সাগর চৌধুরী
প্রতিদিনই করোনায় আক্রান্ত কিংবা নিহতের সর্বশেষ তথ্য দিচ্ছে সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. তৌফিক রাবিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান দেশের মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সম্ভব সব পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন।
১৫ এপ্রিল মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ড. মুহাম্মদ আবদেল আলী জানান, মোট আক্রান্ত ৫ হাজার ৮ শত ৬২ জন, যাদের মধ্যে ৭১ জন আশংকাজনক। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৯ শ’ ৩১ জন এবং মৃতের সংখ্যা ৭৯ জন। তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় পবিত্র ভূমি মক্কা এবং মদীনায় মৃত্যবরণ করেন ৬ জন।
মৃতের মধ্যে বেশিরভাগই প্রবাসী। বাংলাদেশ দূতাবাস এবং কনস্যুলেটের তথ্য অনুযায়ী মোট মৃতের সিকিভাগ বাংলাদেশী। মৃত বাংলাদেশীদের মাঝে শুধুমাত্র চট্টগ্রামেরই ৬ জন। এছাড়া ঢাকা, মানিকগঞ্জ, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, খুলনা, কুমিল্লা, চাঁদপুর, বরগুনা, নরসিংদী, পাবনা, ভোলা ও নড়াইলের একজন করে। দেশটির মক্কা এবং মদীনায় মৃতের হার বেশি।
সৌদি সরকার করোনার বিস্তার রোধে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। পাশাপাশি নিজ দেশের নাগরিক এবং বিদেশিদের সচেতনের জন্য বিভিন্ন ভাষায় প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশীদের সচেতন করতে সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রচারপত্রে বাংলা ভাষা ব্যবহার করতে দেখা গেছে। এছাড়া সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ’র দেয়া একটি বাংলা বক্তব্য প্রচারের পরিকল্পনা নিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। দেশটিতে ২৪ ঘণ্টা কারফিউ চলছে। ঝুঁকিপূর্ণ মক্কা, মদীনা ও দাম্মামসহ কিছু এলাকায় ঘর থেকে বের হওয়ারও নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে।
বড় বড় শ্রমিক ক্যাম্প থেকে তাদের সরিয়ে স্কুল-কলেজ এবং মাদ্রাসার খালি কক্ষগুলো বাসস্থান হিসাবে ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে সরকার। সৌদির ১৩ প্রদেশের ৩ হাজার ৪ শ’ ৪৫ টি প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেক কক্ষে ২ থেকে ৩ জনের থাকার ব্যবস্থা হবে। এতে সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকবে।
দূতাবাসের একটি সূত্র জানিয়েছে, বিভিন্ন রোগে মারা যাওয়া অর্ধশতাধিক বাংলাদেশীর লাশ বিভিন্ন হাসপাতালের মর্গে পড়ে রয়েছে, অনাপত্তি পত্রের অভাবে। নিয়ম অনুযায়ি স্থানীয়ভাবে দাফন করতে হলে মৃতব্যাক্তির ওয়ারিশদের এই অনাপত্তি পত্র দিতে হয়।
অন্যদিকে, কর্মহীন প্রবাসীদের খাদ্য সংকট লাঘবে দূতাবাস এবং কনস্যুলেটের পক্ষ থেকে সহায়তা দেয়ার বিজ্ঞপ্তি পেয়ে প্রায় ৬ হাজার বাংলাদেশীর আবেদন জমা পড়েছে। আবেদনকারীদের ঘরে ঘরে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রেস উইং সচিব ফখরুল ইসলাম।
১৭ এপ্রিল, ২০২০।