চাঁদপুরে আজ ৬৩ লাখ কপি বই বিতরণ হবে

স্টাফ রিপোর্টার
আজ ১ জানুয়ারি জাতীয় পাঠ্যপুস্তক বিতরণ উৎসব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) জাতীয় পাঠ্যপুস্তক বিতরণ উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। চাঁদপুরসহ দেশজুড়ে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও দাখিল, ভোকেশনাল ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের হাতে বই উৎসব ২০২৩ এর পাঠ্যবই তুলে দেয়া হবে। ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার এ বই উৎসবের আয়োজন করে আওয়ামী লীগ সরকার। শিক্ষাক্ষেত্রে এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
সারাদেশের মত চাঁদপুর জেলার ৮ উপরজলায় পয়লা জানুয়ারি বই উৎসব ২০২৩ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইতোমধ্যেই সব উপেজেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের বই এসেছে।
চাহিদার সব বই না আসলেও যে সব বা এসেছে তা দিয়েই বই উৎসব পালন করা যাবে বলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস এ তথ্য ২৮ ডিসেম্বর বিকেলে জানিয়েছে সূত্রটি। বই উৎসবে সব শিক্ষক উপস্থিত থাকবে। শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও স্ব-স্ব স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সদস্যসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন।
বর্তমান সরকার ২০১২ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বই বিতরণ উৎসবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিচ্ছে। এ কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় সারাদেশে একযোগে বছরের প্রথম দিন ১ জানুয়ারি শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রাথমিক শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দফতরসমূহের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণের উপস্থিতিতে উৎসবমুখর ও আনন্দঘন পরিবেশে বই বিতরণ উদযাপিত হয়ে আসছে।
চাঁদপুরে এবার ৬৩ লাখ বই বিতরণ উৎসবের উদ্বোধন করা হবে। জেলা সদরের হাসান আলী সরকারি প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যায়লের মাঠে বই বিতরণ প্রোগ্রাম হাতে নেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের উচ্চ মহলের কর্মকর্তারা আয়োজনে উপস্থিত থাকবেন।
জেলা প্রাথমিক ও মাথ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্র মতে, চাঁদপুরে আসন্ন ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে চাহিদার মাধ্যমিক-প্রাথমিকে ৬৩ লাখ ৫২ হাজার কপি বই আসছে । ইতোমধ্যেই সব উপজেলায় পৌঁছানোর কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে- জেলার মাধ্যমিক-দাখিল-ইংরেজি ভার্সনে ৮ উপজেলার ২শ’ ৯৩টি সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুলে ২০২৩ শিক্ষা বর্ষের জন্যে ৪০ লাখ ৮১ হাজার ৮শ’ ৩০ কপির চাহিদা প্রেরণ করা হয়েছে।
মাধ্যমিকের এ বই বিতরণ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে উপজেলাগুলোর গুদামে আসবে। চাঁদপুরের ৮ উপজেলায় ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক স্তরের বই প্রতি উপজেলার প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিতরণ করা হবে স্ব স্ব উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের মাধ্যমেই।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস চাঁদপুরে বই বিতরণে দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
১ জানুয়ারি সব শিক্ষার্থীকে নতুন বই দেয়া হবে বলে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছেন। শিক্ষা খাতে সরকারের অগ্রাধিকারের কথা তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, বর্তমানে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দায় কাগজ, কালিসহ পুস্তক তৈরির সব উপকরণের দাম লাগামহীন। এমন পরিস্থিতিতেও শিক্ষাখাতকে অগ্রাধিকারে রেখেছে সরকার। তবুও আগামি ১ জানুয়ারি দেশের সব শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দেয়া হবে।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে নাটোর শহরের অনিমা চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে দীপু মনি আরও বলেন, আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে কোমলমতি শিশুদের কথা বিবেচনা করে বছরের প্রথম দিনই তাদের হাতে বই পৌঁছে দিয়েছে। এমনকি বিগত করোনা মহামারির সময়ও অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের হাতে জানুয়ারির ১ তারিখে বই তুলে দেয়া হয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০২২ শিক্ষাবর্ষের মাঝের দিকে চাঁদপুর জেলায় মাধ্যমিক, দাখিল, ইবতেদায়ি, এসএসসি ভোকেশনাল, দাখিল ভোকেশনাল ও ইংরেজি ভার্সনের ৪০ লাখ ৮১ হাজার ৮শ’ ৩০ কপি বইয়ের চাহিদা প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে ৮ উপজেলায় ১ হাজার ১শ’ ৫৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক শিক্ষার্থীর বই প্রয়োজন ১২ লাখ ৭১ হাজার ৩শ’ ১৬ কপি। প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের বই ইতোমধ্যেই এসেগেছে এবং ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহের মধ্যে সব বই উপজেলা গুদামে পৌঁছবে বলে জানা গেছে।
আসন্ন ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে জেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৪৭ হাজার ২শ’ ৯১ জন প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা রয়েছে এমন হিসেব কষেই বইয়ের চাহিদা দেয়া হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ইতোমধ্যেই এর চাহিদাপত্র গণ ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রেরণ করেছে বলে ২ অক্টোবর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে জানা গেছে।
প্রাক-প্রাথমিক হতে ৫ ম শ্রেণি পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীর জন্য ওই পরিমাণ বই প্রয়োজন। ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে চাঁদপুর জেলায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২ লাখ ৬৪ হাজার ৯শ’ ৮৬ জন রয়েছে। সরকারি বিধিমালায় সব শিক্ষার্থীরাই ১ জানুয়ারি নতুন বই পাবে।

০১ জানুয়ারি, ২০২৩।