মতলবের বহরী গ্রামে সংঘর্ষে ১ জন নিহত

খালের মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে

মাহফুজ মল্লিক
মতলব দক্ষিণ উপজেলার বহরী গ্রামে সরকারি খালে মাছ ধরা ও খালের পাড় দখল নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে বশির প্রধান (৪৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। সে বহরী গ্রামের মৃত বাদশা মিয়া প্রধানের ছেলে। বুধবার (৯ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় উপজেলার উপাদী উত্তর ইউনিয়নের বহরী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ রমিজ উদ্দিন গাজী নামে একজনকে আটক করেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্র জানা গেছে, বহরী গ্রামের একটি সরকারি খালের মাছ ধরা ও খালপাড়ের জয়াগা নিয়ে বশির প্রধানীয়া ও রমিজ উদ্দিন গাজী গংদের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলছিল এবং একাধিকবার মারামারির ঘটনাও ঘটে। গত কয়েকদিন আগে বশির প্রধান বাদী হয়ে মতলব দক্ষিণ থানায় তাদের (প্রতিপক্ষ) বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। থানায় অভিযোগ করাকে কেন্দ্র করে গত মঙ্গলবার বিকেলে ওই খালের পাড়ে এ নিয়ে বশির ও রমিজ উদ্দিনের পক্ষের লোকজনের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। গতকাল বুধবার দুপুর ১২টায় ওই সরকারি খালে মাছ ধরতে যায় বশির প্রধানীয়া ও তাঁর দুই ছেলে। এতে বাঁধা দেন রমিজ উদ্দিন ও তার লোকরা। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বাগ-বিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারি শুরু হয়। এসময় রমিজ উদ্দিন ও তার লোকরা বশির প্রধানীয়া ও তার ছেলে বিল্লাল হোসেন ও মো. জয়নালকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটান। এতে অসুস্থ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন বশির প্রধানীয়া। অজ্ঞান হয়ে যান। সেখান থেকে উদ্ধার করে স্বজনেরা চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় বিল্লাল হোসেন ও মো. জয়নালও আহত হন। তারা স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বশির প্রধানীয়ার মেয়ে তাহমিনা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, খালপাড় দখল ও সেখানে মাছ ধরা নিয়ে বিরোধের জেরে তার বাবা ও ভাইদের বেধড়ক পিটিয়েছেন রমিজ উদ্দিন ও তার লোকজন। লাঠির আঘাতে তার বাবা মারা যান। এটি একটি পরিকল্পিত ঘটনা। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অভিযোগের ব্যাপারে রমিজ উদ্দিন বয়াতীর মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। স্থানীয়রা বলেন, ঘটনার পর থেকে তিনি ও তার পরিবারের লোকজন পলাতক।
থানার ওসি মো. সালেহ আহাম্মেদ বলেন, সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য ওই কৃষকের লাশ চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হচ্ছে। সরকারি খালের পাড় ও মাছ ধরার বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে থানায় একটি হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন।

১০ এপ্রিল, ২০২৫।