শাহরাস্তিতে প্রবাসীর স্ত্রীকে হত্যায় আসামির যাবজ্জীবন

স্টাফ রিপোর্টার
শাহরাস্তি উপজেলার প্রবাসী মো. আরিফ হোসেনের স্ত্রী গৃহবধূ কোহিনুর বেগম (৪০) হত্যা মামলায় আসামি মো. জহির হোসেন (৪৫) কে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চাঁদপুরের জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ সামছুন্নাহার এই রায় দেন।
হত্যার শিকার গৃহবধূ কোহিনুর বেগম একই বাড়ির প্রবাসী আরিফ হোসেনের স্ত্রী। কারাদন্ডপ্রাপ্ত আরিফ হোসেন উপজেলার ভাটনীখোলা গ্রামের ব্যাপারী বাড়ির আবুল হোসেনের ছেলে।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, আসামি জহির হোসেন স্ত্রী লাকী বেগম ঋণ করে তার স্বামীকে সৌদি আরব পাঠায়। জহির সৌদি আরব এক মাস থেকে দেশে চলে আসে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ হয় এবং লাকী বেগম এরপর তার কাছ থেকে তালাক নিয়ে চলে যায়। এর কিছুদিন পরে হত্যার শিকার কোহিনুরের বড় ভাইয়ের সাথে বিয়ে হয় জহিরের স্ত্রী লাকী বেগমের সাথে। এ বিয়ে নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। যার ফলে ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে আসামি জহির ক্ষিপ্ত হয়ে কোহিনুর বেগমের ঘরে প্রবেশ করে তাকে দা দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। স্থানীয় উদ্ধার করে তাকে শাহরাস্তি ও কুমিল্লা চিকিৎসা দিয়ে সর্বশেষ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২২ এপ্রিল তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
কোহিনুর বেগমের স্বামী প্রবাসে থাকায় তার ছোট ভাই মো. হাবিব উল্লাহ বাদী হয়ে ঘটনার পরদিন ১৯ এপ্রিল শাহরাস্তি থানায় জহির হোসেনসহ ৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলায় প্রধান আসামি আটক হওয়ার পর পুলিশ তাকে আদালতে সোপর্দ করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন শাহরাস্তি থানার এসআই মো. আব্দুল আউয়াল তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ৩১ মার্চ আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।
সরকার পক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাড. কোহিনুর বেগম বলেন, মামলাটি দীর্ঘ ৫ বছরের অধিক সময় চলমান অবস্থায় ২২ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করে। স্বাক্ষ্য গ্রহণ ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে আসামির অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় তার উপস্থিতিতে এই রায় দেন। আর অভিযোগপত্রে থাকা বাকী আসামীদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
আসামি পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাড. হাবিবুর রহমান লিটু।
মামলার বাদী মো. হাবিব উল্লাহ জানান, হত্যার শিকার কোহিনুর বেগম আমার বড় ভাইয়ের স্ত্রী। তিনি এখনো সৌদি প্রবাসী। বিচারক যেই রায় দিয়েছে ওই বিষয়ে কোন মন্তব্য করবো না। তবে, আমরা আপিল করবো।

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫।