চাঁদপুর সদরের ১৮টি বিদ্যালয়ে এসএসসিতে ৭০১ শিক্ষার্থীর জিপিএ-৫ অর্জন

এস এম সোহেল
সারাদেশে একযোগে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের দাখিল এবং কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের আওতায় ভোকেসনাল পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে ফলাফল ঘোষণা হওয়ার সাথে সাথে স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের বাঁধভাঙা আনন্দ ফুটে উঠে। মাধ্যমিক পেরিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের সোপানে পা রাখতে যাওয়া শিক্ষার্থীদের চোখে-মুখে ছিল স্বপ্ন। শিক্ষার্থীরা এ সময় উন্নত এবং সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়ার প্রত্যয়ে ছিলো উল্লসিত।
সারা দেশের মতো চাঁদপুরেও এসএসসি ২০২২ সালের ফলাফল সোমবার প্রকাশ হয়েছে। চাঁদপুর শহরের ১৮টি বিদ্যালয় থেকে ৭০১ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ অর্জন করেছে।
চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চাঁদপুর হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২২৪ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৬৯ জন, এ গ্রেড পেয়েছেন ৫৩ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ৯৯.৫৫%।
আল-আমিন একাডেমী স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ৬১৮জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে ৬১২ জন কৃতকার্য, ৪ জন অকৃতকার্য হয় ও অনুপস্থিত ছিলো ২ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৪৯ জন, এ গ্রেড পেয়েছেন ২৬৪ জন, এ মাইনাস পেয়েছেন ৫৮ জন, বি প্রেড পেয়েছেন ২৮ জন, সি গ্রেড পেয়েছে ১৩ শিক্ষার্থী। পাসের হার ৯৯.৩৫%।
মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এ বছর বিদ্যালয় থেকে মোট ২৬৮ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে ২৬৫ জন পরীক্ষার্থী কৃতকার্য এবং ৩জন অকৃতকার্য হয়। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৫৪ জন, এ গ্রেড পেয়েছেন ৯১ জন, এ মাইনাস পেয়েছেন ১৬ জন, বি প্রেড পেয়েছেন ৩ জন, সি গ্রেড পেয়েছে ১ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ৯১%।
বাবুরহাট স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ৩৪৬ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে কৃতকার্য ৩৩৪ জন ও ১২ জন অকৃতকার্য হয়। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৭ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ৯৬.৫৩%।
বীর প্রতীক মমিন উল্লাহ পাটোয়ারী একাডেমির থেকে ৩৯ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে কৃতকার্য হয়েছে শতভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২১ জন, এ গ্রেড পেয়েছেন ১৮ জন শিক্ষার্থী।
চাঁদপুর হামানকর্দ্দী পল্লীমঙ্গল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৮০ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে কৃতকার্য ৭৫ জন ও ৫ জন অকৃতকার্য হয়। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৬ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ৯৩.৭৫%।
চাঁদপুর ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ৪৬ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে শতভাগ কৃতকার্য হয়েছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৫ জন শিক্ষার্থী।
পুরাণবাজার মধুসূদন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৭০ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে কৃতকার্য ১৬৫ জন ও ৫ জন অকৃতকার্য হয়। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০ জন, এ গ্রেড পেয়েছেন ৬৬ জন, এ মাইনাস পেয়েছেন ৩২ জন, বি প্রেড পেয়েছেন ৩৩ জন, সি গ্রেড পেয়েছে ২৩ জন, ডি গ্রেড পেয়েছে ১ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ৯৭.০৬%।
গণি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৬২ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে কৃতকার্য ১৫৭ জন ও ৫ জন অকৃতকার্য হয়। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ৯৬.৯১%।
লেডী প্রতিমা মিত্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০৮ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে কৃতকার্য ১৯৮ জন ও ১০ জন অকৃতকার্য হয়। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ৯৫.১৯%।
