চাঁদপুরে চরমোনাইর নমুনায় মাহফিলে আখেরি মোনাজাতে মুসল্লিদের ঢল

স্টাফ রিপোর্টার
আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হলো বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি চাঁদপুর জেলা শাখা আয়োজিত চরমোনাইয়ের নমুনায় ৩ দিনব্যাপী ইসলামী মাহফিল। সোমবার (১১ নভেম্বর) পুরানবাজার জুটমিলস্ সংলগ্ন বালুমাঠে অনুষ্ঠিত মাহফিলে অর্ধ লক্ষাধিক ধর্মপ্রাণ মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন।
আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। মোনাজাতে দেশ ও জাতির সুখ-সমৃদ্ধি এবং গোটা পৃথিবীর মুসলমানদের জন্য দোয়া করা হয়। পাশাপাশি ‘২৪ এর গণঅভ্যুথানে নিহত সব শহীদের রুহের মাগফেরাত কামনা এবং আহতদের সুস্থতা কামনা করা হয়। এছাড়া ফিলিস্তিনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নিপীড়িত মুসলমানদের জন্য মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা হয়। এসময় সেখানে উপস্থিত হাজার হাজার মুসল্লিরা মহান আল্লাহ দরবারে দু’হাত তুলে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এর আগে ফজরের নামাজ শেষে শুরু হয় ৩ দিনব্যাপী মাহফিলের শেষ বয়ান। ফজরের নামাজে ইমামতি এবং নামাজ শেষে বয়ান পেশ করেন চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।
এসময় তিনি বলেন, হযরত মুহাম্মদ (সা.) বিদায়ের আগে আমাদের জন্য পরিপূর্ণ ইসলাম রেখে গেছেন। এখানে কোন সংযোজন ও বিয়োজন করার সুযোগ নেই। আজ যারা ক্ষমতার জন্য ইসলামকে বিকৃত করছে, শরীয়তের বিধানকে ছাড় দেয়ার কথা বলছে তারা মূলত প্রকৃত মুমিন নয়। আগে নিজের মধ্যে ইসলাম লাগবে তারপর সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিগত দিনে যারা ইসলামের কথা বলে শরীয়তের বিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ক্ষমতার অংশীদার হয়েছে। আমরা দেখেছি তাদের সামনে রেখে ইসলাম বিরোধী আইন পাস করা হয়েছে। মুমিন কখনো পরগাছার মত কারো ক্ষমতার সিঁড়ি হতে পারে না। আমরা আর পরগাছা হয়ে থাকতে চাই না। আমরা এমন একটি ইসলামী বটবৃক্ষ তৈরি করতে চাই, যেটা সমাজ থেকে পুরো দেশে ছায়া ছড়িয়ে দিবে। ইসলামের বৃক্ষ হবে নিজস্ব বটবৃক্ষ। যেখানে সব ধর্ম-বর্ণ, গোত্র শ্রেণি-পেশার মানুষ নিরাপদে থাকতে পারবে।
মাহফিল বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব ও ইসলামী আন্দোলনের জেলা সভাপতি শেখ মোহাম্মদ জয়নাল আবদিন মাহফিলের বিষয়ে বলেন, আমরা মহান আল্লাহর দরবারে লাখো শুকরিয়া আদায় করছি, কারণ অন্যান্য বছরের মতো এবারো সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের এই মাহফিল সম্পন্ন হয়েছে। ৩ দিনব্যাপী এ মাহফিলে জাতীয় ও স্থানীয় শতাধিক দেশবরেণ্য ওলামা মাশায়েখ আলোচনা পেশ করেন। দল-মত নির্বিশেষে হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি মাহফিলে অংশগ্রহণ করেছেন।
শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের এই আয়োজন সম্পন্ন হওয়ায় আমরা জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, পৌরসভার প্রশাসক এবং চাঁদপুরের আলেম-ওলামাসহ ও চাঁদপুরবাসীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।

১২ নভেম্বর, ২০২৪।