বাকিলায় সরকারি চাল চুরির অভিযোগের সত্যতা মেলেনি!

মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্
হাজীগঞ্জের বাকিলায় সরকারি চাল চুরির অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করেছেন তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি। কমিটির আহ্বায়ক ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জুলফিকার আলীর নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে তদন্ত কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করেন।
তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এ. কে. এম. মিজানুর রহমান ও থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ। তদন্তকালীন সময়ে চাল সংগ্রহ ও বিতরণের দালিলিক প্রমাণ এবং ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান ইউসুফ পাটওয়ারীর লিখিত বক্তব্য নেয়া হয়।
এর আগে বুধবার দিবাগত রাতে বাকিলা ইউনিয়ন পরিষদে সরকারি চাল চুরির অভিযোগ উঠে। খবর পেয়ে রাতেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বৈশাখী বড়ুয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ সার্কেল) মো. আফজাল হোসেন ও থানার অফিসার ইনচার্জ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
পরে বিষয়টি তদন্তের জন্য তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং বৃহস্পতিবার দুপুরে তদন্ত কাজ শেষ করেন কমিটির সদস্যরা। পরবর্তীতে ইউএনও’র কাছে তদন্ত রিপোর্ট পেশ করা হবে। পরে ইউএনও জেলা প্রশাসকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবেন।
এদিকে জানা গেছে, গত ১৫ এপ্রিল (বুধবার) জিআর’র বরাদ্দে উত্তোলনকৃত যে ১৭৫০ কেজি (৫৯ বস্তা) চাল ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে থাকার কথা, তা গোডাউনে রয়েছে। যার সত্যতা পেয়েছেন তদন্ত কমিটি। আর যে চাল চুরির অভিযোগ উঠেছে, মূলত ওই চাল ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান পাটওয়ারীর ব্যক্তিগত অর্থায়নে ক্রয়কৃত।
ইউপি চেয়ারম্যান, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে কর্মহীন মধ্যবিত্ত ও প্রবাসী পরিবারকে প্রদানের লক্ষ্যে ব্যক্তিগত অর্থায়নে চাল ক্রয় করেন। যা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে ছিলো। ওই চাল ৩শ’ জন কর্মহীন পরিবারকে প্রদানের লক্ষ্যে ১০ কেজি করে প্যাকেট করা হয়। প্রতি প্যাকেটে চাল ছাড়াও ১ লিটার সয়াবিন তেল, ১ কেজি ছোলা বুট ও ১ কেজি আলু দেয়া হয়।
এই চাল, সয়াবিন তেল, ছোলা বুট ও আলু প্যাকেটজাত (তিনশ’ প্যাকেট) করতে বুধবার প্রায় মধ্যরাত পর্যন্ত হয়ে যায়। যেহেতু ইউপি চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগতভাবে ক্রয়কৃত খাদ্য সামগ্রী তাই প্যাকেট শেষে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে অন্য একটি গোডাউনে প্যাকেটজাত খাদ্য সামগ্রীগুলো স্থানান্তর করা হয়। খাদ্য সামগ্রীগুলো স্থানান্তরকালীন সময়ে এলাকার কিছু স্বার্থান্বেষী মহল মিথ্যা অপবাদ রটিয়ে প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে খবর দেয়।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান ইউসুফ পাটওয়ারী বলেন, আমি ইউনিয়নের প্রতিনিধিত্ব করছি এবং স্থানীয়ভাবে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত। তাই আমার প্রতিপক্ষ রয়েছে। তারা (প্রতিপক্ষ) ও কিছু স্বার্থান্বেষী মহল একজোট হয়ে আমাকে হেয় করার উদ্দেশ্যে মিথ্যা অপবাদ রটায়।
তিনি আরো বলেন, পরিষদে জিআর’র বরাদ্দকৃত যে চাল থাকার কথা, গোডাউনে সেই চাল রয়েছে। যা তদন্ত কমিটি সরেজমিন দেখেছেন। সুতরাং অভিযোগের সত্যতা নেই। যারা অপবাদ রটিয়েছে তাদের (অপবাদকারী) বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বৈশাখী বড়ুয়া বলেন, গঠিত কমিটি তদন্ত কাজ শেষ করেছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে বিধি অনুযায়ী পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

১৭ এপ্রিল, ২০২০।