উয়ারুক রহমানিয়া উবিতে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান

নিরাপত্তা ঝুঁকিতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকবৃন্দ

নোমান হোসেন আখন্দ
শাহরাস্তি উপজেলার অন্যতম বৃহৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐতিহ্যবাহী উয়ারুক রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়টি ১৮৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও ভবন শ্রেণিকক্ষ সংকটে শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়তই পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। দীর্ঘদিন যাবৎ ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে জীবনের নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। সেই সাথে এ পরিত্যক্ত ঝুঁকিপূর্ন ভবনে নিরাপত্তাহীনতায় ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষকরা।
উয়ারুক রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত ১৫ শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। সেই সাথে ৩৫ জন শিক্ষক ও কর্মচারী রয়েছেন। সরকারি নিয়মে ১৫ শতাধিক শিক্ষার্থীর জন্য কমপক্ষে ৩০টি শ্রেণিকক্ষের প্রয়োজন। কিন্তু বিদ্যালয়টিতে রয়েছে মাত্র ১২টি শ্রেণিকক্ষ। এর মধ্যে ৬টি শ্রেণিকক্ষ পরিত্যক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ। শ্রেণি কক্ষগুলোতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাদা-গাদি করে পাঠদান করছেন আমাদের আগামিদিনের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। ৩৫ জন শিক্ষক-কর্মচারী একটি কক্ষে ঠাসাঠাসি করে বসে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাসগুলো পরিচালনা করছেন। যেই কক্ষটিতে শিক্ষকরা বসেন সেটিও পরিত্যক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ।
বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার মীম, মাহমুদা আক্তার তিশা, জান্নাতুল নাঈম প্রিয়া, নাজমুল ইসলাম, আকলিমা আক্তার বৃষ্টি ও সুমাইয়া আক্তার জানান, প্রতিদিনই আমরা একটি ক্লাসে ১৩০-১৪০ জন শিক্ষার্থী গাদাগাদি করে ক্লাস করছি। এ শ্রেণিকক্ষটিও পরিত্যক্ত ও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ক্লাসে আমরা প্রতিনিয়তই ভয়ে ও আতঙ্কে থাকি, কখন যেন ধসে পড়ে ভবন। ক্লাস কক্ষের উপর ছাদ ও দেয়াল থেকে খসে ঝরে পড়ছে, ইটা, বালি ও সিমেন্টের কণা। ঝরাজির্ণ পরিত্যক্ত শ্রেণিকক্ষে প্রতিনিয়তই ক্লাস করায় আমাদের অভিভাবকরাও থাকে দুশ্চিন্তায়।
বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম, জহিরুল আমিন, মোস্তফা কামাল ও কামরুন নাহার জানান, শিক্ষার্থীদের সাথে আমরাও ভয় ও চরম নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ক্লাস করাতে হচ্ছে। দীর্ঘদিন যাবৎ এ প্রতিষ্ঠানটি ভবন ও শ্রেণিকক্ষ সংকটে রয়েছে।
বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. মনির হোসেন জানান, বিদ্যালয়ের মূল ভবনটি দীর্ঘদিন যাবৎ পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে। এ পরিত্যক্ত ভবনেই শ্রেণিকক্ষের অভাবে শিক্ষার্থীদের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই পাঠদান করাতে হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের আবেদনের প্রেক্ষিতে সংসদ সদস্য নতুন ভবন ও শ্রেণিকক্ষের জন্য ডিও পাঠিয়েছেন। পরিত্যক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে শিক্ষকদের ক্লাস পরিচালনা ও শিক্ষার্থীদের পাঠদান করায় প্রতিনিয়তই আমরা আতঙ্ক ও জীবনের ঝুঁকিতে রয়েছি।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষার্থীরা অতি দ্রুত পরিত্যক্ত ভবন ভেঙ্গে নতুন শ্রেণিকক্ষ তৈরী ও ৪ তলা ভীতবিশিষ্ট নতুন একাডেমিক ভবন অনুমোদন দিয়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জীবন ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে শিক্ষামন্ত্রী, সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সবার সু-দৃষ্টি ও হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।