হাজীগঞ্জে অগ্নিকান্ডে তিন ব্যবসায়ী নিঃস্ব!

প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ক্ষতি

মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্
হাজীগঞ্জে দু’টি গোডাউনে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ৩ ব্যবসায়ী নিঃস্ব হয়েছেন। গত সোমবার দিবাগত রাত ৩টায় কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়েকর পাশে হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন টোরাগড় গ্রামে আল-মদিনা আয়রন স্টোর ও মেসার্স আব্দুল কাদের গাজীর ভাঙ্গারীর দোকান-ঘর ও গোডাউনে এ অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে হাজীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সহযোগিতায় প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু ততোক্ষণে গোডাউনের ভিতরে থাকা সব মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে দোকানঘর ও মালামালসহ প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানান। তবে এ ঘটনায় কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এদিকে আগুন লাগার বিষয়টিকে অজ্ঞাত হিসেবে উল্লেখ করে হাজীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস।
এলাকাবাসী জানায়, গত সোমবার রাত ৩টার দিকে আল-মদিনা আয়রন স্টোর ও মেসার্স আব্দুল কাদের গাজীর ভাঙ্গারী দোকান-ঘর ও গোডাউনে আগুনের লেলিহান দেখে এবং পোড়াগন্ধে মানুষের ঘুম ভাঙ্গে। স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রায় দু’ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। আগুনের ভয়াবহতা দেখে শাহরাস্তি ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়া হলেও তারা আসার আগেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
ক্ষতিগ্রস্ত আল-মদিনা আয়রন স্টোরের স্বত্বাধিকারী ইমান হোসেন জানান, আনুমানিক ১০-১২ লাখ টাকার মালামাল এবং তার গোডাউনে থাকা আউয়াল নামের অপর এক ব্যবসায়ীর প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্যারেট পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আগুন লাগার বিষয়টি তিনি মানতে পারছেন না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দোকান ও গোডাউনে পেছনের অংশে আগুন লেগেছে। অথচ ওইখানে বিদ্যুতের কোন সংযোগ নেই।
ক্ষতিগ্রস্ত অপর ব্যবসায়ী মেসার্স আব্দুল কাদের গাজী স্টোরের স্বত্বাধিকারী আবদুল কাদের জানান, তার গোডাউনে থাকা প্রায় ১২-১৫ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে যায়। তিনি বলেন, আগুন লাগার বিষয়টি অস্বাভাবিক। অজ্ঞাত কেউ এ অগ্নিকা-ে ঘটনা ঘটাতে পারে বলে তিনি ধারণা করেন। এ সময় তিনজন ব্যবসায়ী ক্ষতির কথা বলতে গিয়ে হাউমাউ করে কেঁদে উঠেন।
দোকান-ঘরের (সম্পত্তি) মালিক কাজী মনির হোসেন, জামাল কাজী ও কামাল কাজী জানান, এখানে বৈদ্যুতিক সর্ট-সার্কিটের কোন বিষয় নেই। আগুনের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করলেই প্রমাণিত হয়, অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা এ অগ্নিকা- ঘটিয়েছে। তারা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, এ ঘটনায় প্রায় দোকানঘরসহ মালামাল পুড়ে প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে আইনের আশ্রয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে তারা জানান।
হাজীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. সিদ্দিকুর রহমান জানান, অজ্ঞাত কারণে আগুনের সূত্রপাত। তিনি বলেন, দু’টি ভাঙ্গারির গোডাউনে দাহ্যপদার্থ (কাগজের কার্টুন, প্লাস্টিক) থাকায় আগুন দ্রুততার সাথে ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় দু’ঘণ্টার চেষ্টায় চেষ্টায় আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই।