সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক ভোটে বিএনপি জিততে পারবে না বলেই নাশকতার পরিকল্পনা করছে
………শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি
মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্
বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে হাজীগঞ্জে শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) হাজীগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি বলেন, যারা সারাজীবন পেছনের পথ দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে, তারাই সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার আর অপপ্রচার করছে। বইয়ে সুস্পষ্ট লেখা আছে- বানর থেকে মানুষ হয় নাই। অথচ এরা চর্তুদিকে প্রচার করছে, বানর থেকে মানুষ হয়েছে।
তিনি বলেন, আপনাদের (বিএনপি-জামায়াত) উদ্দেশ্য যদি সৎ হতো, তাহলে আমাদের ভুল ধরিয়ে দিতেন। এতে বাচ্চারা ভালো কিছু শিখতে পারতো। অথচ তারা এখনো মিথ্যাচার আর অপপ্রচারের মধ্যেই আছে। পবিত্র কোরআনে বলা আছে, তোমরা ভালো কাজ করে মন্দ কাজের জবাব দাও, আমরা তাই করছি। শান্তির সমাবেশ করে, ভালো কথার মাধ্যমে অপপ্রচার ও মিথ্যাচারকারীদের মন্দ কাজের জবাব দিচ্ছি।
তিনি বলেন, তারা (বিএনপি) আগে জোর করে ক্ষমতায় আসছে। তারপর ‘৯৬ সালে অবৈধভাবে সরকার গঠন করছে। ছয় সপ্তাহ টিকতে পারে নাই। এরপর ২০০১ সালে ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় আসছে। ২০০৬ সালে ১ কোটি ২০ লাখ ভুয়া ভোটার বানিয়ে আবারো ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করছে, কিন্তু পারে নাই। তারাই আবার আগামির নির্বাচনকে সামনে রেখে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
বাংলার মানুষ শান্তিতে থাকতে চায়, উন্নতি চায়, অগ্রগতি চায় উল্লেখ করে ডা. দীপু মনি বলেন, বেশি দূরে যেতে চাই না। ১৫ বছর আগের চেয়ে দেশের মানুষ এখন বেশি ভালো আছে। দেশে এমন কোন মানুষ নেই, যার পেটে ভাত নেই। সবার গায়ে ভালো কাপড় আছে, সবার মাথা গোঁজার ঠাঁই আছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে চিকিৎসা পাচ্ছে। যার ফলে শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমেছে। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ এবং ডিজিটালাইজেশনের সুবিধা ভোগ করছে। সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, যারা বাংলাদেশ চায় না, তাদের এসব লাগার কথা না। তারা চায়, এদেশটা ব্যর্থ হোক। কিন্তু শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে দেশকে ব্যর্থ করা যাবে না। আমরা যেমন আছি, আমাদের ছেলে-মেয়েরা আরো ভালো জীবন-যাপন করবে, তাদের ছেলে-মেয়েরা আরো ভালো জীবন পাবে। এটা তাদের পছন্দ না। সেজন্য তারা ১৩, ১৪, ১৫ সালে যেমন নাশকতা করেছে, আজও আবার নাশকতার পরিকল্পনা করছে।
তিনি বলেন, আমরা এটা হতে দিতে পারি না। তারা কেন নির্বাচনে যেতে চায় না। এর কারণ হচ্ছে, ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচন, সারা পৃথিবী গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হিসাবে গ্রহণ করেছে। আর ওই নির্বাচনে তারা ২৯ সিট পেয়েছিল। পরে উপ-নির্বাচনে এক সিট পেয়েছে। তারা জানে সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক ভোট হলে, তারা জিততে পারবে না।
কারণ, গত ১৪ বছরে শেখ হাসিনা যে উন্নয়ন করেছে, সাধারণ মানুষ তা ভালো করেই জানে। তাই এই ভয়ে নির্বাচন ভন্ডুল করে পেছনের দরজা দিয়ে কিভাবে ক্ষমতায় আসতে পারে, সেই অপচেষ্টায় আছে। কিন্তু আমরা তা হতে দিতে পারি না। আমরা চাই, দেশের অগ্রগতি অব্যাহত থাকুক। আর তা সম্ভব নৌকা মার্কায় ভোট দিলে। আমরা অপপ্রচারকারী, নাশকতাকারী, দেশ বিরোধী এবং অপশক্তিদের যে কোনো মূল্যে প্রতিহত করবো।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আমরা কোথাও গায়ে পড়ে অশান্তি করতে চাই না। আমরা দেশ পরিচালনার দায়িত্বে আছি। আমরা দায়িত্বশীল ও শান্তিপ্রিয় একটা রাজনৈতিক দল। আমরা শান্তি সমাবেশ করবো। কিন্তু কেউ যেন আমাদের এই শান্তি প্রীতিকে দুর্বলতা মনে না করে। বাঙালি জবাব দিতে জানে। সেটা সেই ৫২, ৭১, ৯০, ৯৬, ২০১৩/১৪ এবং ২০১৮ সালে দেখিয়েছে। সুতরাং এখনো সময় আছে আপনারা ভালো হয়ে যান।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় তথ্য গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটওয়ার, অ্যাড. জহিরুল ইসলাম, হাজীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী মাঈনুদ্দীন।
বিশেষ অতিথি হিসাবে আরো বক্তব্য রাখেন ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাড. জাহিদুল ইসলাম রোমান, হাজীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ.স.ম মাহবুব-উল আলম লিপন, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হায়দার পারভেজ সুজন প্রমুখ।
হাজীগঞ্জ সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ সফিকুল ইসলাম মীরের সভাপতিত্বে এবং উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক মুরাদ ও সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহতাব হোসেন সবুজের যৌথ সঞ্চালনায় এসময় সদর ইউপি চেয়ারম্যান ইউছুফ প্রধানীয়া সুমনসহ দলীয় ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
এসময় উপজেলা উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ সেলিম মিয়া, জাকির হোসেন মিয়াজী, সমির লাল দত্ত, হাজীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলহাজ আসফাকুল আলম চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা মো. শাহজামাল, আবু তালেব লিটন, আহসান উল্যাহ্ মৃধা, সামছুজামান মুন্সীসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী-সমর্থক, স্থানীয়, এলাকাবাসী, বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত লোকজন শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩।