মতলব উত্তরে ৩ দিনব্যাপী কৃষি মেলার উদ্বোধন

টেকসই কৃষি উন্নয়নে কৃষি বাণিজ্যিকীকরণ অপরিহার্য
…..পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম

মনিরুল ইসলাম মনির
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য প্রফেসর ড. শামসুল আলম বলেন, মেধা ও চেষ্টায় কৃষির উন্নয়নে কৃষি কর্মকর্তারা কঠোর পরিশ্রম করে কৃষির উৎপাদনে ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে ব্যাপক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। আমাদের মতলবের মাটি খুবই উর্বর। তুলনামূলকভাবে জমির পরিমাণ কম হলেও মহান আল্লাহর রহমতে মতলবের মাটিতে যা চাষাবাদ করেন কৃষকরা সবই সোনার ফলন হয়। মেলাকে প্রাণবন্ত করতে মতলব উত্তরের সর্বসাধারণকে মেলা পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান তিনি।
বুধবার (১০ আগস্ট) দুপুরে নোয়াখালী, ফেনী লক্ষীপুর, চট্টগ্রাম ও চাঁদপুর কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ‘কৃষিই সমৃদ্ধি’ প্রতিপাদ্যে মতলব উত্তর উপজেলায় ৩ দিনব্যাপী কৃষি মেলার উদ্বোধন ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী প্রফেসর ড. শামসুল আলম উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেছেন, টেকসই কৃষি উন্নয়নের জন্য কৃষি বাণিজ্যিকীকরণ অপরিহার্য। আধুনিক কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও কৃষির বহুমুখিকরণের মাধ্যমেই কৃষির উন্নয়ন সম্ভব। আমাদের যে উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে তার সাথে স্থানীয় এবং আর্ন্তজাতিক পরিম-লে বাজারজাত নিশ্চিত করতে পারলে এসডিজি’র চ্যালেঞ্চ মোকাবেলা করতে সক্ষম হবে।
তিনি বলেন, বাংলদেশের অর্থনীতি এবং কর্মসংস্থানে কৃষির ভূমিকা অনেক। আমাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য রপ্তানি করতে পারলে আয় বাড়বে, আয় বাড়লে সক্ষমতা বাড়বে। তখন মানুষের নিরাপদ ও পুষ্টিমান সম্পন্ন খাদ্য গ্রহণের হার বাড়বে।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জন্য এখন দুটি চ্যালেঞ্জ। জনগণের জন্য পুষ্টি ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণ এবং উৎপাদনমুখী খাতে বিনিয়োগ বাড়িয়ে আমাদের শিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করা। উৎপাদিত পণ্যের প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে মূল্য সংযোজন ও রপ্তানি বাড়াতে পারলে দেশের বাজারও সম্প্রসারণ হবে। কৃষক তার ফসলের ন্যায্য দাম পাবে। আরো বাড়বে কৃষি উৎপাদন। নিশ্চিত হবে নিরাপদ ও পুষ্টিমানসম্পন্ন খাদ্যের যোগান।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার দেশে কৃষি বিপ্লব সৃষ্টি করেছে। দেশে অনেক ছেলে মেয়েদের চাকরী নেই, এদেরকে কৃষি ও মৎস্য খাতে সম্পৃক্ত করলে বেকারত্ব অনেকাংশে কমে যাবে, উৎপাদন ও বৃদ্ধি পাবে। সরকার ভর্তুকি দিয়ে কৃষকদের মাঝে সার বীজ বিতরণ করছে।তাই প্রতিটি ইউনিয়নে এ ধরনের মেলা করা গেলে নতুন নতুন কৃষি উদ্যেক্তা সৃষ্টি হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ অ্যাড. নুরুল আমিন রুহুল।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নুরুল আমিন রুহুল বলেন, কৃষিতে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের একটি সফল রাষ্ট। কৃষিতে সরকারের অভূতুপূর্ব সফলতার কারণ হলো কৃষকদের মাঝে স্বল্পমুল্যে কৃষি উপকরণ সঠিক সময়ে পৌঁছে দেওয়া এবং সমবন্টন করা। তিনি আরো বলেন, সারের জন্য এই সরকারের আমলে কৃষকেরা আর গুলি খেয়ে মরে না। তাই কৃষিতে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে দেশ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল হাসানের সভাপতিত্বে এবং উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মজিবুর রহমানের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা এমএ কুদ্দুস। স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন।
আরো বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মো. পাভেল খান পাপ্পু, সহকারী পুলিশ সুপার (মতলব সার্কেল) ইয়াসির আরাফাত, উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক জিএম ফারুক, সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুজাম্মেল হক, সাংবাদিক শামসুজ্জামান ডলার, কৃষক মোস্তাফিজুর রহমান।
এসময় উপজেলা আওয়ামী, সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী ও বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, কৃষক, কৃষাণী, নার্সারী মালিক ও স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। মেলায় ফলদ, ঔষধি, বনজসহ ১৩টি স্টল শোভাবর্ধন করেছে।

১১ আগস্ট, ২০২২।