অর্থ ও উন্নত চিকিৎসার অভাবে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে গৃহকর্মী মুন্নি

মাহফুজ মল্লিক :
দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত গরিব অসহায় কাজের মেয়ে অর্থের অভাবে উন্নত চিকিৎসা করতে পারছে না। তাই সে অর্থের অভাবে মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিছানায় কাতরাচ্ছে। দীর্ঘ প্রায় ৫ মাস যাবৎ বিভিন্ন হাসপাতালের বিছানায় থেকে চিকিৎসা সেবা নিয়ে আসছে মুন্নী। সে মতলব দক্ষিণ উপজেলার নওগাঁও গ্রামের আ. রশিদ প্রধানের মেয়ে।
জানা যায়, মুন্নি গত ২ জুন আম গাছ থেকে পড়ে মেরুদ- ভেঙে যায় এবং দু’টি পা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে তাকে ঢাকা সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অর্থোসার্জারী বিভাগে ভর্তি করা হয়। গত ২ জুন থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত সে সেখানে চিকিৎসাধীন ছিল। তার চিকিৎসায় প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানা গেছে। মতলব উত্তর উপজেলার ফতেপুর পূর্ব ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম নবী বাদল তার চিকিৎসার সব খরচ বহন করেন। চিকিৎসায় তার মেরুদ-ের অবস্থার উন্নতি হলেও দু’টি পা প্যারালাইসেস হয়ে আছে। অর্থ সংকটের কারণে ঢাকা সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল থেকে নিয়ে এসে গত ৯ অক্টোবর মতলব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয় মুন্নিকে।
হাসপাতালে গিয়ে মুন্নীর কাছে জানতে চাইলে সে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলে, সাংবাদিক ভাই আমাকে বাঁচান, আমি বাঁচতে চাই। আমি যদি আপনার বোন হতাম, তাহলে কি করতেন। পত্রিকায় আপনাদের লেখার মাধ্যমে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিন। আপনাদের এ লেখা কোন হৃদয়বান ব্যক্তির চোখে পড়লে কেউ না কেউ আমার চিকিৎসা পাশে দাঁড়াতে পারে।
তার এ অবস্থার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মতলব উত্তর উপজেলার ফতেপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম নবী বাদল নানার নবকলসের বাসায় আমি দীর্ঘদিন যাবত কাজ করে আসছি। ওই বাসার সবাই আমাকে খুব আদর ও ¯েœহ করত।
গত ২ জুন আমার নানী গাছ থেকে আম পাড়তে বলে। চেয়ারম্যান বাদল নানা শুনে আমাকে আম গাছে উঠতে নিষেধ করে। চেয়ারম্যান বাদল নানা বাসা থেকে ফতেপুর যাওয়ার পর আমার নানী আমাকে আম পাড়তে গাছে উঠায়। হঠাৎ আমি গাছ থেকে নিচে পড়ে যাই। এতে আমার মেরুদ-সহ শরীরের ব্যাপক ক্ষতি হয়। আমার দুর্ঘটনার খবর পেয়ে চেয়ারম্যান বাদল নানা বাসায় এসে সাথে সাথে আমাকে ঢাকা শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করায়। সেখানে আমার চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বহন করেন তিনি। বাদল নানা আমার জন্য যা করেছেন আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। ওই হাসপাতালের অর্থোসার্জারী বিভাগের অধ্যাপক ডা. আলমগীর হোসেনের অধীনে চিকিৎসাধীন ছিলাম আমি। আমার মেরুদ-ের চিকিৎসার উন্নতি হলেও দু’পা প্যারালাইসিস হয়ে গেছে। আমাকে সুস্থ করে তুলতে আরো লক্ষাধিক টাকা লাগবে বলে চিকিৎসক ধারণা দিয়েছেন। দ্রুত চিকিৎসা করাতে না পারলে আমার বড় ধরনের দুর্ঘটনা হতে পারে বলেও চিকিৎসক জানিয়েছেন।
মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রোটা. ডা. একেএম মাহাবুবুর রহমান জানান, মুন্নীর বর্তমানে দু’টি পায়ের যে সমস্যা তা সুস্থ করে তুলতে হলে উন্নত চিকিৎসা ও অর্থের প্রয়োজন।
এদিকে মুন্নীর উন্নত চিকিৎসা ও সুস্থ্য হওয়ার জন্য তার পরিবারের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতা কামনা করেছেন। এ ব্যাপারে ০১৯০৫৫১৭২২১ নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন মুন্নীর পরিবার।