ঢাকা : বাংলাদেশে গেল অক্টোবরে ধর্ষণের নিন্দা জানাতে রাজপথে নেমেছিলেন শত শত মানুষ। এ সময় দেশজুড়ে নারীর সমঅধিকার প্রতিষ্ঠারও দাবি জানানো হয়। রাজপথের এই প্রতিবাদ ছিল গতানুগতিকের চেয়ে ভিন্ন। এ সময় শিল্পীর তুলির আঁচড়ে, প্রতিবাদী গানে, কবিতায় দেয়া হয়েছিল নারী ক্ষমতায়নের বার্তা।
সম্প্রতি বাংলাদেশে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভে শিল্পের এই সংযোজিত সৃজনশীলতা এবং নাগরিক সক্রিয়তার ধারাকে ‘গণতন্ত্রের হৃদস্পন্দন’ বলে মনে করছেন অধিকার কর্মীরা।
ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইন্সটিটিউট (আইআরআই) এক প্রতিবেদনে এমন মন্তব্য করেছে।
এতে আরও বলা হয়, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে আজকের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনে চিত্রকাররা সামাজিক বিভিন্ন ইস্যু তুলে ধরছেন। শিল্পীরা সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও স্বচ্ছ হওয়ার দাবি করছেন, সরকারকে দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতার আওতায় আনতে তারা অন্যতম ভূমিকা পালন করছেন। নাগরিক সক্রিয়তার এই শান্তিপূর্ণ অংশগ্রহণ জনগণের মনোযোগ কেড়েছে। এটি বাংলাদেশকে আরও স্বাস্থ্যকর গণতন্ত্র চর্চার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। জনগণকে এই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় জড়িত করতে আইআরআই বালাদেশের বিভিন্ন শিল্পী গোষ্ঠীর সঙ্গে সহযোগিতা করছে বলে জানিয়েছে। আইআরআই জানায়, বিশ্বজুড়েই প্রতিবাদ ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সক্রিয় করার অন্যতম একটি মাধ্যম শিল্প।
বাংলাদেশেও একটি স্বাস্থ্যকর গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য প্রয়োজন সহনশীলতামূলক রাজনৈতিক ও সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি। সাংস্কৃতিক অধিকারবাদ বা শিল্পবাদ সরাসরি নীতি পরিবর্তন ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কৃতির প্রত্যক্ষ পরিবর্তন আনতে না পারলেও এটি মত প্রকাশের নতুন ধারার জন্ম দেবে, স্থানীয় পর্যায়ে নাগরিক সক্রিয়তা বাড়বে যা বৃহত্তরভাবে গণতন্ত্রকে খর্ব হওয়া থেকে রক্ষা করবে।
আইআরআই কাবুলভিত্তিক শিল্প ও সাংষ্কৃতিক সংস্থা আর্টলর্ডেসর সঙ্গে সহযোগিতামূলক একটি ভার্চুয়াল কর্মশালার আয়োজন করেছে- যেখানে অংশ নেন বাংলাদেশের ৬২ জন তরুণ শিল্পী ও অধিকার কর্মী। এই সম্মেলনে বাংলাদেশের চলমান সংবেদনশীল সামজিক ও রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা করা হয়। আইআরআই’র গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও সামাজিক ইস্যুগুলোতে শিল্পকে প্রতিবাদের মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠায় তাদের প্রকল্পে চিত্রশিল্পী, কণ্ঠশিল্পী, অভিনয়শিল্পী ও বাদকদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করছে।