জনগণকে বুঝাতে হবে কোর্ট-আদালত ভালো জায়গা না
……….বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন

সাহেদ হোসেন দিপু
‘বিনা খরচে নিন আইনি সহায়তা, শেখ হাসিনা সরকার দিচ্ছেন এই নিশ্চয়তা’ এ প্রতিপাদ্যে তৃণমূল পর্যায়ে আইনগত সহায়তা কার্যক্রম বিস্তার ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে হাইমচর উপজেলা ও ইউনিয়ন লিগ্যাল এইড কমিটি এবং বিচার প্রার্থী জনসাধারণের অংশগ্রহণে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট, হাইকোর্ট বিভাগ বিচারপতি ও লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ছোট্ট একটা বিষয় নিয়ে আমাদের দেশে যে মামলা মোকাদ্দমা হয়। সেটা তো পারিবারিকভাবে সমাধান করা যায়, প্রতিহত করা যায়। তারা কেন আইন ভুলে ঝগড়া বিবাদ করবে। এজন্য মানুষজনকে সচেতন করতে হবে। অনেক সময় বলা হয় কোর্টের মাটিও কিন্তু টাকা খায়। জনগণকে বুঝাতে হবে কোর্ট আদালত কোন ভালো জায়গা না। এজন্য গ্রাম অঞ্চলের মানুষদের সচেতন করতে হবে যাতে মানুষ ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত না হয়। হাইমচরের মানুষ অত্যন্ত অসহায়। ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩টি ইউনিয়ন নদীর গর্ভে চলে গেছে। বাকি যারা আছেন কে যে কখন চলে যান তারই কোন ঠিক-ঠিকানা নেই। কাজেই আপনারা সচেতন হোন। আসুন না আমরা নিরীহ মানুষজনের জন্য প্রচার করি। এ প্রচারের জন্য প্রশাসন যদি দায়িত্ব নেন তাহলে আমরা অনেকদূর এগোতে পারবো। এখনো গ্রামাঞ্চলের মানুষ বুঝে না লিগ্যাল এইড কি। লিগ্যাল এইডে কি হয়। লিগেল এইডে পৌঁছতে গিয়েও কিন্তু তাদের বিভিন্নভাবে হয়রানী করা হয়। লিগ্যাল এইডে সরকারের টাকা দিয়ে অসহায় জনগণ আইনগত সহযোগিতা পাবে। এটা গ্রামাঞ্চলের লোকজন জানে না। তাই আগে লিগ্যাল এইড সম্পর্কে গ্রামাঞ্চলের মানুষজনকে সচেতন করতে হবে।
তিনি জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে বলেন, আমরা কিন্তু মরণশীল, আমাদের সবাইকে মরে যেতে হবে। কেউ কিন্তু চ্যালেঞ্জ করে বেঁচে থাকতে পারবে না। মানুষ মরণশীল, মানুষের কর্মটাই দুনিয়াতে থেকে যায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের জন্য সেক্রিফাইজ করেছেন। বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবদ্দশায় এদেশের মানুষজনের জন্য কাজ করে গেছেন। তাই আজও দেশে, গ্রামে, শহরে এমনকি আন্তর্জাতিকভাবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ প্রসারিত হচ্ছে। আশা করি আপনারা যারা জনপ্রতিনিধি আছেন আপনারা নিরীহ মানুষজনের বিনামূল্যে, বিনাস্বার্থে সহযোগিতা করবেন।
সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টায় উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটওয়ারীর সভাপতিত্বে এবং সিনিয়র যুগ্ম জেলা জজ সাকিব হোসেন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার চাই থোয়াইহলা চৌধুরীর যৌথ পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা ও দায়রা জজ এসএম জিয়াউর রহমান, জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জান্নাতুল ফেরদৌস, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ শামসুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম ফারহানা ইসলাম, জিপি অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান, জেলা আইনজীবী সমিতি সভাপতি অ্যাড. মো. কামাল উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আব্দুল্লাহ আল মামুন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহনাজ বেগম, আলগী দুর্গাপুর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান পাটওয়ারী প্রমুখ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন বেপারী, হাইমচর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আশরাফ উদ্দিনসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা।

১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২।