মনিরুল ইসলাম মনির
মতলব উত্তরে গজরা বাজারের কৃষি ব্যাংকে টাকা চুরি করতে গিয়ে নৈশপ্রহরী শাহাদাতকে খুন করেন প্রেমিক-প্রেমিকা। এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। শনিবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে পিবিআই পুলিশ সুপার মো. মোস্তফা কামাল রাশেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, প্রেমিককে এখনও ধরা যায়নি, চেষ্টা চলছে। তবে প্রেমিকা মিলি আক্তার ও তাদের আরেক সহযোগী মো. সজিব হোসেনকে আটক করা হয়েছে। তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হবে।
তিনি আরও জানান, আটক সজিবের দেওয়া তথ্যানুযায়ী শনিবার সকালে গজরা বাজার কৃষি ব্যাংকের ভল্ট কাটার জন্য ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডার ও বিভিন্ন সরঞ্জাম পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়।
২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৯টায় মতলব উত্তর উপজেলার গজরা বাজারে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ছাদের ইন্টারনেট টাওয়ারের সাথে রশি দ্বারা বাঁধা অবস্থায় ঐ ব্যাংকের নৈশপ্রহরী মো. শাহদাত (১৯) এর লাশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পিবিআই ক্রাইমসিন টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে আলামত জব্দসহ আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনায় জড়িত আসামিদের সনাক্তকরণের যাবতীয় কার্যক্রম গ্রহণ করে।
মামলাটি পিবিআই সিডিউলভুক্ত হওয়ায় মামলাটি অধিগ্রহণকরতঃ এসআই মো. ইব্রহীম খলিলকে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।
পিবিআই’র এডিশনাল আইজিপি বনজ কুমার মজুমদারের তত্ত্বাবধান ও দিকনির্দেশে ৫ এপ্রিল পিবিআই পুলিশ সুপার মো. মোস্তফা কামাল রাশেদের নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই ইব্রাহীম খলিল ও এসআই মো. রিয়াদ মইনুদ্দিন, পুলিশ পরিদর্শক আতিকুর রহমানের নেতৃত্বে একটি বিশেষ টিম নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে ঘটনায় জড়িত অন্যতম আসামি মো. সজিব হোসেন ও মিলি আক্তারকে আটক করেন।
আসামিরা ব্যাংকের টাকা লুট করার উদ্দেশে ভিকটিমকে আসামি মিলি আক্তার প্রেমের ফাঁদে ফেলে রাতের বেলায় ফোন দিয়ে ব্যাংকের ভিতর হতে বের করে আনে। আসামি মো. সজিব হোসেন ও অপর এক আসামি ভিকটিমকে হাতপা বেঁধে ছাদে নিয়ে টাওয়ারের সাথে বেঁধে গলায় বেল্ট ও গামছা পেচিয়ে হত্যা করে গ্যাস ও অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়ে ব্যাংকের ভল্ট ভাঙ্গার চেষ্টা করে এবং ব্যাংকের মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে যায়। আসামি সজিবের দেয়া তথ্য অনুযায়ী গ্যাস সিলিন্ডার ও তালা ভাঙ্গার সরঞ্জামাদি ব্যাংকের পিছনের পুকুর হতে উদ্ধার করে জব্দ করা হয়।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি কৃষি ব্যাংকের ছাদ থেকে শাহাদাত হোসেনের হাত-পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ বিষয়ে ঘটনার পর মতলব উত্তর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে তার পরিবার।
০৭ এপ্রিল, ২০২৪।