সাগর চৌধুরী
চলমান পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন যাবৎ বিমান চলাচল বন্ধ ও স্থানীয় অফিস-আদালত বন্ধ থাকায় লাশ সংরক্ষণকারী হিমাগার/মর্গে স্থান সংকুলান না হওয়াসহ নানা কারণে মৃত প্রবাসীদের লাশ বাংলাদেশে প্রেরণের সম্ভবনা নেই। সৌদি কর্তৃপক্ষ অনুরোধ জানিয়েছে স্থানীয়ভাবে সৌদি আরবে মৃতদেহ দাফনের অনুমতির জন্য। দেশটির নিয়ম অনুযায়ী হাসপাতালের মর্গে একটি লাশ সর্ব্বোচ্চ ৬০ দিন পর্যন্ত রাখা যায়। এই সময়ের মধ্যে লাশ দাফনের বিষয়ে কোন সুরাহা না হলে দাফনের বিধান রয়েছে। বেওয়ারিশ লাশের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। বাংলাদেশ মিশন সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন কারণে মৃত্যুবরণকারী বাংলাদেশী প্রবাসীর লাশ দীর্ঘদিন হিমাগারে পড়ে আছে।
প্রত্যেক হাসপাতালে হিমাগারের সংখ্যা সীমিত থাকে। বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় প্রবাসীর লাশ নিজ দেশে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই, হিমাগার হয়েছে পরিপূর্ণ। নতুন করে কোন লাশ রাখার জায়গা থাকছে না। বাধ্য হয়েই দাফন করতে হবে পুরাতন লাশ। না হয় নতুন মৃতদেহ রাখার জায়গা হবে না। একটি সূত্র জানিয়েছে, শুধুমাত্র রিয়াদের সিমুশি হাসপাতালের হিমঘরে বাংলাদেশের ৩৫টি লাশ রয়েছে। এমনিভাবে শহরটিসহ দেশটির অন্যান্য শহরের সব বড়-বড় সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে আনুমানিক দুই শতাধিক লাশ পড়ে আছে। স্বাভাবিক মৃত, হৃদরোগে মৃত, সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত এবং হালের করোনায় মৃত লাশের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে।
জুবাইল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতির কারণে নতুন নির্দেশনা মোতাবেক প্রতি এলাকার পুলিশ/ট্রাফিক, হাসপাতাল এবং গভর্নর অফিসের সমন্বয়ে বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে যারা ৩-৭ দিনের মধ্যে পুরোনো যে কোন লাশ দাফন করতে পারবে।
মৃতের পরিবার দাফনের অনুমতি না দিলে দূতাবাস এনওসি (অনাপত্তিপত্র) ইস্যু করে না। আর এনওসি ইস্যু না হলে মৃত্যুসনদসহ অন্যান্য কাগজ-পত্র ইস্যু হয় না। এনওসি ও অন্যান্য কাগজ-পত্র ঢাকায় কল্যাণ বোর্ডে জমা দিতে না পারলে; এককালীন সাহায্য ৩ লাখ টাকা পাওয়া যাবে এমন নিশ্চয়তা পাওয়া যায় না।
একটি সূত্র জানায়, পূর্বাঞ্চলে (দাম্মাম, আহসা, জুবাইল, ক্বাতিফ) ৯টি লাশ আছে। যাদের পরিবার সিদ্ধান্ত না দেয়ায় মৃতদেহসমূহ পড়ে আছে। হয়তো বেওয়ারিশ হিসেবে সেই লাশগুলো দাফন হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে জানতে ফোন করতে হবে রিয়াদস্থ দূতাবাসঃ ০০৯৬৬৫৭০২১২১৮০ (রিয়াদ অঞ্চলে মৃতের বিষয়ে) জেদ্দাস্থ কন্স্যুলেটঃ ০০৯৬৬৫৩৩১৪৭৯১২ (জেদ্দা অঞ্চলে মৃতের বিষয়ে)।
০৭ মে, ২০২০।