চাঁদপুরে জোট-মহাজোটে উৎসবের আমেজ

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

ইল্শেপাড় রিপোর্ট
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে চাঁদপুরের ৫টি নির্বাচনী আসনে বইছে উৎসবের আমেজ। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টসহ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের কর্মী-সমর্থকদের মাঝে প্রায় এক দশক পর এই জাতীয় নির্বাচন নিয়ে নির্বাচনী উত্তাপ আর উত্তেজনা দেখা যাচ্ছে। তাদের কেউ কেউ হিসেব কসছে জয়-পরাজয়ের। আবার অনেকেই করছে প্রার্থীদের নিয়ে নানা সমীকরণ।
এমন পরিস্থিতিতেও উভয় জোটেই রাজনৈতিক উত্তাপের পাশাপাশি আছে উদ্বেগ আর শঙ্কা। তাদের আনেকেই আবার উড়িয়ে দিচ্ছেন না আগামি ৩০ ডিসেম্বর কি ভোট উৎসব না নির্বাচনে ভোটাধিকার হরণ হবে? এ যেন এক ভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক বার্তা জেলার সর্বত্র। তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে এখন প্রার্থীদের মাঝে উৎসবের আমেজই লক্ষ্য করা গেছে। গত ৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের প্রার্থীরা পরদিন মার্কা পেয়েই নেমে পড়েছেন প্রচারণায়। নৌকা আর ধানের শীষ নিয়ে জেলাব্যাপী এ উৎসবের ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে জেলার বৃহত্তর বহমান নদী মেঘনার উত্তালকেও।
নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থীরা হলেন- চাঁদপুর-১ (কচুয়া) আসনে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর (আওয়ামী লীগ), মোশারফ হোসেন (বিএনপি), এমদাদুল হক রুমন (জাতীয় পার্টি), মো. জোবায়ের আহমেদ (ইসলামী আন্দোলন), নুরুল আলম মজুমদার (ইসলামী ফ্রন্ট), অধ্যাপক এ কে এস এম শহীদুল ইসলাম (স্বতন্ত্র) ও আজাদ হোসেন (গণফোরাম)।
চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর-দক্ষিণ) আসনে নূরুল আমিন রুহুল (আওয়ামী লীগ), ড. জালাল উদ্দিন (বিএনপি), এমরান হোসেন মিয়া (জাতীয় পার্টি), আফসার উদ্দিন (ইসলামী আন্দোলন), মো. মনির হোসেন চৌধুরী (ইসলামী ঐক্যজোট) ও নুরুল আমিন লিটন (মুসলিম লীগ)।
চাঁদপুর-৩ (সদর-হাইমচর) আসনে ডা. দীপু মনি (আওয়ামী লীগ), শেখ ফরিদ আহমেদ আহমেদ মানিক (বিএনপি), দেওয়ান কামরুন্নেসা (জাকের পার্টি), মো. জয়নাল আবেদীন শেখ (ইসলামী আন্দোলন), মো. আজিজুর রহমান (বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টি), শাহজাহান তালুকদার (বাসদ) ও মো. মিজানুর রহমান (তরিকত ফেডারেশন)।
চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনে সাংবাদিক মুহম্মদ শফিকুর রহমান (আওয়ামী লীগ), এম এ হান্নান (বিএনপি), মুকবুল হোসেন (ইসলামী আন্দোলন), দেলোয়ার হোসেন পাটওয়ারী (ন্যাপ), বাচ্চু মিয়া ভাষানী (জাকের পার্টি), গোলাম মাহমুদ ভূঁইয়া মানিক (ইসলামী ফ্রন্ট), মাইনুল ইসলাম (জাতীয় পাটি), আনিসুজ্জামান ভূঁইয়া (বাসদ) ও মাহবুবুর রহমান ভূইয়াঁ (মুসলিম লীগ)।
চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) আসনে মেজর (অব.) রফিকুল আসলাম বীর উত্তম (আওয়ামী লীগ), ইঞ্জি. মমিনুল হক (বিএনপি), সৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী (ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ), আবু সুফিয়ান আল কাদেরী (ইসলামী ফ্রন্ট), শাহাদাত হোসেন প্রধানিয়া (ইসলামী আন্দোলন) ও ওবায়েদ মোল্লা (জাকের পার্টি)।
এমন পরিস্থিতিতে প্রার্থীদের দেখা হবে ভোটের মাঠে জনপ্রিয়তার লড়াইয়ে। আর এ জনপ্রিয়তার মাপকাঠি নির্ধারণ করবেন ৫টি নির্বাচনী আসনের ভোটাররাই। তবে ভোটাররা ভোটাধিকার প্রয়োগের আগে প্রার্থীদের অতীত ও বর্তমান কর্মকা- বিবেচনাসহ তাদের ব্যক্তি গ্রহণযোগ্যতাকেও গুরুত্ব দিবেন বলে জানা গেছে।
চাঁদপুরের ৫টি নির্বাচনী আসনে এবারের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। চাঁদপুর-১ (কচুয়া) আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৫৪ হাজার ৯শ’ ৭৩ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২৯ হাজার ৭শ’ ৭৫ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ২৫ হাজার ১শ’ ৯৮ জন।
চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর-দক্ষিণ) সংসদীয় আসনে ভোটার ৩ লাখ ৮২ হাজার ৮শ’ ৩৯ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯৩ হাজার ৫শ’ ১৫ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৮৯ হাজার ৩শ’ ২৮ জন।
চাঁদপুর-৩ (চাঁদপুর সদর-হাইমচর) সংসদীয় আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ১৭ হাজার ৪শ’ ৪৩ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ১৫ হাজার ৬শ’ ৯০ জন এবং নারী ভোটার ২ লাখ ১ হাজার ৭শ’ ৫৩ জন।
চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) সংসদীয় আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ১ হাজার ৮শ’ ৭৩ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫৪ হাজার ৪শ’ ৩৭ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৪৭ হাজার ৪শ’ ৩৬ জন।
চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৩শ’ ৮৭ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯৮ হাজার ১শ’ ৮৪ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৯৫ হাজার ২শ’ ৩ জন।
তবে নবীন-প্রবীণ ভোটাররাই জয়-পরাজয় নির্ধারণ করবেন আগামি ৩০ ডিসেম্বর। তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যেমেই প্রার্থীরা তাদের ভ্যাগ্যর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন। ভোট শেষে তাদের কেউ হাসবেন আবার কেউ কাঁদবেন। তবে সাধারণ ভোটাররা বলছেন সব কিছুই নির্ভর করছে সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়েই।