পতাকা এই মাসেই উড্ডীন হয়েছে। এই মাসে নফল ইবাদতের সওয়াব বা পুরস্কার সত্তর গুণ বেশি। মহান আল্লাহর হুকুমের যথার্থ অনুসরণ করে অনেকেই মাহে রমাজানের রহমতে ধন্য করেন নিজেদের। আবার এমাসের অফুরন্ত কল্যাণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন অনেকেই। কারণ রহমত, বরকত হাসিলের উপায় সম্পর্কে অনেকেই গাফেল-অজ্ঞ। কাজেই এমাসের ইজ্জত করতে জানেননা অনেকেই-পরিণামে থাকেন বঞ্চিত।
মাহে রমজান মুসলমানদের জন্য তাকওয়া অর্জনের মাস, তেমনি সারা বিশ্বের মুসলমানদেরকে ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আবদ্ধ করতে সহায়তা করে এ মাসের সিয়াস সাধনা। মুসলমানরা সবাই একই ভ্রাতৃত্ববন্ধনে আবদ্ধ। দেশ, জাতি, বর্ণ মুসলমানদের বিভক্তি করতে পারে না। আর রমজানের সিয়াম সাধনা এই ভ্রাতৃত্ব বন্ধনকে আরও বাড়িয়ে দেয়।
আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্ল হু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, একজন মুমিন-মুসলমান আরেকজন মুসলমানের সাথে এমন ভাবে সংযুক্ত যেভাবে একটি ইট গাথুঁনী দ্বারা আরেকটি ইটের সাথে যুক্ত থাকে। তিনি আরও বলেছেন, একজন মুসলমানের উচিত আরেকজন মুসলমানের আপদে বিপদে সহযোগিতা করা। এটাই হলো ভ্রাতৃত্ব যা মহানবী সাল্লাল্ল হু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিশ্ববাসীকে শিখিয়েছেন।
এই ভ্রাতৃত্ববোধের চর্চা ও বাস্তবায়নের সর্বোত্তম মাধ্যম হলো মাহে রমজানের সিয়াম সাধনা। এই মাসে মুসলমানের তাকওয়া বৃদ্ধি পায়। আর তাকওয়া মুসলমানদের প্রকৃত ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আবদ্ধ করতে পারে।