শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

মাহফুজ মল্লিক
মতলব দক্ষিণ উপজেলার উদ্বমদীতে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) তিনি ইনকিউবেশন সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তরর ফলক উন্মোচন করেন।
এ উপলক্ষে আলোচনা সভায় আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, দেশে ইনোভেশন ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার মাধ্যমে বেসরকারি বিনিয়োগের গতি বৃদ্ধি করতে ডিজিটাল উদ্যোক্তা তৈরি করবে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার। শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার মতলববাসীর জন্য প্রধানমন্ত্রীর এক অনন্য উপহার। প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদের ব্রেইন চাইল্ড এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে একদিকে যেমন বেকারত্ব দূর হবে, একই সাথে তথ্যপ্রযুক্তিতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে একরকম উল্লম্ফন সৃষ্টি হবে। আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার থেকে বের হয়ে তরুণ উদ্যোক্তারা আইটি ইন্ডাস্ট্রিতে যেনো ব্যাপক পরিসরে কাজ করতে পারেন সে লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গায় হাই-টেক পার্কও স্থাপন করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, মূলত এসএসসি ও এইচএসসি পর্যায়ে ছাত্রছাত্রীদের তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলার মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে এই প্রকল্প গৃহীত হয়। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করে একাডেমিক এবং আইটি ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে সেতুবন্ধ প্রতিষ্ঠা করা হবে এই প্রকল্পের মাধ্যমে। ফলে আইটি-আইটিইএস খাতে কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হবে।
তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রতিযোগিতা মোকাবেলায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আইওটি, রোবোটিক্স, সাইবার সিকিউরিটিসহ উচ্চপ্রযুক্তি নিয়ে কাজ করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর এবং স্পেশালাইজড ল্যাব স্থাপন করা হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, আর্কিটেক্ট অব ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য সজীব ওয়াজেদ জয়ের দিক নির্দেশনায় ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ গড়তে তথ্য প্রযুক্তির বিকল্প নেই। দেশে ইনোভেশন ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার মাধ্যমে বেসরকারি বিনিয়োগের গতি বৃদ্ধি করতে উদ্যোক্তা তৈরি করতে দেশের ১১টি জেলায় গড়ে তোলা হচ্ছে, শেখ কামাল আইটি এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার। তারই ধারাবাহিকতায় চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্থাপিত হতে যাচ্ছে এই আইটি ট্রেনিং সেন্টার।
শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন আলোচনা সভায় পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম তার বক্তব্যে বলেন, প্রতিযোগিতার এই যুগে আমাদের তরুণদের টিকে থাকতে হলে প্রযুক্তি শিক্ষার বিকল্প নাই। সরকার এজন্যই একটি প্রযুক্তিনির্ভর জাতি গড়ে তুলতে কাজ করে চলেছে। আমাদের রফতানি খাতেও ডিজিটাল ডিভাইস অবদান রাখতে পারে। শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার থেকে ট্রেনিং নিয়ে এখানকার তরুণ-তরুণীরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে, অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চাঁদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য নূরুল আমিন রুহুল বলেন, শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার চাঁদপুরবাসীর জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার। আইটি ইন্ডাস্ট্রিতে চাঁদপুরবাসীর অবদান রাখার ক্ষেত্র প্রস্তুত হলো এই আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তরের মাধ্যমে। চাঁদপুরের যুব সমাজের আত্ম কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে তিনি আশাবাদী বলে জানান।
শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী।
বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) বিকর্ণ কুমার ঘোষের সভাপতিত্বে এবং মতলব দক্ষিণ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রহিম খানের পরিচালনায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ডিজেল প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. রফিকুল ইসলাম, শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) একেএম আবদুল্লাহ খান, চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ইমতিয়াজ হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়, মতলব দক্ষিণ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বিএইচএম কবির আহমেদ, মতলব পৌরসভার মেয়র আওলাদ হোসেন লিটন, মতলব দক্ষিণ ইউএনও ফাহমিদা হক, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সেটু কুমার বড়ুয়া, মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম নুরু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লিয়াকত হোসেন প্রধান, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মুবিন সুজন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফেরদৌসী আক্তার রুনু, মতলব প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. ইকবাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম হায়দার মোল্লাসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।

১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২।