আলোচিত রিনা হত্যায় স্বামী আটক

নোমান হোসেন আখন্দ
শাহরাস্তির আলোচিত রিনা আক্তার (২৫) হত্যা মামলার প্রধান আসামি হাবিবুর রহমানকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় শাহরাস্তি প্রেসক্লাবে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে প্রেস ব্রিফিংকালে এএসপি (কচুয়া সার্কেল) রিজওয়ান সাঈদ জিকু জানান, আলোচিত রিনা হত্যার ৭২ ঘণ্টা ও মামলার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মামলার প্রধান আসামি ঘাতক হাবিবুর রহমানকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে শাহরাস্তি মডেল থানা পুলিশ। তাকে উপজেলার টামটা উত্তর ইউনিয়নের পরানপুর গ্রাম থেকে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সার্বিক দিকনির্দেশনায় ও শাহরাস্তি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে মামলার প্রধান আসামি রিনার স্বামী হাবিবুর রহমানকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘাতক হাবিবুর রহমান হত্যার কথা স্বীকার করেছে। অপর ৪ আসামিকে আটকের প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে।
প্রেস ব্রিফিংকালে শাহরাস্তি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন ও পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. খায়রুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, টামটা উত্তর ইউনিয়নের সুরসই কাজী বাড়ীতে স্বামী হাবিবুর রহমান নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করেন দ্বিতীয় স্ত্রী রিনা আক্তারকে। গত শুক্রবার বিকাল ৩টায় সুরসই কাজী বাড়িতে এ নির্মম হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।
শাহরাস্তি থানা পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানায়, ২ মাস আগে টামটা উত্তর ইউনিয়নের সুরসই কাজী বাড়ির হাবিবুর রহমান দ্বিতীয় বিয়ে করেন টামটা দক্ষিণ ইউনিয়নের টামটা কাজী বাড়ির বিল্লাল হোসেনের মেয়ে রিনা আক্তার (২৫) সাথে। বিয়ের পর থেকেই দুজনের মধ্যে পারিবারিক কলহ ও বিরোধ চলে আসছিল। রিনা আক্তার জড়িয়ে পড়েন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও টিকটকে। স্বামী হাবিবুর রহমান প্রথম স্ত্রীর দেয়া মামলায় গ্রেফতার হলে, গত ১৭ অক্টোবর স্ত্রী রিনা আক্তার স্বামীর বাড়ি থেকে উধাও হয়ে ঢাকা চলে যান। স্ত্রী রিনা আক্তার ১ মাস পর গত ১৭ নভেম্বর দুপুর ২টায় স্বামীর বাড়ি সুরসই কাজী বাড়ীতে আসে। এ সময় স্বামী হাবিবুর রহমান ও স্ত্রী রিনা আক্তার সাথে বাক বিতন্ডা ও তুমুল ঝগড়া সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে স্বামী হাবিবুর রহমান ছুরি নিয়ে স্ত্রী রিনা আক্তারকে আগাত করতে চাইলে সে দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করে। রিনা আক্তার পার্শ¦বর্তী দেবর প্রবাসী রেদোয়ান ঘরে আশ্রয় নিতে গেলে হাবিবুর রহমান দৌঁড়ে সেই ঘরে গিয়ে তাকে ধরে ফেলে, ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে।
প্রবাসী রেদোয়ান স্ত্রী নাজমা আক্তার জানায়, ২ মাস আগে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই পারিবারিক কলহ। পরকীয়া ধরা পড়ে রিনার। এসময় টিকটিক ও ফেসবুক নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে সে। প্রথম স্ত্রীর মামলায় হাবিবুর রহমান আটক হয়। সে সুযোগে রিনা বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। একমাস পর বাড়ি ফেরায় দু’জনের ঝগড়ার একপর্যায়ে বাসুর হাবিবুর রহমান তাকে ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপায়, ঘটনাস্থলেই রিনা মারা যায়।
এ ব্যাপারে নিহত রিনার বাবা বিল্লাল হোসেন বাদী হয়ে শাহরাস্তি মডেল থানায় গত ১৮ নভেম্বর ৫ জনকে বিবাদী করে একটি হত্যা মামলা (নং ০৬, তাং ১৮/১১/২০২৩ইং) দায়ের করে।

২১ নভেম্বর, ২০২৩।