মতলব উত্তরে বিদ্যুতের আলোয় হ্যাজাক লাইট বিলুপ্ত

মতলব উত্তর ব্যুরো
মতলব উত্তর উপজেলায় বিদ্যুতের আলোতে কেরোসিন তেলের হ্যাজাক লাইট বিলুপ্ত হয়ে ঠাঁই হয়েছে জাদুঘরে।
বর্তমান সরকার এ উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়িত ঘোষণা করার ফলে, রাতের অন্ধকার দূর করতে যার জুড়ি ছিল না এখন তা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। স্থান ভেদে এর বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নাম রয়েছে। কোন কোন জায়গায় এর নাম পাম্প, মেন্টাল লাইট, ইত্যাদি নাম ধারণ করে ছিল এই হ্যাজাক লাইট, বড় বাতি।
গ্রামে গঞ্জে পাড়ায়-মহল্লায়, ওয়াজ মাহফিল, বিয়ে-শাদী, সালিশ বৈঠক, নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা, গান বাজনা, যাত্রাপালা, রাতে কারো মৃত্যুতে, এক কথায় রাতের বেলায় বড় কোন অনুষ্ঠান হ্যাজাক লাইট ছাড়া সবই ছিল অচল।
তাই রাতের বেলায় বড় কোন সামাজিক কাজে এ লাইট ভাড়া করে আনতে ডেকোরেটরের দোকান থেকে অথবা এলাকার ধনাঢ্য ব্যক্তির কাছে থাকলে ধার করে আনতো।
এক সময় হ্যাজাক লাইটের ব্যাপক চাহিদা ছিল, রাতের অন্ধকার দূর করতে গ্রাম-গঞ্জে কেরোসিন তেলে ব্যবহৃত হ্যাজাক লাইট ছিল একমাত্র ভরসা। আধুনিকতার ছোঁয়ায় এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দেশকে শতভাগ বিদ্যুতায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করার কারণে এ লাইটের ব্যবহার এখন আর দেখা নেই।
জানা যায়, ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে এ লাইটের ব্যবহার ছিল রমরমা। মাত্র ৩ লিটার কেরোসিন তেল দিয়ে চলত সারারাত। আর হ্যাজাকের লাইটের আলোয় আলোকিত থাকতো গ্রামবাংলার অন্ধকার জনপদ।
কেরোসিন তেল পাম্প করে ছিদ্রযুক্ত নজেলের সাহায্যে মেন্টালে দেওয়া হতো আর আগুনের ফুলকিতে জ্বলে উঠতো মেন্টাল। আলো জ্বালার সাথে সাথে দূর হতো সব অন্ধকার। একটা সময় লাইটের আলো কমতে দেখলে আবার দেওয়া হতো পাম্প। আবার উজ্জ্বল আলোয় জ্বলে উঠতো মেন্টাল, এভাবে চলতো সারা রাত।
আধুনিক প্রযুক্তির প্রভাবে বিদ্যুতের বাতি, সোলার লাইটের কার্যক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি হওয়ায় হ্যাজাক লাইট আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়েছে। ডেকোরেটরের দোকানে পুরনো জমিদার, ধনাঢ্য ব্যক্তিদের বাড়িতে হ্যাজাক লাইট দেখা যেত।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কালের আবর্তে খুচরা যন্ত্রাংশ ও চিমনি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না, তাই এর খোঁজ কেই রাখে না। এখনকার আধুনিক যুগের কারণে বর্তমান ছেলে-মেয়েদের কাছে হ্যাজাক লাইট গল্পের মত। হ্যাজাক লাইট দেখতে এখন যেতে হবে জাদুঘরে।

০১ জুন, ২০২২।