ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ
শওকত আলী
চাঁদপুর সদর উপজেলার আশিকাটি ইউনিয়নের মতলব-পেন্নাই সড়কের কালীভাংতি এলাকায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার পর উদ্বোধনের আগেই বাউন্ডারি দেওয়ালে ফাঁটল ও হেলে পরেছে। ভবন নির্মাণের শুরুতেই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক দুর্নীতি করেছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। এখন যে কোন সময় প্রধান ভবনেও ফাটল দেখা দিয়ে ভবন হেলে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
সিডিউল অনুযায়ী ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে ভবন নির্মাণের কাজ শেষ করে বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সে সময়ে কাজ না করে সময় অতিবাহিত করে। ২০২১ সালের শুরুতে তড়িঘড়ি করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পাঁচটি ভবন ও বাউন্ডারি দেওয়াল নির্মাণ কাজ করেছে। বর্ষার সময় কাদা পানির মধ্য দিয়ে ভবনে চারপাশের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ করেছে। এসময় ফাউন্ডেশনের গভীরতা কম দিয়ে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে কাজটি করায় অতি দ্রুত উদ্বোধনের আগেই দেওয়ালে ফাঁটল সৃষ্টি হয়েছে।
চট্টগ্রামের ইবিএল (জেবি) ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিক শাহজাহান ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে পল্লী বিদ্যুতের ভবনের কাজটি করেন। ঠিকাদার প্রতিনিধি স্থানীয় এলাকার কিছু দালাল চক্রদের সাথে সম্পর্ক করে নিম্নমানের ইট, পাথর ও নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে ভবন নির্মাণের কাজ তড়িঘড়ি করে শেষ করে।
পল্লী বিদ্যুতের এই অনিয়ম ও দুর্নীতির মধ্য দিয়ে ভবন নির্মাণের কাজ করার সময় স্থানীয় এলাকাবাসী বেশ কয়েকবার বাঁধা দিলে তাদের সাথে বাক-বিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। এসময় বেশ কয়েকবার কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে সন্ত্রাসীদের পাহারায় রেখে ভবন নির্মাণের কাজ করে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, অনিয়ম ও দুর্নীতির মধ্য দিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ২ এর ভবন নির্মাণে ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে কাজটি করেন এই অসাধু ঠিকাদার। ভবনটি তড়িঘড়ি করে করার কারণে ও সীমানা প্রাচীরের দেওয়ালের ফাউন্ডেশন কম দেওয়ার কারণে উদ্বোধনের আগে পল্লী বিদ্যুতের চারপাশের সীমানাপ্রাচীরের দেওয়াল ফেটে হেলে গেছে। এখন যে কোন সময় প্রধান ভবনে ফাঁটল দেখা দেওয়ার আশংকা বিরাজ করছে।
পল্লী বিদ্যুতের দেওয়াল হেলে যাওয়ায় সিমানা প্রাচীরের পাশে বালু উঠিয়ে রাখা হয়। বর্ষার পানিতে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই পল্লী বিদ্যুতের সীমানা প্রাচীর ভেঙে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অতিদ্রুত অসাধু ঠিকাদার ও এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করার জোর দাবি জানান সচেতন মহল।
পল্লী বিদ্যুতের নির্বাহী প্রকৌশলী ইদ্রিস আলী জানান, পল্লী বিদ্যুতের ১৮ কোটি টাকা ব্যয় ১৫৩ শতাংশ সম্পত্তির উপর পাঁচটি ভবন নির্মাণ করার কাজটি করেন চট্টগ্রামের ঠিকাদার শাহজাহান। দেওয়াল হেলে যাওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে তাদের বলা হয়েছে। তারা করে দিবে বলে আশ্বস্ত করেছেন। কাজ করার সময় পল্লী বিদ্যুতের লোক উপস্থিত থেকে কাজটি তদারকি করেছেন। পল্লী বিদ্যুতের ভবনটি এখনো উদ্বোধন করা হয়নি, অল্প সময়ে তা উদ্বোধন করা হবে।
০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১।