আইন মেনে গ্রাম আদালতে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে
…………….ইউএনও শারমিন আক্তার
স্টাফ রিপোর্টার
গ্রাম আদালত বিচার ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আইন অনুযায়ী দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে গ্রাম আদালত রয়েছে। এলাকার ছোট-খাট বিরোধ নিস্পত্তির জন্য গ্রাম আদালত কাজ করে। ইউপি চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে এখানে মোট পাঁচ জন বিচারিক প্যানেল সদস্য নিয়ে গ্রাম আদালত গঠিত হয়। আদালত গঠনের পর অবশ্যই আইন ও বিধি মেনে গ্রাম আদালতে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। এর ব্যাত্যয় ঘটলে আদালতের ঘোষিত রায় প্রশ্নের মুখে পড়বে। মতলব-উত্তর উপজেলা সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত গ্রাম আদালত বিষয়ক রিফ্রেশার্স প্রশিক্ষণে কথাগুলো বলেন মতলব উত্তর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার।
উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আরো বলেন, সরকার জাতীয় সংসদ থেকে আইন পাস করে দেশের সব ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বিচারিক ক্ষমতা প্রদান করেছেন। গ্রাম আদালতের এজলাসে আমি অথবা উচ্চপদস্থ অন্য কোন কর্মকর্তা চাইলেই বিচারকের আসনে বসতে পারবেন না। ভেবে দেখুন যে, সরকার আপনাদের কত উচ্চ মর্যাদায় আসীন করেছেন। এ মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখতে হলে অবশ্যই ইউনিয়নের গ্রাম আদালতকে সক্রিয় করতে হবে। এর মাধ্যমে ন্যায়সঙ্গতভাবে এলাকার ছোট-খাট বিরোধ নিষ্পত্তিতে বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে।
তিনি বলেন, গ্রাম আদালত সরকারের একটি মহতী উদ্যোগ। একে সক্রিয় করতে পারলে উচ্চ আদালতে মামলার চাপ কমে যাবে। কিন্তু গ্রাম আদালত সক্রিয় করার পূর্বশর্ত ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। এজন্য এ ধরনের প্রশিক্ষণ আয়োজন করা খুবই দরকার। পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে সচেতন করা যাতে তারা কখনো বিরোধে জড়িত হলে ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে আসে এবং বিচার চাইতে পারে। এজন্য উভয় পক্ষেরই সক্ষমতা দরকার।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি’র (ইউএনডিপি) সহযোগিতায় স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত ৬-১৭ নভেম্বর ২০১৯ গ্রাম আদালত বিষয়ক প্রশিক্ষণে মতলব-উত্তর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের ৮৮ জন ইউপি সদস্য মোট ৪ ব্যাচে বিভক্ত হয়ে অংশগ্রহণ করবেন। বর্তমানে ৩য় ব্যাচের প্রশিক্ষণ চলছে। এতে জহিরাবাদ ও কলাকান্দা ইউনিয়নের মোট ২২ জন ইউপি সদস্য অংশগ্রহণ করছেন। জেলার স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ শওকত ওসমানের নেতৃত্বে প্রশিক্ষণে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করেন চাঁদপুরস্থ গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্পের ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর (ডিএফ) নিকোলাস বিশ্বাস।
উপজেলা পর্যায়ে চলমান প্রশিক্ষণগুলোতে যারা বিশেষ প্রশিক্ষক হিসেবে বিভিন্ন সেশন পরিচালনা করছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারী জজ শুভ্রা চক্রবর্তী, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আহসান হাবীব, জেলা সমাজসেবা উপ-পরিচালক রজত শুভ্র সরকার, জেলা যুব উন্নয়ন উপ-পরিচালক মো. সামসুজ্জামান এবং জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোচ্ছা. মাসুদা আক্তারসহ সরকারের অন্যান্য কর্মকর্তারা। এছাড়া প্রকল্পের সহযোগী সংস্থা তথা ‘ব্লাস্ট’-এর জেলা ও উপজেলা সমন্বয়কারীরা প্রশিক্ষণে সহযোগিতা প্রদান করছেন।
প্রশিক্ষণে যেসব বিষয় উপস্থাপন করা হচ্ছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে: বিকল্প বিরোধ নিস্পত্তি (এডিআর), গ্রাম আদালত আইন ও বিধিমালা, গ্রাম আদালতের ধাপসমূহ, শুদ্ধাচার, মূল্যবোধ ও গ্রাম আদালত; জেন্ডার ও গ্রাম আদালত। প্রশিক্ষণে গ্রাম আদালতের উপর একটি ভিডিও শো প্রদর্শনসহ গ্রাম আদালতের মক-ট্রায়াল করা হচ্ছে যেখানে ইউপি সদস্যবৃন্দ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
- Home
- চাঁদপুর
- মতলব উত্তর
- মতলব উত্তরে গ্রাম আদালত রিফ্রেশার্স প্রশিক্ষণ