মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলায় স্মৃতিচারণ

বিজয় স্মৃতি সংরক্ষণ স্টলে দেখলাম মুক্তিযোদ্ধারা জ্বলজ্বল করে জ্বলছে
……….সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ

স্টাফ রিপোর্টার
বাংলাদশ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মুক্তিযোদ্ধা গোলাম কুদ্দুছ বলেছেন, এক সময় এদেশে ঠিকমতো কথাও বলতে পারতাম না। কিন্তু বর্তমানে আমরা স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারি। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের স্টলে গিয়ে দেখলাম- মুক্তিযোদ্ধারা জ্বলজ্বল করে জ্বলছে।
সোমবার (২ জানুয়ারি) রাতে মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার বঙ্গবন্ধু মঞ্চে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক স্মৃতিচারণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গোলাম কুদ্দুছ আরো বলেন, কেন বঙ্গবন্ধু কারাগারে তার সারাটি যৌবন কাটিয়েছিলেন? কেন তিনি এদেশকে স্বাধীন করেছিলেন? কতগুলো নীতি আদর্শে সুপ্রতিষ্ঠিত করতেই এদেশকে বঙ্গবন্ধু স্বাধীন করেছিলেন। প্রতিটি নাগরিক যেনো তার সঠিক অধিকার পায়। বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন এদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। সেজন্যেই তিনি এদেশকে স্বাধীন করেছিলেন। সমান অধিকার নিয়ে যেনো সাধারণ নাগরিক বাঁচতে পারে।
তিনি বলেন, মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসা প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই বাঙালি জাতির রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। বাঙালি হওয়ার মধ্যে রয়েছে মানবতাবোধকে জাগ্রত করা। বাংলাদেশ হবে এমন একটি রাষ্ট্র, যে রাষ্ট্রে সব ধর্মের মানুষ একসাথে মিলেমিশে বসবাস করবে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে এদেশকে হত্যা করা হয়েছিলো। শুধু বঙ্গবন্ধুকে নয়, তাঁর পুরো পরিবারকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিলো। একাত্তরের পরাজয়ের পরিশোধ নেয়ার জন্যেই এ হত্যাকাণ্ড করা হয়েছিলো। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে পাকিস্তানি বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করতেই এ হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিলো।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তবে ষড়যন্ত্রকারীরা এখনো থেমে নেই। সেই বুলেট এখনো তাড়া করে বেড়াচ্ছে।
প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মরহুম অ্যাড. সিরাজুল ইসলামের সন্তান ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাড. জাহিদুল ইসলাম রোমান। তিনি জাতির পিতাসহ মুক্তিযুদ্ধে সব শহীদদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে বলেন, পৃথিবীর সব মানুষ জাতির পিতাকে বিশ্বের নেতা হিসেবে দেখেন। বঙ্গবন্ধু হাজার বছরের আরদ্ধ মানুষ। পৃথিবীর সব থেকে ছোট্ট একটি ভূখণ্ড হলেও এখন সবাই বাংলাদেশকে গুরুত্বের চোখে দেখে। পাকিস্তানীরা ধর্মকে পুঁজি করে এদেশের মানুষদের অত্যাচার করেছিলো।
তিনি বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি। আমরা মুক্তিযুদ্ধকে বুকে লালন করি। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে আমরা সবসময়ই স্বোচ্চার। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করতে সবসময়ই চক্রান্ত চলেছে, এখনো চলছে। বঙ্গবন্ধুর কন্যার নেতৃত্বে সব চক্রান্ত প্রতিহত করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ এখন উন্নয়নের শিখরে পৌঁছে গেছে। মেট্রোরেলসহ দেশে একের পর এক উন্নয়ন হচ্ছে।
স্মৃতিচারণ কমিটির আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা ইয়াকুব আলী মাস্টারের সভাপতিত্বে অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান টুটুল, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি তপন সরকার।
সাংবাদিক এমআর ইসলাম বাবুর পরিচালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন মেলার মহাসচিব হারুন আল রশিদ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাত হোসেন সাবু পাটওয়ারী, মেলার স্টিয়ারিং কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মহসিন পাঠান, কেন্দ্রীয় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সদস্য রেজাসহ আরো অনেকে।
এর আগে প্রধান অতিথি মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ স্টল পরিদর্শন করেন। পরে চাঁদপুর জেলার সব সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা প্রদান করা হয়।

০৩ জানুয়ারি, ২০২৩।