শাহরাস্তিতে নতুন রাস্তা পেয়ে খুশি এলাকাবাসী

রাফিউ হাসান হামজা
শাহরাস্তি উপজেলার পৌর ৭নং ওয়ার্ডের নিজমেহার অবহেলিত একটি এলাকার নাম। পৌরসভার এই অঞ্চলটিতে প্রায় দুই সহস্রাধিক লোকজনের বসবাস। ঠাকুর বাজার মাজার রোডের খাল পাড়ের এই মানুষগুলো জমির আইল ধরে এতোদিন চলাচল করতো। নতুন রাস্তা নির্মাণ হওয়ায় তারা এখন আনন্দিত।
বিগত বছরগুলোতে কোনো জনপ্রতিনিধিরা উক্ত রাস্তাটি নির্মাণ করার ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেননি বলে অভিযোগ ছিল এলাকাবাসীর। অবশেষে শাহরাস্তি পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড কমিশনার দেলোয়ার হোসেনের উদ্যোগে এলাকাবাসী পেয়েছে তাদের স্বপ্নের এই রাস্তা। নতুন রাস্তা পেয়ে খুশি এলাকাবাসী।
জানা যায়, রাস্তা না থাকায় গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে নানা সমস্যায় পড়তে হতো তাদের। রাস্তা না থাকায় কৃষি পণ্যের সঠিক মূল্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতেন কৃষকেরা। কৃষি ফসলগুলো মাথায় করে জমির আইল ধরে নিয়ে যেতো হতো বাজারে। বর্ষার সময় নৌকা আর শুকনো মৌসুমে জমির আইল ধরে তাদের চলতে হতো। শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যেতে হতো নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে। বর্ষা মৌসূমে চলাচলের দুর্ভোগ বেড়ে যেতো দ্বিগুণ।
এলাকার বাসিন্দা জহির বলেন, এতোদিন রাস্তা না থাকায় আমাদের উপজেলা, পৌরসভায় অথবা থানায় যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। এখন রাস্তা হওয়ায় সহজেই আমরা যাতায়াত করতে পারছি। কোনো মানুষ অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে নিতে কষ্ট হতো। রাস্তা হওয়ায় সহজেই একজন অসুস্থ মানুষকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিতে পারছি।
গ্রামের আরেক বাসিন্দা আলমগীর বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই এই পথ দিয়ে গ্রামবাসীরা চলাচল করতো। কিন্তু কোনো রাস্তা নির্মাণের ব্যবস্থাগ্রহণ করা হয়নি। ইউনিয়ন পরিষদ শেষে যখন পৌরসভায় রূপান্তরিত হয় তখন উক্ত অঞ্চলটি ৭নং ওয়ার্ডের অন্তর্ভূক্ত হয়। পর পর কয়েকবার মেয়র ও কাউন্সিলর পরিবর্তন হলেও উক্ত রাস্তা নির্মাণে ভাগ্য অপরিবর্তীতই থাকে।
রাস্তা ছিল না, এক মণ ধান বিক্রি করতে পারতাম না। মাথায় করে জমির আইল ধরে ধান নিতে হতো। রাস্তা হওয়ায় এখন সহজেই যেকোনো কাজ করতে পারছি।একজন মানুষ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নেয়া যেতো না। রাস্তা হওয়ায় সহজেই হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারছি। স্থানীয় মেয়র আলহাজ আবদুল লতিফ ও ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেলোয়ার হোসেনকে তারা ধন্যবাদ জানায়।
গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার বলেন, ৮০ বছরেও এলাকা এই অবহেলিত রাস্তার উন্নয়ন হয়নি। আমাদের কাউন্সিলর দেলোয়ার হোসেন আমাদের যে উপকার করেছেন তা আমরা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। আমাদের অনেক আত্মীয়-স্বজন আছে যারা এই এলাকায় আসতো না এবং ছেলে মেয়েদের বিয়ে দেয়া ছিলো বড় প্রতিবন্ধকতা। রাস্তা হওয়ায় আমাদের অনেক সুবিধা হয়েছে।
স্থানীয় রফিক বলেন, আমরা যখন ছোট ছিলাম জমির আইল ধরে স্কুলে যেতাম। এই রাস্তা হওয়ায় আমাদের ছোট ভাইরা এখন নবনির্মিত রাস্তা দিয়ে স্কুলে যেতে পারছে। বিয়ের জন্য মেয়ে দেখতে গেলে রাস্তা নেই বলে বিয়ে ভেঙে যেতো। রাস্তা হওয়ায় এখন আর এই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে না।
পৌর ৭নং ওয়ার্ড কমিশনার দেলোয়ার হোসেন বলেন, নির্বাচন প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগে এবং সরকারি অনুদানে ২০০ ফুট রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়েছে। জনগণ সুফল ভোগ করলেই রাস্তা নির্মাণের স্বার্থকতা পাওয়া যাবে।

০৮ মে, ২০২৪।