চাঁদপুরে কমছে পানের বরজ

স্টাফ রিপোর্টার
বেশি খরচ আর ন্যায্যমূল্যের অভাবে দিনে দিনে পান চাষাবাদে আগ্রহ হারাচ্ছে চাঁদপুরের চাষিরা। প্রতি বছর লোকসান গুণতে হওয়ায় পান আবাদ করা ছেড়ে দিচ্ছে অনেকেই। কৃষি কর্মকর্তাদের অবহেলা আর ছত্রাকের আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পানের বরজ। তুলনামূলক উচু জমিতে পান আবাদ ভালো হওয়ায় যুগ-যুগ ধরে পানের আবাদ করে আসছে চাঁদপুরের পান চাষিরা।
চাঁদপুরে মতলব উত্তর, হাইমচর ও ফরিদগঞ্জ ও সদর উপজেলার কৃষকরা পান আবাদ করে থাকে। একটা সময় চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলা ছিল মিষ্টি পানের জন্য বিখ্যাত। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও ছিল এখানে উৎপাদিত পানের চাহিদা। উৎপাদন ব্যয় বেশি আর পানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় লাভের মুখ দেখছে না তারা। তাছাড়া জেলা কৃষি কর্মকর্তারাও চাষিদের কোনো খোঁজ-খবর রাখেন না। ফলে পান বোরজে বিভিন্ন রোগ-বালাইয়ে আক্রমণে মরে যায় পান গাছ। এতে করে লোকসানের মুখে পড়ে ব্যাপক হ্রাস পেয়েছে পান চাষির সংখ্যা।
মহনলী, চালতা কোর্ট, নল ডোগ, কালী ডোগ ও কানপাত এ পাঁচ জাতের পান আবাদ হয় চাঁদপুরে। বৃষ্টির পানিতে গোড়া পঁচা, পাতা লাল ও হলুদসহ বেশ কিছু সমস্যা দেখা দেয় পানের বোরজে। কৃষি কর্মকর্তাদের কোন সহযোগিতা পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ রয়েছে চাষিদের।
হাইমচর উপজেলার পানচাষী ইদ্রিস আলী বলেন, আমাদের পানের বরজে অনেক টাকা খরচ হচ্ছে। কিন্তু পানের মূল্য সেভাবে পাচ্ছি না। তাছাড়া প্রায়ই সময়ই পান বোরজে গোড়া পচা, পাতা লালসহ বিভিন্ন পোকা আক্রমণ করে থাকে। কিন্তু প্রতিকারের জন্য কৃষি কর্মকর্তাদের খুঁজে পাওয়া যায় না।
আরেক কৃষক বাবুল মাঝি বলেন, পান চাষ করে প্রতি বছরই আমাদের লোকসান হচ্ছে। এভাবে টিকে থাকা কষ্টসাধ্য। অনেক চাষি তাই পান চাষ বাদ দিয়ে অন্য কিছু চাষাবাদ করছেন। সরকারের কাছে আমরা ভর্তুকি কামনা করছি।
এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আলী আহম্মদ বলেন, আমরা চাষিদের পান চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কাজ করে যাচ্ছি। অনেক সময় পানিতে পানের বোরজের ক্ষতি হয়। এতে করে চাষিদের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। পান চাষিদের প্রণোদনা দেওয়ার দাবির বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে বলে জানান তিনি।
চলতি বছরে চাঁদপুরে ২শ’ ৩৫ হেক্টর জমিতে পান আবাদ করা হয়েছে। এরমধ্যে হাইমচরে ২১৭ হেক্টর এবং ফরিদগঞ্জে ১৮ হেক্টর জমিতে পান আবাদ হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে ২৮.৬৭ মেট্রিক টন পান উৎপাদন হয়। যেখানে গত দুই বছর আগেও পানের আবাদ হয়েছে আড়াই শ’ হেক্টর জমিতে।

০৯ জুন, ২০২১।