মেঘনা-ধনাগোদা বেড়ি বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ অংশ পরিদর্শনে ইউএনও

মতলব উত্তর ব্যুরো
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের ঝুঁকিপূর্ণ অংশ পরিদর্শন করেন মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী অফিসার গাজী শরিফুল হাসান। জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের নির্দেশনায় বুধবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে মতলব উত্তর উপজেলার আমিরাবাদ-জনতা বাজারের মধ্যবর্তী স্থানে বেড়িবাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ অংশ সরেজমিনে পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার গাজী শরিফুল হাসান। এ সময় সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের সচিব, ইউপি সদসসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার গাজী শরিফুল হাসান বলেন, আসন্ন বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই অতি দ্রুত বাঁধ মেরামত করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা একান্তভাবে কামনা করেন তিনি।
গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে মতলব উত্তর উপজেলার ফরাজিকান্দি ইউনিয়নের জনতা বাজার সংলগ্ন কাচারীকান্দি এলাকা দিয়ে মেঘনা নদী লাগোয়া মূল বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। অল্প সময়ের মধ্যে নদীর তীরবর্তী অংশের ২০০ মিটার অঞ্চল ভেঙে নদীতে বিলীন হতে থাকে। অল্প সময়ের মধ্যেই বাঁধের ৮০ মিটার এলাকা ভেঙে যায়। চারদিকে খবর ছড়িয়ে পড়লে রাতেই শতাধিক যুবক নিজ উদ্যোগে ৮-১০টি ট্রলিতে করে জনতা বাজার, চরমাছুয়া এলাকা থেকে কয়েক হাজার বালুভর্তি জিওব্যাগ এনে বাঁধ রক্ষার কাজে নেমে পড়েন। স্থানীয় আমিরাবাদ বাজারে বাঁশের বাজার থাকায় সেখান থেকে বাঁশ এনে পাইলিংয়ের ব্যবস্থা করতে থাকেন তারা। যুবকরা রাত ৩টা পর্যন্ত প্রাণপণে চেষ্টা করে বাঁধ রক্ষা করেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ওই এলাকায় ১৭ হাজার ৫৪৮ হেক্টর জমিতে ধান, পাট, আখ, শাকসবজিসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল রয়েছে। এছাড়া সেখানে কৃষকসহ প্রায় ৭ লাখ লোকের বসবাস। তাই বেড়িবাঁধ ভেঙে ভেতরে পানি প্রবেশ করলে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবে ওই এলাকার মানুষ।
মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী অফিসার গাজী শরিফুল হাসান বলেন, এলাকাবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে গভীর রাত পর্যন্ত বাঁধ রক্ষায় কাজ করে। সকলের সার্বিক সহযোগিতায় ওই সময় বাঁধ রক্ষা পেলেও এখনো কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বর্ষার আসার আগেই বাঁধ রক্ষা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অনুরোধ করা হয়।
সংসদ সদস্য অ্যাড. নুরুল আমিন রুহুল ব্যক্তিগত অর্থায়নে ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে স্থায়ী ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষকে বলেন। ইতোমধ্যে যতসামান্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ বরাদ্দ বৃদ্ধি করার জন্যও আহ্বান জানান পানি উন্নয়ন বোর্ডকে।
তিনি আরো বলেন, এখানে প্রায় সাড়ে ৪শ’ কোটি টাকার একটা ডিপিপি হওয়ার কথা। অতি দ্রুত এই বেড়িবাঁধ সুরক্ষার জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি বলেন, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় কাজটি দ্রুত গতিতে না করলে যেকোনও সময় বেড়িবাঁধ ভেঙে যেতে পারে। এর আগেও দুইবার ভেঙেছে। আর সব মিলিয়ে প্রায় পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হবে। তাই প্রধানমন্ত্রী ও পানিসম্পদ মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আর্কষণ করছি।

২৯ এপ্রিল, ২০২১।