হাজীগঞ্জে চার যুবকের গণধর্ষণে যুবতী অন্তঃসত্ত্বা

ইউপি সদস্যসহ আটক ৩

মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ
হাজীগঞ্জে চার যুবকের গণধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে এক যুবতী (১৯)। এ ঘটনার দায়ে ইউপি সদস্যসহ দুই ধর্ষককে গ্রেপ্তার করেছে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ। গতকাল শনিবার আটকদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এর আগে শুক্রবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের আটক করে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন রনি ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আব্দুর রশিদ।
আটকরা হলো- উপজেলার গন্ধর্ব্যপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য অহিদুল ইসলাম (৬০) এবং একই ওয়ার্ডের ডাটরা-শিবপুর গ্রামের গাজী বাড়ির ওরফে চকিদার বাড়ির রফিকুল ইসলামের ছেলে এমরান হোসেন (১৯) ও একই বাড়ির সিরাজুল ইসলামের ছেলে আরেফিন ওরফে আমিনুল (২০)। ঘটনাটি ঘটে হাজীগঞ্জ উপজেলার গন্ধর্ব্যপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড ডাটরা শিবপুর গ্রামের গাজী বাড়ি ও ওরফে চকিদার বাড়িতে।
এ ঘটনায় মামলার অপর আসামি ওই বাড়ির ইসমাঈলে ছেলে রাব্বি (১৮), বিল্লাল হোসেনের ছেলে মেরাজ (২০) ও মৃত ছেরাজল হকের ছেলে সালিসদার মোস্তফা কামাল বিকম (৬৫) পলাতক রয়েছেন। এর আগে অন্তঃসত্ত্বা যুবতী বাদী হয়ে গত শুক্রবার (১০ মে) হাজীগঞ্জ থানায় একটি ধর্ষণের মামলা (নং- ১১) করেন।
জানা গেছে, চার যুবকের ধর্ষণে ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন যুবতী। এ ঘটনায় ইউপি সদস্য অহিদুল ইসলাম ও সালিসদার মোস্তফা কামাল বিকম ঘটনার ধামাচাপা দিতে ৪ ধর্ষকের মধ্যে যুবতীর পছন্দ অনুযায়ী এক ধর্ষকের সাথে বিয়ে ঠিক করেন।
এর আগে ৪ ধর্ষকের কাছ থেকে ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা আদায় করে যুবতীর ব্যাংক একাউন্টে রাখেন ইউপি সদস্য অহিদুল ইসলাম ও সালিসদার মোস্তফা কামাল বিকম। গতকাল শনিবার যুবতীর পছন্দের পাত্র ধর্ষক রাব্বির সাথে বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো।
ঘটনাটি জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর যুবতীর পাশে এগিয়ে আসে পুলিশ। শুক্রবার রাতে যুবতী বাদী হয়ে ৪ ধর্ষক ও ইউপি সদস্য অহিদুল ইসলাম, সালিসদার মোস্তফা কামাল বিকমসহ ৬ জনকে আসামি করে হাজীগঞ্জ থানা একটি মামলা দায়ের করেন। ঐদিন রাতেই ইউপি সদস্য অহিদুল ইসলাম ও ধর্ষক এমরান হোসেন ও আরফিন আমিনুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
থানা হেফাজতে থাকা ইউপি সদস্য অহিদুল ইসলাম জানান, ধর্ষিতা যুবতীকে আইনের আশ্রয় নেয়ার জন্য বলেছিলাম। কিন্তু সে এবং তার পরিবারের লোকজন রাজী হয়নি। তাই এলাকার সালিসদারদের সাথে নিয়ে উভয় পক্ষের (ধর্ষিতা, ধর্ষক এবং তাদের পরিবার) সাথে বসে এবং মেয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাব্বির সাথে বিয়ে ঠিক করি।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের কাছ শাস্তিস্বরূপ ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা আদায় করি এবং মেয়ের (যুবতী) ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে, তার (যুবতীর) ব্যাংক একাউন্টে টাকাগুলো জমা রাখি।
থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন রনি জানান, মামলার ৬ আসামির মধ্যে ৩ জনকে শুক্রবার রাতে গ্রেপ্তার করি এবং আটকদের শনিবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা অব্যাহত আছে।
তিনি বলেন, ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার অপরাধে ইউপি সদস্য ও সালিসদার মোস্তফা কামাল বিকমকে আসামি করা হয়েছে। যুবতীর বিষয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।