ফরিদগঞ্জে সড়কে অচেতনাবস্থা পড়ে থাকা কিশোরকে হাসপাতালে ভর্তি

নারায়ন রবিদাস
ফরিদগঞ্জ পৌরসভাধীন কালির বাজার চৌরাস্তায় চাঁদপুর-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে এক কিশোরের মৃতদেহ পড়ে আছে- শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে থানার মোবাইলে এরকম একটি সংবাদ পায়। সংবাদ পাওয়ার পর এএসআই গোলাম রসুল দ্রুত ছুটে যান ঘটনাস্থলে। তিনি দেখতে পান একটি কিশোর সড়কে অচেতনাবস্থায় পড়ে আছে ঠিকই, তবে সে জীবিত। তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করান তিনি। এরপর কিশোরটির পরিচয় উদঘাটনের জন্য কিশোরের ছবিসহ তিনি তার ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। পোস্ট করার পরপরই মাঈন উদ্দিন মিজি নামে এক ব্যক্তি ঐ কিশোরের মামার নাম ও মুঠোফোন নম্বর দেন।
পরে মামার সাথে মুঠোফোনে কথা বলার পর কিশোরের পরিচয় সনাক্ত হয়। ঐ রাতেই এএসআই গোলাম রসুল ফরিদগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ চরবড়ালি গ্রামের হাজি বাড়ি থেকে কিশোরের মামা কামাল হোসেনকে ডেকে এনে তার হাতে বুঝিয়ে দেন। উদ্ধারকৃত কিশোরটির নাম হাবিবুর রহমান। সে মানিকরাজ গ্রামের পাটওয়ারী বাড়ির মনির হোসেন পাটওয়ারীর ছেলে। চার ভাই-বোনের মধ্যে সে সবার বড়।
মুঠোফোনে কিশোরের মা নাসিমা বেগম জানান, শনিবার দুপুরের পর সে তার খালার বাড়ি দক্ষিণ চর বড়ালি গ্রামের বরকন্দাজ বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর গভীর রাতে তার ভাই কামাল হোসেন ফোনে তাকে ঘটনার বর্ণনা দেন। বর্তমানে সে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
তিনি আরো জানান, স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় ১০ম শ্রেণিতে পড়ার পর সে লেখাপড়া করতে অনাগ্রহ প্রকাশ করে। একপর্যায়ে সে নিজেই রাজমিস্ত্রির সহকারির কাজ নেয়। প্রায় মাসখানেক আগে একটি নির্মিতব্য ভবনের ছাদ থেকে পড়ে সে আহত হয়েছিলো। তারপর ২০/২২ দিন চাঁদপুর সদর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার পর সে সুস্থ হয়। শনিবার দুপুরের পর সে তার খালার বাড়ি যাওয়ার কথা বলে কিভাবে এখানে এলো বা কিভাবে এখানে পড়ে রইলো তা বলতে পারবো না।
ছেলেটির জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা তিনি বলেন, ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ থাকবো। এদিকে, উদ্ধারকৃত কিশোরটির ছবিসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করার পর অজস্র মানুষ পুলিশকে সাধুবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাতে দেখা গেছে।
এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রকিব জানান, একটি শিশুর লাশ রাস্তায় পড়ে আছে এমন তথ্য পাওয়ার সাথে সাথেই এএসআই গোলাম রসূলকে ঘটনাস্থলে পাঠাই। সেখানে যাওয়ার পর সে জানায় শিশুটি জীবিত আছে, সাথে সাথে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে বলি। শিশুটির পরিচয় পাওয়া ও অভিভাবককে খুঁজে বের করার কথা বলি। শেষাবধি অভিভাবকের কাছে শিশুটিকে বুঝিয়ে দিতে পেরে তৃপ্তি পেয়েছি।
এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আশরাফ আহমেদ চৌধুরী জানান, কিশোরটির অবস্থা আগের তুলনায় এখন অনেক ভালো। নাম ধরে ডাকলে সে সাড়া দিচ্ছে। পুরোপুরি সুস্থ হতে কিছু সময় লাগবে।
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০।