স্টাফ রিপোর্টার
বাড়ি ফরিদগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর উত্তর ইউনিয়নের চির্কা গ্রাম। বৃদ্ধ আব্দুল আজিজের ৬ ছেলে ও ১ মেয়ের মধ্যে ৩টি ছেলেই প্রতিবন্ধী। প্রায় এক মাস আগে তার তারিফ হোসেন নামে 
প্রতিবন্ধী ছেলে অসুস্থ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। ঘরে রয়েছে শারীরিক প্রতিবন্ধী আরো দুই ছেলে শরীফ ও হেলাল উদ্দিন। প্রতিবন্ধী ছেলেসহ অন্যদের নিয়ে কোনরকমে নিরিবিলি দিনাতিপাত করতে চাইলেও পারছেন না তার প্রয়াত বড় ভাইয়ের তিন ছেলের কারণে। জমি সংক্রান্ত বিরোধের কারণে আব্দুল আজিজের পরিবারকে প্রায়ই ভাতিজা আব্দুল হাই গংদের কাছে হেস্ত-নেস্ত হতে হয়।
কয়েক মাস আগে তার প্রয়াত প্রতিবন্ধী ছেলে তারিফ হোসেন বেদর মারধরের শিকার হয় প্রতিপক্ষের কাছে। স্থানীয়ভাবে সালিসী বৈঠকের মাধ্যমে জমি সংক্রান্ত বিরোধ মিমাংসার জন্য সবকিছু করলেও আব্দুল আজিজকে তার প্রাপ্য জমি বুঝিয়ে দিচ্ছে না তার বড় ভাই নুরুল ইসলাম বেপারীর ছেলেরা। ফলে বাধ্য হয়ে তিনি প্রতিবন্ধী ছেলে হেলালকে সাথে নিয়ে শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে থানায় আসেন লিখিত অভিযোগ করতে।
থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ ও ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, গোবিন্দপুর উত্তর ইউনিয়নের চির্কা গ্রাম বেপারীর বাড়ির আব্দুল আজিজরা ৪ ভাই বসবাস করেন। বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে তাদের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। ফলে চলতি বছরের ৩ মার্চ স্থানীয় সালিসদাররা ৪ পরিবারের মধ্যে চৌহদ্দি করে প্রত্যেকের সীমানা নির্ধারণ করে দেয়। এরমধ্যে আব্দুল আজিজ তার খরিদকৃত সম্পত্তি দেখভাল করার জন্য সালিসদাররা .৪৯ শতক জমি প্রয়াত বড় ভাই নুরুল ইসলাম বেপারীর তিন ছেলে আব্দুল হাই গংকে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য বলে। কিন্তু গত ৬ মাসেও তারা ওই সম্পত্তির বুঝিয়ে না দিয়ে উল্টো তাদের হুমকি-ধমকি দিতে থাকে। প্রতিবন্ধী পরিবারের সদস্যরা তাদের ভয়ে সর্বদা ভীত সন্ত্রস্ত থাকে। বিষয়টি নিয়ে তারা সালিসদারদের কাছে ধর্ণা দিলেও তাদের কথা শুনছে না নুরুল ইসলাম বেপারীর তিন ছেলে। এ নিয়ে কিছুদিন পরপরই উভয় পরিবারের মধ্যে বিবাদ লেগে থাকে।
আব্দুল আজিজ জানান, আমি বর্তমানে জীবিত দুই প্রতিবন্ধী সন্তান নিয়ে বহু কষ্টে রয়েছি। ঝামেলা এড়িয়ে নিরিবিলি থাকতে চাইলেও আমার বড় ভাই নুরুল ইসলাম বেপারীর তিন ছেলে আমাদের থাকতে দিচ্ছে না। প্রায়শই আমাদের মারতে ধরতে তেড়ে আসে। হুমকি ধমকি দেয়। সালিসদার সর্বসম্মতিক্রমে আমাকে চলাফেরার জন্য .৪৯ শতক জমি দিলেও নুরুল ইসলাম বেপারীর তিন ছেলে আমাকে তা বুঝিয়ে না দিয়ে উল্টো আমাদের সম্পত্তি দখল করে আছে। ফলে বাধ্য হয়ে থানার আশ্রয় নিয়েছি।
সালিসদারের মধ্যে হাজি সফিক ও জসিম উদ্দিন জানান, আমরা সবার সম্মতিক্রমে জমি সংক্রান্ত বিরোধ মিটিয়ে দিলেও নুরুল ইসলাম বেপারীর ৩ ছেলে তা মানছেন না।
বিষয়টি নিয়ে নুরুল ইসলাম বেপারীর ছেলে নুরে আলম জানান, সালিসদাররা ভাগ করে দিলেও তারা তাদের অংশ বুঝে পাননি। তাই তারা ওই জমি তার চাচা আব্দুল আজিজকে বুঝিয়ে দেননি।
এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানার এসআই আনোয়ার হোসেন জানান, আব্দুল আজিজের অভিযোগ পেয়েছেন। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।