ইল্শেপাড় রিপোর্ট
আসন্ন চাঁদপুর পৌর নির্বাচনে প্রার্থীদের ভোট যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) চাঁদপুর পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থীরা প্রতীক পাওয়ার পর থেকেই মূলত প্রকাশ্যে ভোট যুুদ্ধের জানান দেন তারা। তবে আগের তফসিলেই মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলরদের প্রতীক দেয়া হলেও কেবল বিএনপি’র মেয়র প্রার্থীর আনুষ্ঠানিক প্রতীক প্রদানের মধ্যে দিয়েই মূলত নতুন করে শুরু হয় এ ভোট যুদ্ধ।
তবে ভোট যুদ্ধের মাঠে নামার আগেই দু’প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে প্রায় ১০ জন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। ঐ পরিস্থিতিতেই নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীকের সমর্থকরা একত্রিত হয়ে জেলা নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের সম্মুখে কিছু সময় চালায় মৃদু ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। বড় কোন অঘটন কিংবা পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার আগেই নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
ঠিক তখনি দলীয় সমর্থকদের নিবৃত্তসহ পরিস্থিতিকে আরো নিজদের নিয়ন্ত্রণসহ তাৎক্ষণিক সৌহার্দ্যরে রাজনীতির হাত বাড়িয়ে দেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অ্যাড. জিল্লুর রহমান জুয়েল। তিনি ধানের শীষের প্রার্থী আক্তার মাঝিকে সঙ্গে করে জেলা নির্বাচন কমিশনের কার্যলয় থেকে বের হয়ে বিএনপি’র শীর্ষ নেতাদের নিয়ে পদযাত্রা করেন চাঁদপুর-লক্ষ্মীপুর সড়কে। অনেকেই এমন চিত্র দেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক দশক পর চাঁদপুরে সৌহার্দ্যরে রাজনীতির প্রতিচ্ছবি দেখেন। তা নিয়ে তারা সাধুবাদ জানান নৌকা-ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীদের।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সুধী সমাজ এ চিত্র আগামি ১০ অক্টোবর ভোটের দিন পর্যন্ত থাকবে কিনা তাও জানতে চেয়েছেন উভয় প্রার্থীর কাছে। তবে কেউ কেউ বলছেন, ভোটের দিন কি হবে তা ঐ দিনই দেখা যাবে। এই মুহূর্তে সৌহার্দ্যরে রাজনীতির যে জয় হয়েছে এটাই বড় বিষয়। এমন চিত্র যে প্রার্থীই লালন করবেন ভোটের সমীকরণও তার পক্ষেই যাবে বলে মনে করেন তারা।
এদিকে আনুষ্ঠানিকভাবে শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) চাঁদপুরে বড় ধরনের রাজনৈতিক জনসমাগম ঘটিয়ে নিজের জনপ্রিয়তার এক ধাপ জানান দিয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী অ্যাড. জিল্লুর রহমান জুয়েল। তিনি ইতোপূর্বে বিশেষ করে করোনাকালীন সময়ে সামাজিক কর্মকাণ্ডে সরাসারি অংশ নিয়ে সর্বমহলে ব্যাপক সাড়া জাগাতে সক্ষম হয়েছিলেন। যার ফলশ্রুতিতে গতকালের সমাবেশে তারুণ্যের উত্তাপ অনেকটাই বেশি লক্ষ্য করা গেছে। কেউ কেউ বলছেন, এ সমাবেশের মধ্যে দিয়েই জনপ্রিয়তার দৃঢ় অবস্থা’ই জানান দিলেন নৌকা প্রতীকের তরুণ প্রার্থী জুয়েল।
বিপরীতে ধানের শীষের প্রার্থীর তেমন শোডাউন না থাকলেও ভোটের মাঠে তাদের অবস্থান রয়েছে বলে বেশ কিছু কর্মী-সমর্থক দাবি করেছে। এজন্যই ধানের শীষের প্রার্থী আক্তার হোসেন মাঝি নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি করছেন কেবল ইভিএম-এ নয় বরং স্বচ্ছ ইভিএম’র মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করতে হবে। যাতে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন। এজন্য বিএনপির সমর্থকরা দাবি করছেন, ভোট যুদ্ধ আর রাজনীতির সৌহার্দ্য নিয়ে আমরা যে যাই বলি না কেন, সবকিছুর চূড়ান্তই হচ্ছে ভোটাধিকার। এখন প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন শেষ পর্যন্ত ভোটারদের ভোটাধিকার দিবে কিনা সেটাই দেখার বিষয় এই পৌর নির্বাচনে। এমন দাবি বিএনপি’র নেতা-কর্মী ও তাদের সমর্থকদের।
এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের হাত পাখার প্রার্থী মামুনুর রশিদ বেলাল কিংবা তার দলের পক্ষ থেকেও ভোট যুদ্ধের পরিস্থিতি নিয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোন বার্তা গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে আসেনি। তবে হাতপাখার সমর্থকরা দাবি করছেন, করোনাকালীন সময় হওয়ায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে দলটি। পরিবেশ ও পরিস্থিতির মূল্যায়ন করেই ভোটের মাঠে আছেন তারা। তবে নিজেদের আনুষ্ঠানিক জানান দিবেন পরিস্থিতির আলোকেই।
এদিকে পৌরসভার ১৫টি ওয়ার্ডেই কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা ভোটারদের ঘরে ঘরে ভোট প্রার্থনাসহ পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ও লিফলেট বিতরণ অব্যাহত রাখছেন। পাশাপাশি মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের মাইকিং অব্যাহত রয়েছে। ফলে নির্বাচনী উত্তাপ ও উত্তেজনা পুরো চাঁদপুর জুড়েই অব্যাহত আছে। প্রার্থীদের দৌঁড়-ঝাপ রাত-দিন ভোটারদের আর্কষণে নতুনত্ব দেখছে ভোটাররা।
তবে সবকিছুকেই ছাপিয়ে চাঁদপুর পৌরসভার ভোটাররা ভাবছেন, আসছে ১০ অক্টোবর তাদের এ পৌর নির্বাচনে জয় হবে গণতন্ত্রের। জয় হবে সৌহার্দ্য আর সম্প্রীতির রাজনীতির। পাশাপাশি প্রত্যেক ভোটারই পাবে তাদের ভোটাধিকার। তাহলেই সার্থক হবে এই ভোট যুদ্ধের।
২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০।
- Home
- চাঁদপুর
- চাঁদপুর সদর
- চাঁদপুর পৌর নির্বাচনে ভোট যুদ্ধ শুরু