মতলব দক্ষিণে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ

টাকা ছাড়া সেবা মিলছে না

মতলব দক্ষিণ ব্যুরো
মতলব দক্ষিণ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। মোটা অংকের টাকা ছাড়া পশুর চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ৭ জন ওই প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেছেন। এছাড়া পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল মহনের বরাবরও ডাকযোগে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীরা।
অভিযোগে জানা গেছে, গরু বা বাছুর অসুস্থ হলে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কাছে আসলে তাকে কমপক্ষে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা না দেয়া হলে কোন চিকিৎসা করতে রাজী হন না। টাকা দিয়েও ভাল সেবা দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। ভুয়া চিকিৎসার কারণে ৮ থেকে ১০টি গরু ও বাছুর মারা গেছে বলে জানান বেশ কয়েকজন খামার মালিক। এছাড়া ঔষধ কোম্পানির কয়েকজন লোকদের সাথে আঁতাত করে এবং নিজেস্ব ফার্মেসী থেকে ঔষধ ক্রয়ের জন্য ভুক্তভোগীদের বলে দেন।
মায়াবী ভ্যাটেনারীর স্বত্বাধিকারী চন্দন কুমার দত্ত বলেন, গরু ও বাছুরের চিকিৎসা সেবা নিতে আসলে নিজেই ব্যবস্থাপত্র লিখে প্রাণিসেবা সার্ভিস সেন্টার (নিউ হোস্টেল মাঠ সংলগ্ন) দোকান থেকে ঔষধ ক্রয়ের জন্য বলে দেন। যার কোন ড্রাগ লাইসেন্স নেই এবং বাংলাদেশ কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতি মতলব দক্ষিণ শাখার কেউই তার ব্যাপারে জানেন না।
চরলক্ষীপুর গ্রামের বাচ্চ প্রধানীয়া বলেন, তার একটি গরুর চিকিৎসা সেবার জন্য প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার নিকট গেলে ব্যবস্থপত্রের জন্য ২ হাজার টাকা ফি রাখা হয়। তার দেয়া পরামর্শ মোতাবেক ঔষধ খাওয়ানোর পর গরুটি মারা যায়। পরে বিষয়টি তাকে জানানো হলে তিনি ওই ভুক্তভোগীর সাথে অশোভন আচরণ করেন।
উত্তর দিঘলদী গ্রামের শুভ তারা, চরলক্ষ্মীপুর গ্রামের নান্নু মিয়া, দশপাড়া গ্রামের মজিবুর রহমান ফতেপুর গ্রামের কামরুল ইসলাম পইলপাড়া গ্রামের হারুনসহ ভুক্তভোগী ৫/৭ জন বলেন, ২ থেকে ৩ হাজার টাকার কম দিলে তিনি কোন চিকিৎসা সেবা দেন না। এছাড়া তার ভুল পরামর্শ ও ব্যবস্থাপত্রের ঔষধ খাওয়ানোর পর গরু ও বাছুর মারা গেছে।
মতলব উত্তর উপজেলার হাজীপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলী মাঝি অভিযোগ করে বলেন, তার একটি বাছুরের পা ভেঙে গিয়েছিল। সে বাছুর নিয়ে তার কাছে আসলে ব্যান্ডেজ করতে ৫ হাজার টাকা রাখে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জাকির হোসেনের কাছে জানতে চাইলে বলেন, চিকিৎসা ও পরামর্শ বাবদ অফিস টাইমে আমি কোন টাকা নেই না। উপজেলার মধ্যে একমাত্র প্রাণিসম্পদ অফিসটি সম্পূর্ণ ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত। অফিস টাইমের পর কেউ যদি গরু বা বাছুর চিকিৎসা সেবার জন্য বাড়িতে নিয়ে যায়, সেক্ষেত্রে কেউ কোন সম্মানী দিলে সেটা নেয়া হয়।

১৬ অক্টোবর, ২০২২।