রেলওয়ের সম্পত্তি দখল করে

স্টাফ রিপোর্টার
চাঁদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র মীর শপিং কমপ্লেক্সের পিছনে রেলওয়ের সম্পত্তি দখল করে দোকানের গোডাউন নির্মাণ করা হচ্ছে। আর তা’ নির্মাল করছেন স্বয়ং মীর শপিং কমপ্লেক্সের মালিক মীর মো. খালেদ হায়দার নিজেই।
রেলওয়ের সম্পত্তিতে পাকা ভবন কিংবা ইট-বালু দিয়ে পাকা দেয়াল নির্মাণ করার নিয়ম না থাকলেও সরকারি সম্পত্তি নিজেদের মতোই দখল করছেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা। আর এসব দেখেও না দেখার ভান করে স্থানীয় রেল বিভাগের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এই সুযোগে দখলদাররাও শুরু করে দখল প্রক্রিয়া।
মীর শপিং মলের পিছনে সরেজমিনে দেখা যায়, গত কয়েকদিন ধরে মার্কেটের মালিক মীর মো. খালেদ হায়দার এবং ক’জন ব্যবসায়ীর জোগসাজশে মার্কেটের পূর্ব থেকে পশ্চিমে রেলওয়ের বিশাল জায়গা দখল করে ইট, বালি ও সিমেন্ট দিয়ে পাকা দেয়াল করে গোডাউন নির্মাণ করা হচ্ছে। জায়গাটি মার্কেটের পেছনে থাকায় এমন অবৈধ দখল কারো নজরে পড়ছে না।
জানা যায়, মীর শপিং কমপ্লেক্সের পিছনে রেলওয়ের পুকুরটি লিজ নেন মীর শপিং কমপ্লেক্সের মালিক মীর মো. খালেদ হায়দার। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কৌশলে পুকুরের কিছু অংশ ভরাট করে গোডাউন নির্মাণ শুরু করেন তিনি। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, অত্যন্ত সুকৌশলে মীর শপিং কমপ্লেক্সের পিছনে রেলওেয়ের সম্পত্তির উপর গোডাউন নির্মাণ করছেন কমপ্লেক্সের মালিক।
খবর নিয়ে জানা যায়, আগামিতে মীর শপিংয়ের পেছনে থাকা লেকটি ভরাট করে রেলওয়ের সম্পত্তির ওপর একটি মার্কেট নির্মাণ এবং আরো গোডাউন করার পরিকল্পনাও করছেন তিনি। রেলওয়ের সম্পত্তি লিজ নেয়ার অযুহাতে এভাবে গোডাউন নির্মাণ করে সেই গোডাউন ভাড়া দিয়ে তিনি দোকানদারদের কাছে লাখ-লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলেও জানা গেছে।
মীর শপিং কমপ্লেক্সের মালিক মীর মো. খালেদ হায়দারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, মার্কেটের পেছনের লেকটি আমার অনেক পুরনো লিজ নেয়া। যদিও রেলওয়ের সম্পত্তিতে স্থাপনা নির্মাণের কোন অনুমতি বা লিজ নেই, কিন্তু তবুও এটি পুরনো গোডাউন হওয়ায় মার্কেটের ব্যবসায়ীদের মালমাল রাখার জন্য তা মেরামত করা হচ্ছে। তারা আমাকে বলছে যে এটি মেরামত করবে। কিন্তু কারা যে ইট বালি দিয়ে তা করবে তা আমি বলতে পারবো না।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে লাকসাম, চাঁদপুর ও নোয়াখালী রেলওয়ে ভূমির দায়িত্বে থাকা কানুনগো কাউছার মিয়া জানান, এ বিষয়টি আমি আজ জানতে পেরেছি। আমি দ্রুত খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।
গত কয়েক বছর ধরে দেখা গেছে, চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন স্থানে রেললাইনের পাশে থাকা লেক এবং ভরাট জায়গাগুলো রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে কোন প্রকার অনুমতি বা অনুমোদন ছাড়াই দোকান নির্মাণ, পাকা ভবন কিংবা মার্কেট নির্মাণ করে যে যার মতো রেলওয়ের সম্পত্তি দখল করছেন। আর এসব সরকারি সম্পত্তি দেখভাল করার জন্য সরকারিভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকলেও তা যেনো কারোই নজরে পড়ছে না। অথবা কর্তৃপক্ষের নজরে পড়লেও কড়াকড়ি কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। আর স্থায়ীভাবে কড়াকড়ি কোন ব্যবস্থা না নেয়ার কারণে এভাবেই দিন-দিন একের পর এক দখল হচ্ছে রেলওয়ের সম্পত্তি।
যদিও বর্তমানে এবং গত কয়েক বছর ধরে রেলওয়ের সম্পত্তি লিজ দেয়া বন্ধ রয়েছে। কিন্তু সুবিধাবাদীরা পুরনো লিজের অযুহাতে অবৈধভাবেই দখল করছেন রেলওয়ের সরকারি সম্পত্তি। তাই সরকারি সরকারি সম্পত্তিগুলো রক্ষা করার জন্য এক্ষনি কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা নেয়ার প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল।