কুমিল্লায় নাটক ‘চিরঞ্জীব বঙ্গবন্ধু’ মঞ্চায়িত

জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল
কুমিল্লায় মঞ্চায়িত হয়ে গেলো শোকের মাস আগস্ট ও জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে নির্মিত নাটক ‘চিরঞ্জীব বঙ্গবন্ধু’। গত বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে ‘চিরঞ্জীব বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক নাটকটি মঞ্চস্থ করা হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে চিরঞ্জীব বঙ্গবন্ধু নাটক প্রদর্শন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কুমিল্লার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক শওকত ওসমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর আমীর আলী চৌধুরী, বিশিষ্ট নজরুল গবেষক অধ্যাপক শান্তিরঞ্জন ভৌমিক, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সদস্য অধ্যক্ষ হাসান ইমাম মজুমদার, জনান্তিক নাট্য সম্প্রদায়ের সভাপতি বশিরউল আনোয়ার, প্রতিবিম্ব থিয়েটারের সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী, জেলা কালচারাল অফিসার সৈয়দ মুহম্মদ আয়াজ মাবুদ।
বক্তারা বলেন, নাটকে ছয়দফা দাবির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, স্বায়ত্বশাসনের দাবির পক্ষে যে জনমত গড়ে উঠে, তাকে প্রতিহত করার অপকৌশল হিসেবে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় শেখ মুজিবুর রহমানকে যেভাবে জড়িত করা হয়েছিলো, তা স্পষ্টতভাবে প্রকাশ পেয়েছে। তাছাড়া শেখ মুজিবুর রহমানসহ সব রাজবন্দীদের নিঃশর্ত মুক্তির আন্দোলন তীব্র গণআন্দোলনে রূপ নিয়ে ‘৬৯ এর গণ অভ্যুত্থান ঘটায়, পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কর্মরত বাঙালি অফিসারদের নানা বৈষম্যে ‘৬২ সালে যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় তা এই নাটকে প্রস্ফুটিত হয়েছে।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর ৬৪ জেলায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নাটক নির্মাণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমীর উদ্যোগে বিশিষ্ট নজরুল গবেষক অধ্যাপক শান্তিরঞ্জন ভৌমিকের নাট্য ভাবনা অবলম্বনে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্য কলা বিভাগের প্রভাষক মামুনুল হকের রচনা ও নির্দেশনায় নাটকটি পরিবেশন করে কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমি রেপার্টরি নাট্যদল।
নাটকের প্রতিটি চরিত্র এমন ভাবেই রূপায়িত হয়েছে যাতে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুত্থানের সঙ্গে ‘৬৬ সালের ছয় দফা, ‘৬৮ সালের আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা ও ‘৬৯ এর গণ অভ্যুত্থান এই তিনটি ঘটনা চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন বঙ্গবন্ধু চরিত্রে মো. আশিকুর রহমান শিশির, বঙ্গবন্ধুর পক্ষের আইনজীবী চরিত্রে সৈয়দ মুহম্মদ আয়াজ মাবুদ ও ওমর ফারুক ভূঁইয়া এবং লে. কর্নেল আমীর ও জেলারের চরিত্রে অভিনয় করেন আল-আমীন, বিচারকের চরিত্রে সালাহউদ্দিন আহমেদ মিন্টু, বাদী পক্ষের ঊকিল শফিকুল ইসলাম, রেনু চরিত্রে ফারহানা, লে. কর্নেল মোয়াজ্জেম চরিত্রে জয় দেবনাথ, লে. কর্নেল ওমর ফারুক জয়, লে. মোজাম্মেল অ্যাড. মোমিন ইলিয়াস গণি, কমালদ্দিন চরিত্রে এ.কিউ আশিক, আমির হোসেন চরিত্রে তোফায়েল আহমেদ, পাগল চরিত্রে কে.এম নাজিম, ব্রিগেডিয়ার চরিত্রে কাইউমুর রহমান ইভান, সার্জেন্ট জহুরুল হক ও আহমদ ফজলুর রহমান চরিত্রে মো. কিবরিয়া হাসিব, সৈনিক চরিত্রে ইমতিয়াজ হোসেন এবং কোরাস ফারজানা হক, সানজিদা রোমানা, মিতু আক্তার, উম্মে সাবিহা প্রীতি, ফারহাসনা আহমেদ, তোফায়েল আহমেদ, ইলিয়াস গনি, মো. কিবরিয়া হাসিব এবং কাইউমুর রহমান ইভান।
এছাড়া নাটকের আবহ সূরে মিউজিশিয়ান ছিলেন পুলক সিনহা, অমিত সাহা, পাপ্পু দাশ ও সৌরভ আলম তন্ময়। পরে সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষে সংশ্লিষ্ট কলাকুশলীদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেয়া হয়।
২৯ আগস্ট, ২০২১।