নীলকমলের সাবেক চেয়ারম্যান নাসির সর্দারের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

স্টাফ রিপোর্টার
হাইমচর উপজেলার নীলকমল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সর্দারের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ শনিবার (২৩ মে)। এ উপলক্ষে পারিবারিকভাবে বর্তমান প্রাণঘাতী করোনা পরিস্থিতে সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে তাঁর ঈশানবালার বাড়ি ও ঈশানবালা জামে মসজিদ দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। তাঁর বড় ছেলে সউদ আল নাসের এ বিষয়ে সীমিত পরিসরে পালনের কথা ফোনে জানিয়েছেন।
ঈশানবালা জামে মসজিদ ও তাঁর নিজ বাড়িতে মিলাদ, দোয়া ও কাঙালী ভোজের আয়োজন করা হয়েছে। এ সময় মরহুমের আত্মীয়-স্বজন ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থাকবেন।
উল্লেখ্য, সাবেক চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সর্দার ২০১২ সালের ২৩ মে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ১৯৫৬ সালের ১৫ জানুয়ারি তৎকালীন নীলকমল ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম মরহুম আবদুল করিম সরদার ও মাতার নাম করফুলেন নেছা।
মনিপুর মুলামবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করে বাজাপ্তী রমনীমহন উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন । ১৯৭৩ সালে এ স্কুল হতে এসএসসি ও ১৯৭৫ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে বিমানবাহিনীতে যোগদান করেন। পরে তিনি কুয়েতে চাকরি করেন। ছাত্র অবস্থায়ই তিনি ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন এবং ঢাকার বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে লিপ্ত ছিলেন। ১৯৯০ সালে তিনি কুয়েত থেকে দেশে চলে আসেন। দেশে এসেই তিনি বঙ্গবন্ধুর গড়া রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগে সরাসরি যোগদেন। এছাড়া মায়ের নামে করফুলেন নেছা কমিশন এন্ড এজেন্ট নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন। যেটি তার বড় ছেলে সউদ আল নাসের এখন পরিচালনা করছেন। তখন থেকেই তিনি ঈশানবালার মাটি ও মানুষের সাথে মিশে যান।
১৯৯৩ সালে প্রথম নীলকমল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। পরেরবার ১৯৯৭ সালে তিনি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন। ২০০২ সালেও তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
তৎকালীন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের রোষানলে পতিত হয়ে অনেক মামলা-হামলার শিকার হন। এমনকি মিথ্যা মামলার ঘূর্ণিপাকে জেলও খেটেছেন। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় তিনি যখন কুয়েত তখন তাঁর মা করফুলেন নেছা মৃত্যুবরণ এবং ১৯৯৫ সালে তাঁর পিতা আবদুল করিম যখন মারা যান তিনি তখন প্রতিপক্ষের মামলায় জেলে ছিলেন। তবুও তিনি দুর্বার গতিতে নীলকমলের মাটি ও মানুষের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হতে পিচু হটেন নি।
১৯৯৩ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত তিনি প্রতি রাত কাটিয়েছেন চড়াই-উৎরাই,ঝঞ্জা-বিক্ষুদ্ধ পরিবেশে। পাশাপাশি তিনি এলাকার উন্নয়নে কাজ করেন। তিনি ১৯৯৯ সালে ঈশানবালা ভূমিহীন মানুষকে পুর্নবাসনে প্রায় ৩শ’ একর ভূমি একসনা বন্দোবস্ত করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। মূলতঃ রাজনৈতিক প্রতিহিংসা আর ভূমিহীন মানুষকে পুর্নবাসনে ৩শ একর ভূমি একসনা বন্দোবস্ত করায় প্রতিপক্ষের সাথে দ্বন্দ্ব চরমে উঠার একটি কারণ ছিল।
ঈশানবালার মানুষের জন্যে একসনা বন্দোবস্ত, শিক্ষাবিস্তারে এমজেএস স্কুলের এমপিওকরণ, এলাকার রাস্তাঘাট, মধ্যচরে আশ্রায়ন প্রকল্প, মসজিদ, বাজার উন্নয়ন ও প্রাথমিক শিক্ষা বিস্তারের জন্য ঈশানবালাবাসীর কাছে তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

২৩ মে, ২০২০।