খুলছে মসজিদ, অফিস, দোকানপাট, বিপণী বিতান; চলবে বিমান
সাগর চৌধুরী
বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে কারফিউ ও লকডাউন ঘোষণায় সৌদিতে বন্ধ ছিল বেশিরভাগ কার্যক্রম। জনজীবন স্বাভাবিক করতে তিন ধাপে লকডাউন শিথিলের ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সরকার।
আগামি ২১ জুন থেকে জনজীবনে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে এ ঘোষণা দেয়া হয়েছে। গত সোমবার (২৫ মে) রাতে সৌদি স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডক্টর তৌফিক আলরাবিয়া এই ঘোষণা দেন।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পবিত্র নগরী মক্কা ছাড়া অন্যান্য শহরে আগামি ২৮ মে হতে ৩০ মে পর্যন্ত সকাল ৬টা হতে বিকাল ৩টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে। এ সময়ে (সকাল ৬টা-বিকাল ৩টা) ব্যক্তিগত গাড়ি দিয়ে এক শহর থেকে অন্য শহরে যাওয়া যাবে। তবে তার আগে সৌদি সরকারের দেয়া নির্দেশনাগুলো মেনে চলতে হবে। মক্কায় ২৪ ঘণ্টা লকডাউন বলবৎ থাকবে।
অন্যদিকে, আগামি ৩১ মে থেকে ২০ জুন পর্যন্ত মক্কার মসজিদে হারাম ছাড়া অন্য সব মসজিদে জুমার নামাজ ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের অনুমতি দেয়া হয়েছে। তবে, অবশ্যই স্বাস্থবিধি মেনে চলতে হবে। এসময় সকাল ৬টা হতে রাত ৮টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে সরকারি ও বেসরকারি অফিসে খোলা থাকবে এবং শারীরিক উপস্থিতিতে কোন বাঁধা নেই। এসময়ে অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচলের অনুমতিও দেয়া হয়েছে।
আগামি ২১ জুন থেকে সৌদি আরবের সব এলাকার কারফিউ তুলে দেয়া হবে। তবে, ওমরাহ কার্যক্রম কখন চালু হবে তা পরবর্তী নির্দেশনায় জানানো হবে। সেই সাথে হজ পালনের বিষয়েও বিস্তারিত দিক-নির্দেশনা আসবে।
জনজীবন স্বাভাবিক করতে হলে সামাজিক দূরত্বের নির্দেশনাগুলো অবশ্যই মেনে চলতে হবে এবং ৫০ জনের বেশি মানুষের জনসমাবেশ নিষিদ্ধ থাকবে।
সরকারি ও বেসরকারি অফিস পরিচালনা করার অনুমতি দেয়ার পাশাপাশি পাইকারি ও খুচরা দোকান, রেস্টুরেন্টে খোলা থাকবে এবং শপিং মলের পাশাপাশি কয়েকটি অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক ক্রিয়াকলাপ আগের মতোই পরিচালিত হবে।
তবে যেসব অফিস ও কার্যক্রমে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব না সেগুলো পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। যেমন- বিউটি পার্লার, সেলুন, স্পোর্টস, স্বাস্থ্য ক্লাবগুলো, বিনোদন কেন্দ্র এবং সিনেমা হল।
এছাড়া পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল স্থগিত থাকবে। আর নতুন নিয়মগুলো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করবে।
সৌদি আরবে মসজিদ খোলার বিষয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা ও বিধিনিষেধ। (৩১ মে ২০২০ থেকে প্রযোজ্য হবে)
১. আজানের ১৫ মিনিট আগে মসজিদ খোলা এবং নামাজের ১০ মিনিট পরে বন্ধ করা।
২. আজান এবং ইকামাহের মধ্যে ১০ মিনিট অপেক্ষার সময় রাখা।
৩. প্রবেশের সময় থেকে নামাজের শেষ সময় পর্যন্তই জানালা এবং দরজা খোলা রাখা।
৪. মসজিদগুলো থেকে অস্থায়ীভাবে কোরআন এবং বই সরিয়ে নেয়া।
৫. একে অপরের মধ্যে ২ মিটার দূরত্ব বজায় রাখা।
৬. দুই কাতারের মধ্যে এক কাতার ফাঁকা রাখা।
৭. সব ওয়াটার কুলার এবং রেফ্রিজারেটর বন্ধ রাখা।
৮. মসজিদের ভেতরে-বাইরে পানি বা খাবার বিতরণ স্থগিত রাখা।
৯. টয়লেট এবং অজুর স্থান বন্ধ রাখা।
জুমার ক্ষেত্রে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা:
১. জুমার নামাজের ২০ মিনিট আগে মসজিদ খোলা এবং নামাজের ২০ মিনিটের পরে বন্ধ করা।
২. নামাজসহ শুক্রবারের খুতবা ১৫ মিনিটের বেশি না হওয়া।
এই সতর্কতামূলক ব্যবস্থাগুলো মদিনার মসজিদুল নববীর জন্য প্রযোজ্য নয়, হারামাইন কর্তৃপক্ষ পবিত্র মসজিদটির জন্য আলাদা স্বাস্থ্যবিধি প্রকাশ করবে।
২৬ মে, ২০২০।