লেডী দেহলভী বালিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৯৫ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে কৃতকার্য ৮৬ জন ও ৯ জন অকৃতকার্য হয়। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ৯০.৫৩%।
পুরাণবাজার নূরিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৪৭ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে কৃতকার্য ৪৫ জন ও ২ জন অকৃতকার্য হয়। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ৯৫.৭৪%।
আক্কাছ আলী রেলওয়ে একাডেমী থেকে ৬৭ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে কৃতকার্য ৬২ জন ও ৫ জন অকৃতকার্য হয়। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ জন। পাসের হার ৯২.৫৪%।
পুরাণবাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৬৬ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে কৃতকার্য ৬০ জন ও ৬ জন অকৃতকার্য হয়। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ৯০.৯১%।
চাঁদপুর পৌর শহীদ জাবেদ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৩০ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে কৃতকার্য হয়েছে শতভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ জন, এ গ্রেড পেয়েছেন ৭ জন, এ মাইনাস পেয়েছেন ১৫ জন, বি প্রেড পেয়েছেন ৫ জন, সি গ্রেড পেয়েছে ২ জন শিক্ষার্থী।
ডিএন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৬৪ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে কৃতকার্য ৬১ জন ও ৪ জন অকৃতকার্য হয়। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ৯৫.৮১%।
ষোলঘর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৬৬ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে কৃতকার্য ৬১ জন ও ৫ জন অকৃতকার্য হয়। পাসের হার ৯২.৪২%।
পীর মহসীন পৌর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৩৩ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে কৃতকার্য ২৮ জন ও ৫ জন অকৃতকার্য হয়। পাসের হার ৮৫.৩৪%।
চাঁদপুর পৌর শহীদ জাবেদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ওমর ফারুক জানান, চাঁদপুর পৌর শহীদ জাবেদ উচ্চ বিদ্যালয়টি ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই প্রথম এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় শতভাগ পাস কওে এবং জিপিএ ৫ পয়েছে। শিক্ষার্থীদের ভাল ফলাফল অর্জনে চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র অ্যাড. জিল্লুর রহমান জুয়েল, আমাদের শিক্ষক/শিক্ষিকাদেও অক্লান্ত পরিশ্রম ও অবদান রয়েছে। এ ফলাফল অর্জনে অভিভাবকরাও কৃতিত্বের অধিকারী। সর্বোপরি এই ফলাফলের জন্য আমরা মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করি। ভবিষ্যতে আরো ভালো ফলাফল অর্জন করার জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। সে ক্ষেত্রে পুরো চাঁদপুরবাসীর পূর্ণ সহযোগিতা ও দোয়া কামনা করছি।
মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রাণ কৃষ্ণ বলেন, মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল আগের ধারাই রয়েছে। আমরা চাই আরো ভালো ফলাফল করার জন্য। এ বিদ্যালয়ের সুনাম যেন আরও বৃদ্ধি পায় সেজন্য শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আরও আন্তরিক হতে হবে।
আল-আমিন একাডেমীর অধ্যক্ষ মো. সাইফুল ইসলাম অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, আল-আমিন একাডেমীর আগের ঐতিহ্য এখনো অব্যাহত রয়েছে। এ বছরও আমাদের বিদ্যালয় আগের বছরের তুলনায় এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করেছে। শিক্ষার্থীদের ভাল ফলাফল অর্জনে আমাদের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অবদান রয়েছে। এ ফলাফল অর্জনে অভিভাবকরাও কৃতিত্বের অধিকারী। সর্বোপরি এই ফলাফলের জন্য আমরা মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করি।
তিনি অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আগামিতে যারা এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে এখন থেকেই আপনারা আপনাদের সন্তানদের প্রতি খেয়াল রাখবেন। তাহলে ভালো ফলাফল করতে পারবে, বাবা-মায়ের পাশাপাশি বিদ্যালয়ের মান উজ্জ্বল করতে পারবে। ভবিষ্যতে আরো ভালো ফলাফল অর্জন করার জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

২৯ নভেম্বর, ২০২২।