চাঁদপুরে ব্যবসায়ী সুজনের গলিত লাশ উদ্ধার

সম্পত্তি ও ব্যবসায়িক টাকা নিয়ে ভাইদের সাথে দ্বন্দ্ব

স্টাফ রিপোর্টার
চাঁদপুর শহরের পশ্চিম শ্রীরাম্দী হরিসভা রোড এলাকার পূর্ণসাহার বাড়ি থেকে ব্যবসায়ী সুজন সাহা (৩২) এর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে মডেল থানা পুলিশ। বাসার ভিতরে ব্যবসায়ীর মৃতদেহ ৫/৬ দিন পড়ে থাকার পর দুর্গন্ধ পেয়ে প্রতিবেশীরা পুলিশকে খবর দেয়। অবশেষে চাঁদপুর মডেল থানার ওসি মহসিন আলম ঘটনাস্থলে গিয়ে বাসার ভিতরে ফ্লোরে অর্ধগলিত লাশটি দেখতে পায়।
পারিবারিক কলহের জের ধরে দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত নিহত সুজন সাহার সাথে তার বড় ভাই রিপন ও সুমন সাহার দ্বন্দ্ব চলে আসছিল বলে এলাকাবাসীরা জানান। সেই ঘটনার সূত্র ধরেই ব্যবসায়ী সুজন সাহার মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে বলে ধারণা করছে এলাকাবাসী।
লাশটি পুলিশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় নিহত বড় ভাই রিপন সাহা বাঁধা দেয়। ময়নাতদন্ত ছাড়াই তারা লাশটি নিজেরা রেখে দেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। অবশেষে পুলিশ ঘটনাটি উদ্ঘাটন করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (চাঁদপুর সদর সার্কেল) ইয়াসির আরাফাত ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করেন। ব্যবসায়ী সুজন সাহার মৃত্যুর ঘটনায় এলাকার শত শত মানুষ লাশটি দেখার জন্য ভিড় জমায়। নিহত সুজন পচিম শ্রীরামদী হরিসভা পূর্ণ সাহার বাড়ি গোপাল সাহার ছেলে।
স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানান, সম্পত্তিগত বিরোধ ও ব্যবসায়িক টাকা নিয়ে বড় দুই ভাই রিপন ও সুমন সাহার সাথে দীর্ঘদিন যাবত দ্বন্দ্ব চলে আসছে সুজন সাহার। এই ঘটনায় বেশ কয়েকবার চাঁদপুর মডেল থানার সাবেক ওসিসহ সালিসি বৈঠক করেও তাদের সমস্যার সমাধান করতে পারেনি। তবে সম্পত্তির লোভে তার বড় ভাই সুজনকে মাদকাসক্ত আখ্যায়িত করে বেশ কয়েকবার মাদক নিরাময় কেন্দ্রে পাঠিয়েছিলো। সুজন সাহা চাঁদপুর পুরান বাজারের প্রতিষ্ঠিত চাল ব্যবসায়ী। সুজন অবিবাহিত হওয়ায় কারণে সবকিছু আত্মসাৎ করতে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। এই ঘটনাটি সুষ্ঠু তদন্ত করলেই প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে বলে এলাকাবাসীর দাবি।
পুলিশ জানায়, ঘরের ভিতরে অর্ধগলিত অবস্থায় সুজনের লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। সেসময় লাইট ফ্যান ও এসি চালানো অবস্থায় ঘরের দরজা আনলক ছিল। লাশটি ময়নাতদন্তের পর প্রকৃত উদঘাটন করা সম্ভব হবে।
অন্যদিনে সুজনের এমন করুণ মৃত্যুর কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তার বন্ধুদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অনেকেই সমাজজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অস্বাভিবক মৃত্যুর জন্য পরিবারের লোকজনকে দুষছেন।
এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইয়াসির আরাফাত বলেন, আমরা ফ্লাট বাসা হতে যুবকের লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। আশা করছি দ্রুতই এই লাশের বিস্তারিত উদঘাটন করা সম্ভব হবে।
এসময় চাঁদপুর সদর মডেল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আব্দুর রাজ্জাক ও পুরানবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রাজিব শর্মাসহ পুলিশ ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

১৯ জুলাই, ২০২৩।