
রেলওয়ের আইন-শৃংখলা বাহিনীর হঠাৎ অভিযানে
শওকত আলী
চাঁদপুরে নিরাপদে রেলওয়ের ট্রেন চলাচল এবং যাত্রীদের ট্রেনে ও স্টেশন এলাকায় যাতায়াতের প্রয়োজনে রেললাইনের ২ পাশে রেলওয়ের আইন-শৃংখলা বাহিনী আকস্মিক অভিযান চালিয়ে অর্ধ শতাধিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে।
এছাড়া শহরের বকুলতলা থেকে কোর্ট স্টেশন পর্যন্ত রেললাইনের ২ পাশে সৌন্দর্য্য বাড়াতে পরিস্কার-পরিচছন্নতা অভিযান পরিচালনা করে ব্যাপক পরিস্কার-পরিছন্নতা করা হয়েছে। এ অভিযান পরিচালিত হয় গতকাল বুধবার বিকেল থেকে সন্ধ্যার পর পর্যন্ত শহরের বকুলতলা থেকে কোর্টস্টেশন এলাকার রেললাইনের দু’পাশে।
এ অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করে চাঁদপুর রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সারোয়ার আলম জানান, রেলওয়ের উধর্বতন কর্তৃপক্ষ ও জেলা আইন-শৃংখলা কমিটির রেজুলেশন মোতাবেক এ অভিযান পরিচালিত হয়।
তবে, বকুলতলা ও কোর্ট স্টেশন এলাকাবাসীর অভিযোগ শহরের বকুলতলা এলাকার মার্কেটের সামনে ও রেললাইনের দু’পাশে বিশাল উচু করে মালামালের স্তূপ করে রেখে জায়গা দখল করে রাখা হয়েছে এবং অবৈধভাবে গড়ে তোলা দোকান-পাটগুলো কোন অদৃশ্য শক্তির কারণে রেলওয়ে আইন-শৃংখলা বাহিনী তা উচ্ছেদ করেনি। এসব দোকানে বসেই উঠতি বয়সের যুবকরা নেশা পান করে নিজেরা অংকুরেই ধবংস হয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে সচেতন মহলের।
সরোজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে রেলওয়ের আইন-শৃংখলা বাহিনী ও প্রত্যাক্ষদর্শীদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, হঠাৎ করে গতকাল বুধবার শেষ বিকেলে রেলওয়ে পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা রেলওয়ের বকুলতলা এলাকা থেকে কোর্ট স্টেশন পর্যন্ত আকস্মিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের অভিযান চালায়। অভিযানকালে রেললাইনের দু’পাশে থাকা অবৈধ দোকানপাট, বিভিন্ন প্রকার স্থাপনা ও ছোট টংয়ের দোকান, জুপড়ি ঘর, রিকসা, ভ্যান ও বিভিন্ন যানবাহন রেখে দখল করে রাখা স্থান থেকে এসব যানবাহন পার্শ্ববর্তী পুকুরে ফেলে দিয়ে রেলপথের দু’পাশ উচ্ছেদ ও পরিস্কার-পরিছন্নতা অভিযান পরিচালিত করে।
এসময় রেললাইনের পাশে পরিত্যক্তভাবে পড়ে থাকা মালামাল ও বিভিন্ন সাইনবোর্ড, প্লাস্টিক, ফলের খাচা পড়ে থেকে এলাকার পরিবেশ নোংরা করে রাখা স্থান থেকে এগুলো একত্রিত করে পরিস্কার-পরিচ্ছতার প্রয়োজনে পুড়িয়ে ফেলা হয়। সন্ধ্যার পর পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালনা করেন রেলওয়ে থানার পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। অভিযানকালে হকাররা অবৈধভাবে আর দোকান বসাবে না বলে অঙ্গীকার করায় কোর্টস্টেশন এলাকার হকারদের ফলফলাদি নিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেয়ায় তারা তাদের ফল ও মালামাল নিয়ে যেতে পারে।
এ ব্যাপারে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনাকারী চাঁদপুর রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সারওয়ার আলম জানান, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ও জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়। রেললাইনের পাশে থাকা অবৈধ দোকান, বস্তি, ঝুপড়ি ঘর থেকে বদমাশ, পকেটমার, ছিনতাইকারীরা ট্রেন যাত্রীদের মালামাল ছিনিয়ে নিয়ে যায় এবং বিভিন্ন অপকর্ম করে থাকে। এজন্য এ সব দোকান উচ্ছেদ করা হয়। অভিযানে শহরের বকুলতলা হতে কোর্ট স্টেশন পর্যন্ত রেল লাইনের আশপাশের অর্ধ শতাধিকের বেশি দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে। এ সময় পরিষ্কার-পরিছন্নতার জন্য উচ্ছেদের সময় নোংরা আবর্জনা তাৎক্ষণিকভাবে আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।
অভিযানে চাঁদপুর রেলওয়ে থানার এএসআই মাহমুদুল হাসান, কন্সটেবল মোস্তাকিম, আলমগীর, হানিফ, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ইনচার্জ মো. খোরশেদ আলম, প্রহরী পলাশ খান, কাউছার আলমসহ অনেকে অংশ নেন।