কুমিল্লায় কাউন্সিলর সোহেলের দাফন সম্পন্ন

জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল
কুমিল্লায় কাউন্সিলর সোহেলর লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার ওসি আনওয়ারুল আজিম।
তিনি জানান, ময়নাতদন্ত শেষে সকাল পৌনে ১১টায় কাউন্সিলর সোহেলের মরদেহ তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) বাদ জোহর পাথুরিপাড়া ঈদগাহ মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ইমামতি করেন প্রয়াত কাউন্সিল সোহেলের ছেলে হাফেজ মো. নাদিম। জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।
জানাজায় অংশ নেন কুমিল্লা সিটি মেয়র মনিরুল হক সাক্কু, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত, যুগ্ম-সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হাই বাবলু, মহানগর যুবলীগ আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ সহিদ, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম টুটুল, ভাইস চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলাম জুয়েল, মহানগর কৃষক লীগের আহ্বায়ক খোরশেদ আলম।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী আবদুর রহিম বলেন, এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার বিকেলে মামলা দায়ের করা হবে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি।
এদিকে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় কাউন্সিলরের মরদেহ তার নিজ বাড়িতে নিয়ে আসলে হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে। এসময় প্রিয় কাউন্সিলরকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন অনেকে। একজন অভিভাবক হারালেন বলে হাউমাউ করে কান্না করতে দেখা যায় অনেককে।
গত সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টায় কাউন্সিলর সৈয়দ সোহেল তার কার্যালয়ে বসা অবস্থায় মোটরসাইকেল দিয়ে আসা কয়েকজন মুখোশধারী সন্ত্রাসী এলোপাথাড়ি গুলি করলে সৈয়দ সোহেল ও পরিপদ সাহা মারা যান। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন আরো কয়েকজন।
মঙ্গলবার বাদ জোহর পাথুরিয়া পাড়ায় ঈদগাহ মাঠে তার জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। দুপুর পৌনে ১ টায় হরিপদ সাহার সৎকার করা হয়েছে নগরীর টিক্কাচর শ্মশানে।

আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার, হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র বলে ধারণা!

কুমিল্লা নগরীর সংরাইশ বড় পুকুরপাড় এলাকা থেকে ১টি রাইফেল, ২টি এলজি বন্দুকসহ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। কাউন্সিলর সোহেলসহ দুইজনকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র বলে ধারণা করা হচ্ছে। সন্ধ্যায় কোতয়ালী মডেল থানাধীন সংরাইশ এলাকার রহিম ডাক্তারের বাসার গলিতে এসব উদ্ধার হয়।
ওই গলির আব্দুল জলিলের ছেলে মো. বেলাল আহম্মেদ (৬৫) এর মালিকানাধীন ২২/৪ সংরাইশ (তাজেহা লজ) এর টিনশেড বিল্ডিং এর ওয়াল ও রাস্তার পাশের বাউন্ডারী ওয়াল সংলগ্ন ফাঁকা জায়গায় এসব আগ্নেয়াস্ত্র ও সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহৃত সামগ্রী পাওয়া যায়।
উদ্ধার করা অস্ত্র ও সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে ৩টি কালো স্কুল ব্যাগ, এর ভিতর ২টি এলজি, ১টি পাইপগান, ১২ রাউন্ড গুলি, ৩০৩ রাইফেলে গুলি এবং কালো কসটেপ মোড়ানো কৌটার মত অবিষ্ফোরিত ২০টি হাত বোমা, একটি লোহার রড ও দুইটি কালো রং এর ২টি শার্ট।
বাড়ির মালিকের মেয়ে নিগার সুলতানা ‘৯৯৯’ নম্বরে ফোন দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে উদ্ধার করে ঘটনাস্থল কর্ডন করে রাখা হয়।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর সৈয়দ মো. সোহেলসহ দুই জনকে গুলি করে হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র বলে ধারণা করছে পুলিশ। ঘাতকরা হত্যাকান্ড শেষে ফেলে যেতে পারে বলে মনে করছে পুলিশের উপস্থিত কর্মকর্তারা। কুমিল্লার পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

২৪ নভেম্বর, ২০২১।