চাঁদপুরে জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত

বিএনপি কখনো ক্ষমতায় আসতে পারবে কিনা সন্দেহ আছে…….মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি

এস এম সোহেল
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি বলেছেন, দেশে আর কখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হবে না। দেশের সর্বোচ্চ আদালত থেকে রায় ঘোষণা করা হয়েছে যে বাংলাদেশে আর কখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হবে না। যদি কোনো গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে সেটা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। যারা দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায় অবমাননা করে তাদের মনগড়া সরকার দেখতে চায়, তাদের সেই আশা আর পূরণ হবে না। বিএনপি জনগণ থেকে এতো দূরে সরে গেছে যে আগামি নির্বাচন দূরে থাক, তাদের জীবদ্দশায় আর কখনো ক্ষমতায় আসতে পারবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে।
শনিবার (২ অক্টোবর) দুপুরে চাঁদপুর স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল প্রতিনিধি সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি এ কথা বলেন।
মাহবুব উল আলম হানিফ আরো বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বর্তমানে একটি কথা বলছেন, আগামি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৩০টি আসন পাবে না। কিন্তু এই কথাটি ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন বেগম খালেদা জিয়া একাধিক জনসভায়ও বলেছিলেন। ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস ২০০৮ সালের নির্বাচনে ওই বেগম খালেদা জিয়া কিন্তু ৩০ এর নিচে আসন পেয়েছিলেন।
তিনি আরো বলেন, আগামি নির্বাচনে বিএনপির জয়লাভ করার কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচনে তারা আবারো ধিকৃত হবেন। কারণ তারা দেশের জন্য বা জনগণের জন্য এমন কোনো কাজ করেননি যে জনগণ তাদের ওপর আস্থাশীল হবে। দুর্নীতি ও নাশকতার কারণে তারা জনগণ থেকে এতটাই দূরে সরে গেছে যে আগামি নির্বাচন তো দূরের কথা কোনো দিন বিএনপি ক্ষমতায় আসতে পারবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। আমরা চাই সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক এবং জনগণ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট প্রদান করুক।
দলীয় সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করা বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা চাই সকল রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটদান করে তাদের পছন্দের দলকে বিজয়ী করুক।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি বলেন, শিক্ষার মান উন্নয়নে কারিকুলাম সংশোধন, মূল্যায়ন পদ্ধতি পরিবর্তন, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হচ্ছে। শিক্ষার মান উন্নয়নে সবকিছু করা হচ্ছে। শেখ হাসিনার সরকার ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সব শিশুকে শিক্ষার আওতায় নিয়ে আসার জন্য কাজ করে গেছে। সবাইকে যখন শিক্ষার আওতায় আনতে পেরেছি, এখন আমরা শিক্ষার মান উন্নয়নে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছি। সেই জন্য পাঠ্যবইয়ের কারিকুলাম সংশোধন, মূল্যায়ন পদ্ধতি পরিবর্তন, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণসহ অবকাঠামোর উন্নয়ন করা হচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি এর মধ্য দিয়েই মানসম্মত শিক্ষা দেওয়া সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র বই পড়ে পড়াশোনা নয়, বাচ্চারা খেলাধুলার মধ্য দিয়ে, আনন্দের মধ্য দিয়ে শিখবে। কমিউনিটির বিভিন্ন কাজকর্মের মধ্য দিয়ে শিখবে। যেটাকে বলে অভিজ্ঞতাভিত্তিক শেখা কিংবা করে শেখা।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে সাবেক ছাত্রনেতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি বলেন, আমরা দল করি সবাই। তৃণমূলের নেতারা আসলে কি পান? তৃণমূলের নেতারা কখনো বিশ্বাস ঘাতকতা করেন না। আমাদের কাজ হচ্ছে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে অনুসরণ করা। জননেত্রী শেখ হাসিনা তৃণমূলের নেতাদের পছন্দ করেন। তৃণমূলের নেতারা বিশ্বাস ঘাতকতা করেননি বলেই জননেত্রী আজকে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা আজ তৃণমূলের কথা শুনবো, যতক্ষণ বলবে ততক্ষণ শুনবো। আমাদের তৃণমূল কথা বলবে। আমরা তৃণমূলকে উপরে তুলতে চাই। তাদেরকে সম্মানিত করতে চাই। নেতা আমি ক্ষণিকের, কর্মী সারাজীবনের। আমি মনে করি যারা বয়স্ক, যারা আমাদের আগে আওয়ামী লীগে এসেছেন তাদেরকে সম্মান দেয়া উচিত। নিজের মাটির প্রতি মায়া লাগা ভালো।
বিশেষ সম্মানিত বক্তার বক্তব্য রাখেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী প্রফেসর ড. সামছুল আলম।
চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলালের পরিচালনায় প্রতিনিধি সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, চাঁদপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম।
বিশেষ বক্তার বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মুহম্মদ শফিকুর রহমান, চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর-মতলব দক্ষিণ) আসনের সংসদ সদস্য অ্যাড. নুরুল আমিন রুহুল এবং সাবেক সংসদ সদস্য ড. মুহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়াসহ কেন্দ্রীয় ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
তৃণমূল পর্যায়ে বক্তব্য রাখেন শাহরাস্তি উপজেলা পরিষদের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান নাসরিন জাহান শেফালি, ফরিদগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মাহফুজুল হক, হাইমচর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান শাহজাহান প্যাদা, মতলব দক্ষিণের মবিন সুজন, কচুয়া পৌরসভার মেয়র নাজমুল আলম স্বপন, চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বেলায়েত হোসেন গাজী বিল্লাল, রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান হাজি হযরত আলী বেপারী, লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সেলিম খানসহ অর্ধশত নেতা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ মো. ইউসুফ গাজী, সহ-সভাপতি ডা. জে আর ওয়াদুদ টিপু, ইঞ্জি. আব্দুর রব ভূঁইয়া, আবুল খায়ের পাটওয়ারী, আব্দুর রশিদ সরদার, সন্তোষ কুমার দাস, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ্ আখন্দ, অ্যাড. জহিরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটওয়ারী, শাহীর হোসেন পাটওয়ারী, অ্যাড. মজিবুর রহমান ভূঁইয়া, পৌরসভার মেয়র অ্যাড. জিল্লুর রহমান জুয়েল, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. রুহুল আমিন, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক অজয় কুমার ভৌমিক, উপ-দপ্তর সম্পাদক অ্যাড. রনজিৎ রায় চৌধুরী, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. হারুনুর রশীদ সাগর, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী বেপারী, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আলহাজ মিজানুর রহমান কালু ভূঁইয়া, যুগ্ম-আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান টুটুল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি অ্যাড. হেলাল হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক ফেরদাউস মোর্শেদ জুয়েলসহ জেলা, উপজেলা, সদর, পৌর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা।

৩ অক্টোবর, ২০২১।