আবু মুছা আল শিহাব
শাহরাস্তিতে সরকারি অনুদানে সৃষ্ট রাস্তার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এ ঘটনায় সুবিধাবঞ্চিতরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার (১৮ ফ্রেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলার রায়শ্রী দক্ষিণ ইউনিয়নের আহম্মদ নগর আব্দুস সাত্তারের দোকানের সামনে এই প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. নিমাই চন্দ্র পালের সভাপতিত্বে ও ছাত্রনেতা আব্দুল্লাহ আল মামুনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা পরিষদের সদস্য তুহিন খান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রায়শ্রী দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান হাজি আবু হানিফ, ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি জয়নাল আবেদীন, আওয়ামী লীগ নেতা শফিউল্লাহ, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. ওমর ফারুক ভূঁইয়া ও আদুর রব এবং ৩নং ইউপি সদস্য মো. ফারুক।
জানা যায়, আহম্মদ নগর আব্দুস সাত্তারের দোকান থেকে কাইথরা সপ্রাবি হয়ে আইজি হোসেন সাহেব সড়ক সংযুক্ত রাস্তাটি সরকারি অনুদানে দীর্ঘ বছর পূর্বে সৃষ্টি হয়েছে। ওই রাস্তা সংস্কারের লক্ষ্যে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে এলজিএসপির ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা অনুমোদিত হয়। উক্ত অর্থায়নে ইট দ্বারা রাস্তার সলিং করতে গেলে একই এলাকার মৃত আব্দুল ওহাবের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর আলম গত ১১ ফেব্রুয়ারি চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত ফৌজদারী আইনের ১৪৫ ধারা মোতাবেক ২২৪/২১ নং একটি দরখাস্ত মামলা দায়ের করেন। যাতে ইউপি চেয়ারম্যান হাজী আবু হানিফ, আওয়ামী লীগ নেতা মো. শফিউল্লা, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি জয়নাল আবেদীন, রাস্তা মেরামতে নিয়োজিত শ্রমিক আবদুল হামিদ ও জসিম উদ্দিনকে বিবাদী করা হয়। ১২ ফেব্রুয়ারি শাহরাস্তি থানার এএসআই মো. শাহরিন হোসেন আদালতের নির্দেশক্রমে নালিশী ভূমিতে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে উভয় পক্ষকে নোটিশ জারি করেন। যে কারণে রাস্তার কাজ বন্ধ রয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় জনগণ রাস্তায় নেমে আসেন এবং তারা বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানান।
প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গ্রামকে শহরে পরিণত করো। শহরে পরিণত করতে সর্বপ্রথম যাতায়াতের সুবিধায় রাস্তা নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন। আর আজ ওই রাস্তাতেই যাতায়াত বা সংস্কারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন মো. জাহাঙ্গীর আলম। যেখানে উক্ত রাস্তাটি বহু আগেই সরকারি অনুদানে সৃষ্টি হয়েছে।
ইউপি চেয়ারম্যান আবু হানিফ বলেন, যেখানে রাস্তাটি সরকারি তালিকায় অন্তর্ভূক্ত সেখানে মো. জাহাঙ্গীর আলম কিভাবে সরকারি রাস্তায় এবং সরকারি কাজে বাধা প্রদান করেন তা আমার বোধগম্য নয়। তিনি আরও বলেন, কাজ শুরুর আগে জাহাঙ্গীর চাঁদা চেয়েছিলো। ওই চাঁদা না দেয়ায় তিনি এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। যা জনসাধারণের সাথে প্রহসন করেছেন বলে তিনি মনে করেন।
এলাকাবাসী বলেন, এই রাস্তাটি বহু বছর আগে তৈরী করা হয়েছে। প্রথম আবদুল মমিন চেয়ারম্যান তারপর, ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল্লাহ খান সরকারি অনুদানের মাধ্যমে রাস্তাটি নির্মাণ করেন। নির্মাণের সুদীর্ঘ ৩০ বছর পেরিয়ে য়াওয়ার পথে জাহাঙ্গীর বেশ কয়েকবার কোর্টের মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা জারি করান এবং তা টাকার বিনিময়ে আবার প্রত্যাহার করেন নেন। এবারও রাস্তাটি সংস্কারকালে তিনি বাধা দেন এবং লক্ষাধিক টাকা চাঁদা দাবি করেন। আমরা এলাকাবাসী ওই টাকা দিতে ব্যর্থ হলে জাহাঙ্গীর আলম আদালতে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে সংস্কার কাজ বন্ধ করান।
এমতাবস্থায় তারা অহেতুক হয়রানিকারী ও চাঁদাবাজ জাহাঙ্গীরের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
প্রতিবাদ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল মান্নান, ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম মানিকসহ এলাকার ২ শতাধিক নারী ও পুরুষ।
২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১।