হাইমচরে রাতভর পাহারা দিয়েও রক্ষা হয়নি চরের মাটি

হাইমচর ব্যুরো
হাইমচরের মধ্যচরে রাতভর পাহারা দিয়েও রক্ষা করতে পারেনি নিজ গ্রামের মাটি। মাটি চুরির কাজে ব্যবহৃত জাহাজ আটক করে প্রশাসনকে জানানোর পরও প্রশাসন নেয়নি কোন ব্যবস্থা। দুপুর ১২টার দিকে জাহাজটি নিয়ে যায় মাটি খেকো চক্রটি। এ যেন সরিষার মধ্যে ভূত। এতে উপজেলাজুড়ে চলছে সমালোচনার ঝড়।
মাটি খেকো চক্রের মূল হোতা চাঁদপুরের মুন্না তালুকদার ও রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের বহু কুকর্মের হোতা ইউপি সদস্য রনি। এদের আটক করার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
ইউপি সদস্য বাচ্চু মিয়া সরকার জানান, গত ২৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় মাটি খেকো চক্রটি শিকদারকান্দিতে মাটি কাটা শুরু করে। আমরা গ্রামবাসী তাদের ধাওয়া দিলে তারা চলে যায়। আমরা রাত ৩টা পর্যন্ত পাহারা দিয়ে সবাই বাড়ি চলে যাই। বাড়িতে যাওয়ার পর থেকে এই চক্রটি পুনরায় মাটি কাটে। সকাল সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গেলে তারা একটি জাহাজ রেখে পালিয়ে যায়। বিষয়টি প্রশাসনকে জানালেও তারা নেয়নি কোন ব্যবস্থা। নীলকমল নৌ-পুলিশ, ঈশানবালা বায়ারচর পুলিশকে জানিয়েও কোন লাভ হয়নি। পরবর্তীতে চক্রটি এসে জাহাজটি নিয়ে যায়। আমরা নদী রক্ষায় বুধবার একটি চর রক্ষা কমিটি গঠন করেছি। আমাদের চরকে আমাদেরই রক্ষা করতে হবে।
সাবেক চেয়ারম্যান রতন হাজি ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, আমি ভাল না হলে কি করে নীলকমলকে রক্ষা করবো। মাটি খেকো চক্র মাটি কাটলো, পুলিশকে খবর দিলাম। তারা আসলো, ভেকু পেলো, স্প্রিড বোট পেল- আটকালো না। অথচ নদীর পাড়ের নীরিহ মানুষগুলো মারধোর করলো। মাটি খেকোরা পালিয়ে গেলো। একটি জাহাজ আটক করলো এলাকাবাসী। ভোর ৬টায় নীলকমল পুলিশসহ প্রশাসনকে জানানো হলো। কেউ আসলো না, পুলিশের অপেক্ষায় ছিলাম সকাল ৯টা পর্যন্ত। রাতভর জেগেছিলাম, তাই একটু বিশ্রাম নিতে বাড়িতে গিয়েছিলাম। লোকজন ছিল জাহাজ পাহারায়, দুপুর ১২টার সময় সেটাও এ চক্রটি নিয়ে গেল। কাকে বিশ্বাস করবো, প্রশাসন যদি আসামি না ধরে, দেখেও না দেখার মত থাকে। তাহলে আর কি করা যায়। তবে আমরা আমাদের সম্পদ রক্ষায় নিজেরাই ভূমিকা নিতে হবে।
নীলকমল নৌপুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ মো. হোসেন সরকার জানান, মাটি কাটার সংবাদ পেয়ে রাতেই অভিযান পরিচালনা করা হয়। আমরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর তারা সবাই পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে তারা আবার মাটি কাটতে আসলে এলাকার লোকজন তাদের ধাওয়া দেয়। লোকজন একটি জাহাজও আটক করে আমাদের সংবাদ দেয়। আমরা ফোর্স পাঠালে তারা যাওয়ার আগেই তারা জাহাজটি নিয়ে পালিয়ে যায়।
নীলকমল ইউপি চেয়ারম্যান সউদ আল নাসের বলেন, চরের মাটি রক্ষায় আমার যা করা লাগবে আমি তাই করবো। মাটি রক্ষায় কোন চক্রকে ছাড় দেয়া হবে না। প্রয়োজনে নীলকমলবাসীকে সাথে নিয়ে আন্দোলন করা হবে। তবুও নীলকমলের মানচিত্র থেকে কোন গ্রামকে বিলুপ্ত হতে দেয়া হবে না।

০১ ডিসেম্বর, ২০২২।