পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলে
স্টাফ রিপোর্টার
শাহরাস্তির পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের নিজমেহার কালীবাড়ি এলাকার মেহার-ধনাগোদা সংযুক্ত খালটির একটি অংশে রাতের আঁধারে ময়লা-আবর্জনা দিয়ে ভরাট করে দখলের চেষ্টা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে করে খাল ভরাট হয়ে সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে এবং ময়লা-আবর্জনায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।
এর আগেও খালের বিভিন্ন অংশ ভরাট করে স্থায়ীভাবে দখল করে নিয়েছেন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। এখন যেটুকু বাকি আছে, তাও প্রভাবশালীরা বিভিন্নভাবে দখলের চেষ্টা করছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। তাই শত বছরের এই পুরনো খাল রক্ষার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় ও এলাকাবাসী।
জানা গেছে, মেহার-ধনগোদা সংযুক্ত খালটি শাহরাস্তি পৌরসভাধীন ৮নং ওয়ার্ডের পোস্ট অফিস থেকে শুরু হয়ে কালীবাড়ি বাজার, ঋষিবাড়ি ও নিজমেহার পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে ডাকাতিয়া নদীতে মিশেছে। এ খাল দিয়ে এক সময় নৌকা চলাচল করতো এবং এলাকার পানি নিষ্কাশন হতো। কালের বিবর্তনে খাল সংলগ্ন এলাকার প্রভাবশালী লোকজন খালটি দখল করে নিয়েছেন। এর মধ্যে যে অংশটুকু বাকি আছে, তাও দখলের চেষ্টা করা হচ্ছে। গত ৬ মে দিবাগত রাতে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিজানুর রহমানের ভাই মানিকুর রহমান পৌরসভার আবর্জনা ফেলে রাতের আঁধারে খাল ভরাট করে দখলের চেষ্টা করছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
পরে খবর পেয়ে শাহরাস্তি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে খাল ভরাটে বাঁধা দেন। এরপর খবর পেয়ে পরদিন ৭ মে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমজাদ হোসেন খাল ভরাট বন্ধ এবং দখল চেষ্টাকারীকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে অফিসে যাওয়ার নির্দেশনা দেন।
স্থানীয়রা আরো জানান, মানিকুর রহমান খালটির যে অংশ দখলের চেষ্টা করেছেন তা পৌরসভাধীন নিজমেহার মৌজার ১নং খতিয়ানের ৬৬৪৭ নং দাগের ৩৯ এর অন্দরে ২৯ শতাংশ এবং ১/১ নং খতিয়ানের ৬৬৪৭ নং দাগের ৩৯ এর অন্দরে ৫ শতাংশ। যা সম্পূর্ণ সরকারি সম্পত্তি।
তারা অভিযোগ করে বলেন, একদিকে ময়লা-আবর্জনা দুর্গন্ধ, অন্যদিকে খাল ভরাট হওয়ার কারণে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। এতে করে দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় ও এলাকাবাসী। তাই দ্রুত খালটি দখলমুক্ত করে সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে সংবাদকর্মীদের সাথে কথা হয় পৌরসভার স্থানীয় কাউন্সিলর মো. মিজানুর রহমানের সাথে। তিনি বলেন, এটি ব্যক্তিগত সম্পত্তি। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রয়েছে। আমার ভাই ওই সম্পত্তির মালিকদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে তা ভরাটের চেষ্টা করেছেন।
তিনি বলেন, তারা কাগজপত্র নিয়ে এ্যসিল্যান্ড অফিসে দেখা করবে। এ সময় তিনি আরো বলেন, যদি সরকারি সম্পত্তি হয়ে থাকে, তাহলে আমিও ভরাটের বিপক্ষে। কারণ, আমি জনপ্রতিনিধি হয়ে সরকারি সম্পত্তি দখলের পক্ষে থাকতে পারি না।
শাহরাস্তি উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমজাদ হোসেন জানান, সরকারি খাল দখলের খবর শুনে সাথে-সাথে কাজ বন্ধ করা হয়েছে এবং সংশ্লিষ্টদের স্বপক্ষের কাগজপত্র নিয়ে আসার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।
এসময় তিনি বলেন, উপজেলার কোথাও সরকারি ভূমি বা খাল কাউকে দখল করতে দেওয়া হবে না। সরকারি সম্পত্তির বয়স এক বছর হোক কিংবা একশ বছর, বেআইনিভাবে যদি কেউ তা দখল করার চেষ্টা করে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১৫ মে, ২০২২।