হাজীগঞ্জের কৃতী সন্তান খলনায়ক সাদেক বাচ্চু চিরনিদ্রায় শায়িত

মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্
চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন হাজীগঞ্জের কৃতী সন্তান ঢাকাই সিনেমার শক্তিমান খল-অভিনেতা মাহবুব আহমেদ সাদেক। তিনি সাদেক বাচ্চু নামেই পরিচিত ছিলেন। সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বাদ মাগরিব রাজধানীর খিলগাঁওয়ের তালতলা কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এর আগে তালতলা কবরস্থান সংলগ্ন মসজিদে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
এদিন দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মাহবুব আহমেদ সাদেক। তিনি ১৯৫৫ সালের ১ জানুয়ারি হাজীগঞ্জের গন্ধর্ব্যপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের দেশগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলা চলচ্চিত্রে তিনি নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয়ের জন্য বিখ্যাত ছিলেন। জীবনে শেষ বছরগুলোয় অভিনয়ে অনিয়মিত ছিলেন সাদেক বাচ্চু।
জানা গেছে, ৬৬ বছর বয়সী সাদেক বাচ্চু দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। ২০১৩ সালে তার হৃদ্যন্ত্রে অস্ত্রোপচারও করাতে হয়েছিল। গত ৬ সেপ্টেম্বর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে করোনা পরীক্ষায় তার পজেটিভ আসায় পরবর্তীতে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
উল্লেখ্য, মাহবুব আহমেদ সাদেক ওরফে সাদেক বাচ্চু ১৯৬৩ বেতারে ‘খেলাঘর’ নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে তাঁর অভিনয় জীবন শুরু করেন। ১৯৭২-৭৩ সময়ে তিনি ‘গণনাট্য পরিষদ’ নামের একটি থিয়েটারে যুক্ত হন। তিনি উম্মোচন ও প্রথম পদক্ষেপ নামের আরো দু’টি থিয়েটার দলের হয়ে মঞ্চে অভিনয় করেন
১৯৮৫ সালে রামের সুমতি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি বড় পর্দায় অভিষিক্ত হন। তার অভিনীত প্রথম দিকের চলচ্চিত্রে তিনি নায়কের ভূমিকায় অভিনয়ে করেন। সুখের সন্ধানে চলচ্চিত্র দিয়ে খল চরিত্রে অভিনয় শুরু করেন। এরপর থেকে খল চরিত্রে অভিনয়ের জন্য অধিক জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।
পরিচালক এহতেশাম-এর চাঁদনী চলচ্চিত্রে খল চরিত্রে অভিনয়ের জন্য সাদেক বাচ্চু খ্যাতি অর্জন করেন। তার মঞ্চনাম ‘সাদেক বাচ্চু’ এহতেশামের দেয়া। চাঁদনী চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সময় এহতেশাম তাকে এই নাম দেন। এরপর থেকে তিনি তার মঞ্চনামে চলচ্চিত্র জগতে পরিচিতি পান।
মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সাদেক বাচ্চু তাঁর অভিনয় জীবনে প্রায় ৫০০ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। অভিনয় জীবনের সর্বোচ্চ অর্জন হিসেবে ২০১৮ সালে একটি সিনেমার গল্প চলচ্চিত্রে খলচরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০।