নুরুন্নবী নোমান
ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভয়বহ চিকিৎসক সংকটের মুখে। শয্যানুযায়ী ৩৬ জন ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র ৬ জন। আর এই ৬ ডাক্তার চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন উপজেলার ৬ লাখ মানুষকে। এছাড়া স্যাকমোসহ নির্বাহী শাখাও চলছে জোড়াতালি দিয়ে। ৫০ শয্যা হাসপাতাল কাগজপত্রে অনুমোদন পেলেও বাস্তবে সেই আগের ৩১ শয্যার মতোই চলছে এই সরকারি হাসপাতালটি। ফলে মারাত্মক জনবল সংকটে মধ্য দিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি স্বাস্থ্য সেবা চলছে।
জানা গেছে, ষাটের দশকে স্থাপিত হাসপাতালটি ২০২১ সালে ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নিত করা হয়। হয়েছে অবকাঠামোগত উন্নয়নও। কিন্তু সে অনুযায়ী বর্ধিত জনবলকাঠামো অনুমোদন না হওয়ায় চিকিৎসাসেবা আগের মতোই রয়ে গেছে। ফলে উপজেলার ৬ লক্ষাধিক মানুষের সেবা দিতে গিয়ে অতিরিক্ত চাপে পড়ছেন হাসপাতালের চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্য কর্মীরা।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৭’শ থেকে ৮শ’ রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। এছাড়া জরুরি বিভাগে প্রায় ১শ’ এবং অন্তর্বিভাগে ৭৫ থেকে ৮৫ জন রোগী সেবা নেয়। ভর্তি রোগীর চাপ থাকায় অনেকে শয্যা না পেয়ে মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নেয়। প্রতিদিন উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা গরিব-দুঃখীসহ নানা পেশার রোগীরা স্বাস্থ্য সেবা নিতে এসে শুধুমাত্র ডাক্তার সংকটের কারণে বেশিরভাগই বাধ্য হয়ে প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এ নিয়ে কথা হলে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মুজাম্মেল হোসেন বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসকের সংকট রয়েছে। ফলে স্বাভাবিক স্বাস্থ্য সেবাদান কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। জনবল সংকটের কারণে চিকিৎসাসেবা না পাওয়ার দায় এসে পড়ে চিকিৎসকদের ঘাড়ে। তারপরও রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্তকর্তা ডা. আসাদুজ্জামান জুয়েল জানান, বর্তমানে ৩১ শয্যার হাসপাতালের কাটামো অনুযায়ী কমপক্ষে ২০ জন ডাক্তার থাকার কথা সেখানে আমি মাত্র ৮ জন ডাক্তার দিয়ে হাসপাতাল চালাচ্ছি। তার মধ্যে ২ জন ডাক্তার প্রেষণে অন্যত্র রয়েছেন। এই হাসাপাতালটি কাগজপত্রে ৫০ শয্যার হাসপাতাল। আর ৫০ শয্যার হাসপালে ডাক্তার থাকার কথা কমপক্ষে ৩৬ জন, আর নার্স, স্যাকম ও নির্বাহী বিভাগসহ মোট জনবল ১শ’ ১৩ জন পাওয়ার কথা।
নিয়ম অনুযায়ী একজন ডাক্তার প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ জনের বেশি রোগী দেখা উচিত নয়, সেখানে প্রতিদিন বাধ্য হয়ে এক একজন ডাক্তার প্রতিদিন ৮০/৯০ জন রোগী দেখছেন।
২৬ মার্চ, ২০২৫।