স্টাফ রিপোর্টার
চাঁদপুর-ঢাকা নৌ-পথে চলাচলকারী লঞ্চগুলোতে প্রতিনিয়ত চলে তরুণ-তরুণীদের বেহায়াপনা। কিছুদিন বন্ধ থাকার পর আবারো এদের অবাধ বিচরণ লঞ্চগুলোতে পরিলক্ষিত হচ্ছে। এদের কারণে পরিবার-পরিজন নিয়ে সাধারণ মানুষ লঞ্চে যাতায়াত করতে স্বাচ্ছন্দবোধ করে না। তাছাড়া প্রতিনিয়তই রসিক পুলিশরা লঞ্চ থেকে তরুণ-তরুণীদের আটক করে থানায় নিচ্ছে।
গত সোমবার ঢাকা থেকে চাঁদপুর অভিমুখে আসা এমভি আব-এ-জমজম লঞ্চ থেকে তেমনি এক জোড়া প্রেমিক-প্রেমিকাকে আটক করে পুলিশ। এদের চাঁদপুর মডেল থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। আটকরা হলো- বাঘড়া বাজার এলাকার আমিনুল হকের মেয়ে সাদিয়া ইসলাম (১৭) ও ঢাকা গেন্ডারিয়া খেজুরবাগ এলাকার সুভাষ শিকদারের ছেলে আকাশ শিকদার (২১)।
পুলিশ জানায়, সাদিয়া ও আকাশ আব-এ-জমজম লঞ্চ থেকে নেমে লঞ্চ টার্মিনাল এলাকায় ঘোরাঘুরি করলে তাদের সন্দেহ হয়। তখন তাদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা প্রথমে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয় দেয়। হিন্দু এবং মুসলিম হওয়ায় পুলিশের কাছে বিষয়টি রহস্যজনক মনে হলে পুলিশ তাদের চ্যালেঞ্জ করে। তখন সাদিয়া ও আকাশ জানায় তারা দু’জন দু’জনকে ভালোবাসে। তারা আব-এ-জমজম লঞ্চের একটি সিঙ্গেল কেবিন ভাড়া নিয়ে চাঁদপুরে এসেছে। এদের শরীর তল্লাশি করে পুলিশ অসামাজিক কাজে ব্যবহারের কিছু সামগ্রী উদ্ধার করে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে আটক সাদিয়া ও আকাশ সিকদারের পরিবারের জিম্মায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
এর কয়েকদিন আগে একই লঞ্চে প্রেমিক-প্রেমিকাকে আপত্তিকর অবস্থায় পাওয়া যায়। তখন প্রেমিক তার প্রেমিকাকে লঞ্চের কেবিনে বেদম মারধর করে। প্রেমিকার চিৎকারে লঞ্চের যাত্রীরা ছুটে আসলে প্রেমিক বিবস্ত্র অবস্থায় মুন্সিগঞ্জে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে পালানোর চেষ্টা করে। পরে তাকেও লঞ্চ কর্তৃপক্ষ নদী থেকে উদ্ধার করে চাঁদপুরে এনে পুলিশের কাছে সৌপর্দ করে। এমনিভাবে প্রতিনিয়তই ঢাকা-চাঁদপুর নৌ-পথে চলাচলকারী লঞ্চগুলোতে লঞ্চের কিছু অসাধু স্টাফ কেবিন ভাড়া দিয়ে তরুণ-তরুণীদের অপরাধ কর্মকাণ্ড করার সুযোগ করে দিচ্ছে।
ঢাকা থেকে প্রতিদিন সকালে যেসব লঞ্চ চাঁদপুরের উদ্দেশে ছেড়ে আসে এসব লঞ্চযোগে ভদ্রবেশী তরুণ-তরুণীরা কেবিন ভাড়া করে চাঁদপুর ঘাটে আসে। ওই লঞ্চ থেকে নেমে তারা চাঁদপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া অপর লঞ্চের কেবিন ভাড়া করে ঢাকার উদ্দেশে পুনরায় ফিরে যাচ্ছে। লঞ্চের সাধারণ যাত্রীরা এসব অপরাধ মুক্ত লঞ্চগুলোকে রাখার জন্য নবাগত পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমানের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯।